ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

শেবাচিম হাসপাতালে ইন্টার্নদের ধর্মঘটে রোগীদের ভোগান্তি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪১৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ১, ২০২০
শেবাচিম হাসপাতালে ইন্টার্নদের ধর্মঘটে রোগীদের ভোগান্তি রোগীরা ভোগান্তিতে/ ছবি: বাংলানিউজ

বরিশাল: বরিশাল শের ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে ৩ দফা দাবিতে ইন্টার্ন ডক্টর্স অ্যাসোসিয়েশনের ডাকা অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতির আজ দ্বিতীয় দিন। রোববার (০১ নভেম্বর) সকালে হাসপাতালে গিয়ে কোনো ইন্টার্ন চিকিৎসককে কাজে দেখা যায়নি।

ফলে, ভোগান্তিতে পড়েছেন বহু রোগী।

রোগী ও রোগীর স্বজনরা জানান, শনিবার (৩১ অক্টোবর) দুপুরের পর থেকে কোনো ডাক্তারই তাদের খোঁজ খবর নেয়নি। এমনকি কোনো চিকিৎসকের দেখাও তারা পাননি। এ অবস্থায় দুর্ভোগে পড়েছেন তারা। বিশেষ করে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা সাধারণত ২৪ ঘণ্টাই রোগীর পাশে থাকতো। কিন্তু কর্মবিরতির কারণে এখন আর তারা কেউ সেখানে নেই।

এদিকে হাসপাতাল প্রশাসন বলছে, চিকিৎসক সংকটের মধ্যেও তারা রোগীদের সেবা নিশ্চিত করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। যদিও শেবাচিম হাসপাতালে বর্তমানে ২২৪টি পদের স্থলে মাত্র ৯১ জন চিকিৎসক রয়েছেন। কিন্তু এটি ৫শ শয্যার হাসপাতালের রোগীদের জন্য বরাদ্দ পদ ছিল। বর্তমানে হাজার শয্যার এ হাসপাতালে দেড়হাজারের মতো রোগী থাকলেও সেখানে পদের কোনো উন্নয়ন ঘটেনি। তারপরও শূন্যপদ পূরণে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।

ইন্টার্নদের দাবিগুলো হলো- ডা. মাসুদ খানের করা মামলা প্রত্যাহার ও বিভিন্ন মাধ্যমে হয়রানি অনতিবিলম্বে বন্ধ করা, ডা. মাসুদ খান এর বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের সুষ্ঠু বিচার করা এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও গণমাধ্যমে প্রচার করা অসত্যের জন্য মানহানির বিচার করা।

২১ অক্টোবর শেবাচিম হাসপাতালের মেডিসিন ইউনিট-৪ এর রেজিস্ট্রার ডা. মো. মাসুদ খান, শিক্ষানবিশ চিকিৎসকদের সভাপতি সজল পান্ডে এবং সাধারণ সম্পাদক ডা. তরিকুল ইসলামের নাম উল্লেখ করে আরও ৮/১০ জনের বিরুদ্ধে তার ওপর হামলা ও মারধরের অভিযোগ এনে পরিচালক বরাবর অভিযোগ দায়ের করেন।  

এরপর দিন ২২ অক্টোবর ইন্টার্ন চিকিৎসকরা মেডিক্যালের সামনে ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে কমিশন নেওয়ার অভিযোগে পাল্টা অভিযোগ দায়ের করেন ডা. মাসুদ খানের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় হাসপাতালের পরিচালক একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করেন।  

এর কয়েকদিন পর ডা. মাসুদ খান কোতোয়ালি থানায় ওই ইন্টার্ন চিকিৎসকদের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন। মামলার খবর পেয়ে ২৯ অক্টোবর দিবাগত রাত ১১টা ৫৫ মিনিটে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা হাসপাতালের জরুরি বিভাগে তালা দিয়ে বিক্ষোভ করে এবং কর্মবিরতির ডাক দেয়। কিন্তু মেডিক্যাল কলেজ অধ্যক্ষ, হাসপাতাল পরিচালক ও উপ-পরিচালকের হস্তক্ষেপে আড়াই ঘণ্টার আলোচনা শেষে রাত আড়াইটায় কর্মবিরতি থেকে সরে আসে ইন্টার্নরা। সেসময় ইন্টার্নরা কিছু আল্টিমেটামও বেধে দেয় কর্তৃপক্ষকে। এরই ধারাবাহিকতায় আজ ইন্টার্ন চিকিৎসকরা ঘোষণা দিয়ে কর্মবিরতি শুরু করে।  

এ ব্যাপারে হাসপাতালের পরিচালক ডা. বাকির হোসেন জানান, দুই পক্ষকে নিয়ে আজ আলোচনায় বসা হয়েছিল। কিন্তু কোনো পক্ষ নিজ নিজ অবস্থান থেকে ছাড় দিতে রাজি না হওয়ায় সমঝোতা হয়নি। তবে সমস্যা সমাধানে চেষ্টা চালানো হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪১৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ০১, ২০২০
এমএস/এইচএডি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।