আগরতলা (ত্রিপুরা): উত্তরপূর্ব ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় যেসব মনীষীদের ভাস্কর্য ও মূর্তি রয়েছে এগুলোর বেশির ভাগই তৈরি করেছেন ভিন রাজ্যের শিল্পীরা। অন্যান্য রাজ্য থেকে এগুলোকে এনে বসানো হয়েছে।
তিনি জানান, ভারত সরকারের রেলওয়ে মন্ত্রক সৌন্দর্যায়নের প্রকল্পের অর্থ বরাদ্দ করেছে। ভারত সরকারের সংস্কৃতি মন্ত্রক এ প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্বে রয়েছে। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় এ শিল্পকর্মগুলো তৈরি করার দায়িত্ব দিয়েছে ললিতকলা একাডেমি ও নর্থইস্ট জোন কালচারাল সেন্টারকে। আগরতলায় কাজ শুরু হয়েছে ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৩ থেকে। রাজ্যের ৫৫ জন শিল্পী ৫৫টির বেশি শিল্পকর্ম তৈরি করছেন।
এর মধ্যে রয়েছে- নটরাজ, মনিপুরী, কুচিপুরি নৃত্যশিল্পী, যোগা অনুশীলনরত মূর্তি, খেলোয়াড়, নারী বৈমানিকসহ আরও কত কিছু। আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি মধ্যে সব মূর্তি তৈরির কাজ শেষ হবে। এরপর ট্রেনে করে এ মূর্তিগুলোকে বেনারসে পাঠানো হবে।
সম্প্রীতি ভারত সরকারের সংস্কৃতি মন্ত্রকের মন্ত্রী মীনাক্ষী লেখি ললিতকলা একাডেমিতে এসে নির্মীয়মাণ এ শিল্পকর্মগুলো দেখে গেছেন। রাজ্যের শিল্পীদের কাজ দেখে প্রশংসা করেছেন তিনি। ত্রিপুরার ইতিহাসে প্রথমবারের মতো এমন কাজ হচ্ছে, যার ফলে শিল্পীরাও ব্যাপক উৎসাহের সঙ্গে কাজ করছেন বলে জানান সুমন মজুমদার।
আগরতলার ললিতকলা একাডেমি প্রাঙ্গণে গিয়ে দেখা যায়, শিল্পীরা এসব বিশাল আকারের মূর্তি তৈরিতে ব্যস্ত রয়েছেন। কেউ মাটি দিয়ে মূর্তির প্রাথমিক কাঠামো তৈরি করছেন, আবার কেউ মাটির তৈরির মূর্তিগুলোর ওপর ছাঁচ তৈরি করে তার মধ্যে ফাইবার গলিয়ে আসল মূর্তি তৈরি করছেন। ইতোমধ্যে বেশ কিছু মূর্তি তৈরি হয়ে গেছে। কোনো কোনো শিল্পী এসব তৈরি হওয়া মূর্তির ফিনিশিং দিচ্ছেন। আবার কোনো কোনো শিল্পী এ মূর্তিগুলোতে রং করার কাজে ব্যস্ত।
এ কাজের বিষয়ে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে দীপিকা দাস নামে এক শিল্পী বলেন, সত্যিই এটা গর্বের বিষয় যে দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় পর্যটন কেন্দ্র বেনারসের মতো জায়গায় তাদের হাতে তৈরি মূর্তিগুলো বসবে এবং দেশ-বিদেশের মানুষ সৌন্দর্য উপভোগ করবেন।
তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দেশবাসী বিশেষ করে ত্রিপুরা রাজ্যবাসীর জন্য সত্যিই যে আন্তরিক তার এক দৃষ্টান্ত হচ্ছে এ কাজ।
আগে যেখানে বহিঃরাজ্যের শিল্পীদের এখানে নিয়ে এসে অথবা বহিঃরাজ্য থেকে মূর্তি তৈরি করে এখানে নিয়ে আসা হতো। এখন তার বিপরীতে রাজ্যের শিল্পীদের হাতে তৈরি মূর্তি দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় বসানো হবে শোভাবর্ধনের জন্য। আক্ষরিক অর্থে রাজ্য ও দেশের ইতিহাসে নতুন মাইল ফলক। আগামী দিনেও রাজ্যের শিল্পীরা দেশের অন্যান্য জায়গায় গুরুত্বপূর্ণ শিল্পকর্মে অংশ নেবেন তা নিঃসন্দেহে বলা যায়।
বাংলাদেশ সময়: ১৭১২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৩, ২০২৪
এসসিএন/আরবি