ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

রোগীকে প্রাইভেট হাসপাতালে নিতে বলায় চিকিৎসকের বিরুদ্ধে অভিযোগ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১২৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১১, ২০২১
রোগীকে প্রাইভেট হাসপাতালে নিতে বলায় চিকিৎসকের বিরুদ্ধে অভিযোগ

বরিশাল: বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে ভর্তি থাকা ৯ বছরের এক শিশুকে নির্দিষ্ট প্রাইভেট ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করানোসহ সেখানে ভর্তি করানোর পরামর্শ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে চিকিৎসকের বিরুদ্ধে।

এ ঘটনায় ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে হাসপাতাল পরিচালক বরাবর একটি লিখিত অভিযোগও দিয়েছেন শিশু রোগীর বাবা মো. রাসেল হোসেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযোগটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছে হাসপাতালের পরিচালক ডা. এইচ এম সাইফুল ইসলাম।

তিনি সাংবাদিকদের জানান, অভিযোগ পাওয়ার পরে সার্জারি বিভাগের প্রধান ডা. নাজমুল হককে প্রধান করে একটি তদন্ত বোর্ড গঠন করা হয়েছে। তবে, তদন্ত প্রধান করোনা আক্রান্ত হওয়ায় প্রতিবেদন পেতে দেরি হচ্ছে। প্রতিবেদনে অভিযুক্ত চিকিৎসক দায়ী হলে তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

অভিযোগ ও রোগীর স্বজনদের সূত্রে জানা গেছে, গত ১৬ আগস্ট রাসেল হোসেনের ৯ বছরের অসুস্থ মেয়ে শুকরিয়াকে চিকিৎসার জন্য শেবাচিম হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি করানো হয়।  পরে সেখান থেকে তাকে শিশু সার্জারি ওয়ার্ডে স্থানান্তর করা হয়। সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক এ.কে.এম মিজানুর রহমান ১৬ আগস্টের ও এর ১৫ দিন আগের করা শারীরিক পরীক্ষার প্রতিবেদন দেখে তা চলবে না বলে জানান অভিভাবকদের।

পরবর্তীতে তিনি হাসপাতালের সামনের আবিদ ইসলামিয়া ডায়গনস্টিক ল্যাবে ডা. নজরুল ইসলামের কাছ থেকে আল্ট্রাসনোগ্রাম করিয়ে আনতে বলেন। সেই অনুযায়ী পরীক্ষা-নিরীক্ষা করিয়ে রিপোর্টগুলো চিকিৎসক এ.কে.এম মিজানুর রহমানের কাছে নিয়ে যান। রিপোর্ট দেখে শিশু শুকরিয়ার পেটের নাড়িতে প্যাঁচ লেগেছে বলে জানান চিকিৎসক। সেইসঙ্গে জরুরি ভিত্তিতে অপারেশন করার তাগিত দেন এবং শেবাচিম হাসপাতালে হবে না বলেও জানান।

শুকরিয়ার বাবা রাসেল ডা. মিজানুর রহমানের বরাত দিয়ে বলেন, শুকরিয়ার পেটের নাড়ির প্যাঁচের অপারেশন শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে হবে না। এখানে অপারেশন করার পর রোগী বাঁচবে কি না তার নিশ্চতয়তা নেই।

এজন্য হেমায়েত উদ্দিন ডায়াবেটিক হাসপাতালে অপারেশন করাতে বলেন। এতে খরচ হবে ৩০ হাজার। এছাড়া থাকা-খাওয়ার খরচ আলাদা। পরে ডাক্তারের কথামতো বাধ্য হয়ে হেমায়েত উদ্দিন ডায়াবেটিক হাসপাতালে মেয়ের অপারেশন করান বলে জানান তিনি।
শুকরিয়ার বাবা বলেন, সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকের এমন আচরণে আমি হতবাক। কম খরচে ভালো সেবা পাওয়ার আশায় সরকারি হাসপাতালে গিয়েছিলাম। সেখানে চিকিৎসক আশ্বস্ত করার পরিবর্তে সন্তান (রোগী) মারা যাওয়ার ভয় দেখান।

শুকরিয়ার বাবা লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেছেন, আমরা গরিব মানুষ। আর্থিক অনটনের কারণেই কম খরচে ভালো সেবা পাওয়ার আশায় সরকারি হাসপাতালে গিয়েছিলাম। সরকারি হাসপাতালের একজন চিকিৎসকের এমন আচরণে আমি হতবাক। সেখানে চিকিৎসক আমাকে আশ্বস্ত করার পরিবর্তে আমার সন্তান (রোগী) মারা যাওয়ার ভয় দেখানো ও বেসরকারি হাসপাতালের নাম উল্লেখ করে পরীক্ষা-নীরিক্ষার জন্য পাঠানো কতটা যৌক্তিক? আমার প্রশ্ন এ হাসপাতালে কি এমন রোগীর অপারেশন সম্ভব নয়? যদি সম্ভব হয়ে থাকে তাহলে আমাদের কেন প্রাইভেট হাসপাতালে পাঠানো হলো।

চিকিৎসক একেএম মিজানুর রহমান জানান, আবিদ ইসলামিয়া ডায়গনস্টিক ল্যাবের রিপোর্ট ভালো, তাই সেখানে পরীক্ষা করাতে বলেছিলাম। আমি নিজেও সেখানে পরীক্ষা করাই। এমারজেন্সি রোগীর অপারেশন দরকার হলে অনেক সময় শিডিউল না থাকায় শেবাচিম হাসপাতালে অপারেশন করা সম্ভব হয় না।

এতে আলাদা কোনো লাভ নেই বলেও দাবি করেন তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ০১১৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১১, ২০২১
এমএস/ওএইচ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।