ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

করোনা: প্রতারণার অভিযোগ অস্বীকার সাহাবউদ্দিন মেডিক্যালের

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪৮ ঘণ্টা, জুলাই ২০, ২০২০
করোনা: প্রতারণার অভিযোগ অস্বীকার সাহাবউদ্দিন মেডিক্যালের অধ্যাপক ডা. মো. জাফর উল্ল্যাহ

ঢাকা: করোনা ইস্যুতে প্রতারণার অভিযোগ অস্বীকার করেছে সাহাবউদ্দিন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। হাসপাতাল ফার্মেসির লাইসেন্স মেয়াদোত্তীর্ণ থাকার কথা স্বীকার করলেও র‌্যাবের অভিযানে উঠে আসা অন্য সব অভিযোগ অস্বীকার করেছে হাসপাতালটি।

  

সোমবার (১৯ জুলাই) হাসপাতাল প্রাঙ্গণে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন হাসপাতালের পরিচালক (কলেজের অধ্যক্ষ) অধ্যাপক ডা. মো. জাফর উল্ল্যাহ।

সব অভিযোগ অসত্য হলে হাসপাতালে র‍্যাবের অভিযান ষড়যন্ত্রমূলক কিনা জানতে চাইলে জাফর উল্ল্যাহ বলেন, আমি ষড়যন্ত্র বলবো না। এটি মিসইনফরমেশন (ভুল তথ্য) হতে পারে। আমি বলবো মিসইনফরমেশনের কারণে এই অভিযান হতে পারে।

ফার্মেসিতে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ রাখার অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, সাহাবউদ্দিন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ফার্মেসিতে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ থাকার প্রশ্নই ওঠে না। আমরা অত্যন্ত যত্নের সঙ্গে রোগীদের জন্য ওষুধ ব্যবহার করি। তবে হাসপাতাল ফার্মেসির একটি ত্রুটি ছিল, সেটি হলো- এর লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছিল, তা রিনিউ (নবায়ন) করা হয়নি। মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধের বিষয়টি আমার নলেজেই নেই, ধারণায় নেই। এটা কীভাবে এলো আমরা জানি না।

হাসপাতালে একই মাস্ক ও হ্যান্ড গ্লাভস বারবার ব্যবহারের অভিযোগ প্রসঙ্গে এ অধ্যাপক বলেন, সুস্পষ্টভাবে আপনাদের অবগতির জন্য জানাতে চাই যে, আমাদের হাসপাতালে কখনোই সার্জিক্যাল হ্যান্ড গ্লাভস দ্বিতীয় বার ব্যবহার করা হয় না। হাসপাতালের অপারেশন থিটোরে পূর্ব-প্রস্তুতিমূলক ব্যবস্থা হিসেবে কিছু সার্জিক্যাল হ্যান্ড-গ্লাভস পাউডার মিশ্রিত করে রাখা হয়। যাতে যে কোনো অপারেশনেই দ্রুত সেগুলো ব্যবহার করা যায়।

হাসপাতালের লাইসেন্স মেয়াদোত্তীর্ণ থাকার অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, হাসপাতালের লাইসেন্সের মেয়াদ ২০১৯ সালের ৩০ জুন শেষ হলেও তা নবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও ফি স্বাস্থ্য অধিদফতরে জমা দেওয়া হয়েছে। নবায়নের বিষয়টি চলমান।  

স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে করোনা পরীক্ষার অনুমোদন না থাকা সত্ত্বেও হাসপাতালের ল্যাব থেকে ভুয়া রিপোর্ট ইস্যুর ও র‌্যাপিড টেস্ট কিট উদ্ধারের বিষয়ে জাফর উল্ল্যাহ জানান, হাসপাতালের ল্যাবরেটরিতে কোনো অনিয়ম হয়নি বলে আমি নিশ্চিত। আমাদের প্রতিটি রিপোর্টে ল্যাব নম্বর দেয়া থাকে। যেসব রিপোর্ট নিয়ে অভিযোগ উঠেছে সেগুলোতে কোনো ল্যাব নম্বর ছিল না। আমাদের ল্যাব থেকে পরীক্ষা করা হলে ল্যাব নম্বর থাকতো। এর মানে আমরা রিপোর্ট দেইনি। যদি কেউ গণস্বাস্থ্যের র‍্যাপিড কিট দিয়ে ব্যক্তিগতভাবে টেস্ট করে রিপোর্ট দিয়ে থাকে তাহলে সে দায় তার। হাসপাতালের নয়।

এ প্রসঙ্গে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জাফর উল্ল্যাহ আরো বলেন, করোনা টেস্ট (RT-PCR) করার জন্য আমরা প্রাভা হেলথ কেয়ার বাংলাদেশ ও ইন্টারন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের সঙ্গে চুক্তি করে সেখানকার রোগীদের স্যাম্পল পরীক্ষা করেছি।  

সাহাবউদ্দিন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্তের অনুরোধ জানিয়ে জাফর উল্ল্যাহ বলেন, এই হাসপাতাল আমাদের মেডিক্যাল কলেজের অঙ্গ-প্রতিষ্ঠান, এখানে অনলাইনে ও অন্যান্য উপায়ে শিক্ষা কার্যক্রম চলছে। কিছুদিন পরই ছাত্রছাত্রীদের পরীক্ষামুলক কার্যক্রম শুরু হবে। এখানে দেশি-বিদেশি শিক্ষানবীশ ডাক্তারদের প্রশিক্ষণও যথারীতি চালু আছে। এ অবস্থায় এই প্রতিষ্ঠান নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে চালু না থাকলে শতশত মেডিক্যাল শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন ও রোগীদের চিকিৎসা এবং কর্মচারীদের জীবিকা অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়বে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আইনের প্রতি সম্পূর্ণ শ্রদ্ধাশীল। আমাদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ সুষ্ঠুভাবে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য আমরা গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের কাছে অনুরোধ জানাচ্ছি।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৪ ঘণ্টা, জুলাই ২০, ২০২০
এসজেএ/এইচজে 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।