ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভারত

কলকাতায় পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২০৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২১, ২০২৩
কলকাতায় পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস

কলকাতা: বাংলাদেশের মহান ভাষা শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস যথাযথ মর্যাদায় পালন করছে কলকাতা ও কলকাতাস্থত বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশন।

শহরে ২১ ফেব্রুয়ারির উল্লেখযোগ্য অনুষ্ঠানের মধ্যে এদিন সকালে কলকাতায় অবস্থিত বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশন প্রাঙ্গণে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে অর্ধনমিতের মধ্য দিয়ে দিনের কার্যক্রম শুরু হয়।

এরপর ডেপুটি হাইকমিশনের পক্ষ থেকে এক প্রভাত ফেরির আয়োজন করেছিল। যা শুরু হয়েছিল বাংলাদেশ গ্রন্থাগার অর্থাৎ কলকাতার পার্কসার্কাস ময়দান থেকে এবং শেষ হয় কলকাতার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সরণিরতে অবস্থিত উপ-হাইকমিশন প্রাঙ্গণে।

প্রভাত ফেরিতে পা মেলান উপ-হাইকমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ বিশিষ্টজনরা। পা মেলান কলকাতার বাংলা ভাষাপ্রেমী মানুষসহ লেখক, বুদ্ধিজীবী ও শিক্ষার্থীরা। অনেককেই শহরের ব্যস্ত রাজপথে খালি পায়েও হাঁটতে দেখা যায়। প্রভাত ফেরি শেষে মিশন প্রাঙ্গণে শহীদ বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন কর্মকর্তা-কর্মচারী, বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠান কলকাতা শাখা বাংলাদেশ বিমান, সোনালী ব্যাংক, কলকাতা প্রেসক্লাব, ইন্দো বাংলা প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন শাখা সংগঠন প্রতিষ্ঠান ও বিশিষ্টজনরা।

এ উপলক্ষে কলকাতায় নিযুক্ত বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশনার আন্দালিব ইলিয়াস বলেন, কলকাতায় বড়ভাবে ভাষা দিবস পালন হয়। কর্মসূত্রে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে এ দিনটিতে উপস্থিত থেকেছি। কিন্তু কলকাতায় আমার কাছে একেবারে আলাদা অনুভূতি। যখন প্রভাত ফেরি শুরু করি তখন দেখি কলকাতার সাধারণ মানুষ পথে পথে আমাদের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে। এটা একটা অসামান্য অনুভূতি। আসলে ভাষার প্রতি ভালোবাসা না থাকলে কোনো জাতি এগোতে পারে না। এবারে ভাষা উৎসবে উপ-হাইকমিশনের মূল ভাবনা ৫২ প্রেরণায় ৭১ এ পথ চলা। ৫২ সালে আমরা যে প্রতিষ্ঠা করেছিলাম, পৃথিবীকে দেখিয়েছিলাম, আমাদের একটি স্বতন্ত্র ভাষা রয়েছে, আমাদের একটি স্বতন্ত্র সংস্কৃতি রয়েছে এবং ভাষা ও সংস্কৃতির ওপর ভিত্তি করে বাঙালি জাতীয়তাবোধ রয়েছে। সেটির ওপর ভিত্তি করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এগিয়ে নিয়েছিলেন আন্দোলনকে। যে আন্দোলন পরে চূড়ান্ত রূপ নিয়েছিল ১৯৭১ সালের স্বাধীনতার মধ্য দিয়ে, তারই অবিসংবাদিত নেতৃত্বে। সেই তথ্যটি আমরা কলকাতায় ছড়িয়ে দিতে চাই। যে কারণে এবারে ভাষা উৎসবে এ ভাবনা বেছে নেওয়া হয়েছে।

কলকাতা নিযুক্ত ইউনিসেফের কর্মকর্তা প্রভাত কুমার বলেন, এ শহরের প্রত্যেক বাংলা ভাষাভাষী নাগরিককে জানাই মাতৃভাষা দিবসের শুভেচ্ছা। জাতির কাছে ভাষা একটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সেই ভাষার মধ্য দিয়ে সেই জাতির শিল্প, সংস্কৃতি, ইতিহাস ঐতিহ্য তুলে ধরে বিশ্বের কাছে। যা জাতিকে উন্নতির দিকে নিয়ে যায়। ভাষা ছাড়া সংস্কৃতি সংরক্ষণ করা যায় না। দিনটি বাঙালিদের জন্য শুধুমাত্র মাতৃভাষা দিবস নয় এ ভাষার জন্য যে আত্মত্যাগ তার প্রতীক আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি। ফলে আমি বাংলা ভাষা না জানলেও এ ভাষার ত্যাগ, ঐতিহ্য ও ভাষার মূল্যবোধ সম্বন্ধে আমি ওয়াকিবহুল।

এছাড়া ভাষা উৎসব উপলক্ষে মিশন প্রাঙ্গণে বিকেলে আলোচনা সভা ও বিভিন্ন ভাষাভাষী শিল্পিদের নিয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।

এ অনুষ্ঠান ছাড়া পশ্চিমবঙ্গ সরকার ও কলকাতা করপোরেশন, রবীন্দ্রভারতী, বিশ্বভারতী, ভাষা ও চেতনাসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সংগঠন, ক্লাব আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করছে। দিনটিতে পশ্চিমবঙ্গে সরকারি ছুটি না থাকলেও শ্রদ্ধা এবং উৎসবে মিশেলে এক অঘোষিত ছুটি পালন করছেন কলকাতাবাসী।

বাংলাদেশ সময়: ১২০৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২১, ২০২৩
ভিএস/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।