ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

সিলেটে টিকা নিতে উপেক্ষিত স্বাস্থ্যবিধি!

নাসির উদ্দিন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৩১ ঘণ্টা, আগস্ট ৬, ২০২১
সিলেটে টিকা নিতে উপেক্ষিত স্বাস্থ্যবিধি! ছবি: মাহমুদ হোসেন

সিলেট: মহামারি করোনায় সিলেট কার্যত মৃত্যুপুরী। প্রতিদিন রেকর্ড গড়ছে আক্রান্ত ও মৃত্যু।

সড়কে বেরোলেই অ্যাম্বুলের সাইরেনের শব্দ। রোগী নিয়ে স্বজনদের ছুটে চলা এক হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতালে। কেবল অ্যাম্বুলেন্স নয়, সাধারণ যানবাহনেও রোগী নিয়ে হাসপাতাল ছুটছেন স্বজনরা। আর কোথাও কোথাও মসজিদের মাইকে জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে মৃত্যুর খবর। স্যোসাল মিডিয়াতেও ভাসছে অনেকের মৃত্যুর সংবাদ।  

এতোদিন স্বাস্থ্যবিধি মেনে না চলা মানুষের মনেও ভয় ধরিয়েছে করোনার বর্তমান পরিস্থিতি। এতোদিন করোনার টিকা নিতে অনীহা ছিল সাধারণ মানুষের। নগরীতে টিকা নেওয়ার হার বেশি থাকলেও সে তুলনায় গ্রামাঞ্চলে ছিল খুবই কম।  

এ অবস্থায় আগে করোনার টিকা নিতে সাধারণ মানুষের অনীহা থাকলেও সময়ের বিবর্তনে এখন তারাও আগ্রহী হয়ে ওঠেছেন। টিকা নিতে রেজিস্ট্রেশন করে ভিড় করছেন কেন্দ্রে। এ ক্ষেত্রে টিকা কেন্দ্রগুলোতে মানুষের অত্যাধিক ভিড়ে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষিত থাকছে।

টিকা কেন্দ্রে দায়িত্বরত আনসার সদস্যরাও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খাচ্ছেন। মাইকে সচেতনতার কথা জানিয়ে দিলেও তা যেনো কেউ মানতে নারাজ। দু’টি লাইনে দাঁড়িয়ে নারী ও পুরুষরা অপেক্ষারত থাকলেও অনেকে জোর পূর্বক নিয়মের বাইরে গিয়ে টিকা নেওয়া নিয়ে বাকবিতণ্ডায় জড়াচ্ছেন লোকজন।    

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সিলেট নগরে দু'টি টিকা কেন্দ্র রয়েছে। এর একটি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল আউডডোর ভবন (নতুন ভবন) এবং অন্যটি সিলেট জেলা পুলিশ লাইনস হাসপাতাল। এ দু’টি কেন্দ্রে মর্ডানার প্রথম ডোজ এবং চীনের তৈরি সিনোফার্মের ভেরোসেল দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া ১৩টি উপজেলায় সিনোফার্মের ভেরোসেল প্রথম দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

সরেজমিন দেখা গেছে সিলেটের ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের নতুন ভবনের পঞ্চম তলায় ১০টি বুথে মানুষকে টিকা দেওয়া হচ্ছে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত। শুধুমাত্র ৭ নম্বর বুথে সিনোফার্মের এবং অপর ৬টিতে মর্ডানার টিকা দেওয়া হচ্ছে। সিলেট সিটি করপোরেশনের তত্ত্বাবধানে টিকা দিতে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন হিসেবে রেড ক্রিসেন্টের কর্মীরা।

সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. জাহিদুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, করোনা সংক্রমের ১১ মাস পর গত ৭ ফেব্রুয়ারিতে গণটিকা শুরুর পর সিসিক এলাকায় টিকা কার্যক্রম শুরু হয়। সিলেট সিটি করপোরেশনে ৫ লাখ ৯১ হাজার জনসংখ্যার বিপরীতে এ পর্জন্ত ৯৪ হাজার ১৭১ জনকে টিকা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে অ্যাস্ট্রোজেনেকার দেওয়া হয় ৬১ হাজার ৫৪৭ জনকে। এছাড়া সিনোফার্মের ভেরোসেল প্রথম ডোজ ৪ হাজার ৬৬৫ জনকে এবং দ্বিতীয় ডোজ ১ হাজার ৭৪০ জনকে দেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি শুরু হওয়া মর্ডানার টিকা নিয়েছেন ২৭ হাজার ৯৫৯ জন।

তিনি বলেন, আগে যেখানে ৩/৪ শত লোক টিকা নিতেন। সেখানে এখন দৈনিক ১৫শ জনকে মোবাইলে এসএমএস দিতে হচ্ছে। ইতোমধ্যে ৭৯ হাজার ২০০ ডোজ মর্ডানার টিকা সিলেটে এসেছে।

সিসিক সূত্র জানায়, এ অবস্থায় আগামী শনিবার (০৭ আগস্ট) থেকে সিলেটে শুরু হচ্ছে গণটিকা কার্যক্রম। প্রায় ৩ লাখ ২৮ হাজার ৮৮২ লক্ষ্যমাত্রার টিকা দেওয়ার জন্য ইতোমধ্যে সিলেট সিটি করপোরেশন ২৭টি ওয়ার্ডে ৩টি করে মোট ৮১টি টিকা কেন্দ্রের তালিকা চূড়ান্ত করেছে।

এরইমধ্যে নগরীতে একাধিক মাইক দিয়ে প্রচার প্রচারণা চালানো হচ্ছে টিকাকেন্দ্রে জাতীয় পরিচয় পত্রের ২টি ফটোকপি নিয়ে প্রত্যেক নাগরিককে নিজ নিজ কেন্দ্রে উপস্থিত হয়ে টিকা নিতে আহ্বান জানানো হয়।

সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রতিটি কেন্দ্রে সিনিয়র সিটিজেন, অসুস্থ নারী ও প্রতিবন্ধীদের আগাম রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে গণটিকা শুরুর প্রথম দিনেই ৩০০ জনকে টিকা দেওয়া হবে।   

বাংলাদেশ সময়: ১১৩০ ঘণ্টা, আগস্ট ০৬, ২০২১
এনইউ/কেএআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।