ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভারত

বাংলাদেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক ধরে রাখতে চান পশ্চিমবঙ্গের বামেরা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩৮ ঘণ্টা, আগস্ট ১১, ২০২৪
বাংলাদেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক ধরে রাখতে চান পশ্চিমবঙ্গের বামেরা

কলকাতা: অস্থির সময় কাটিয়ে শান্ত হয়ে উঠছে বাংলাদেশ। গঠন করা হয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।

দেশবাসীর এখন একটাই প্রার্থনা, সবকিছুতেই ফিরুক স্বাধীনতা। অপরদিকে, পশ্চিমবঙ্গবাসীও বলছেন, সাম্যের পথে থাক প্রিয় বাংলাদেশ। আর তাই অন্তর্বর্তী সরকারকে সাধুবাদ জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের বামমনস্ক যুবসমাজ থেকে বিশিষ্টরা। তাদের অভিমত, সবকিছু ভুলে ফের একবার বিশ্বের সামনের সারিতে দাঁড়াক বাংলাদেশ।

কলকাতায় অবস্থানরত বাংলাদেশিরা বলছেন, বর্তমান সরকার দেশবাসীর ভোটের অধিকার যেনো নিশ্চিত করেন। এমন নানা চিত্র ফুঠে উঠেছে, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে নোবেলজয়ী ব্যাংকার অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের শপথ নেওয়ার পর থেকে।

সম্প্রতি বাংলাদেশে আন্দোলনে সামিল হয়েছিল গোটা ছাত্রসমাজ। বাংলাদেশের সেই শিক্ষার্থীদের পাশে ছিল ভারতের বামমনস্ক ছাত্ররা। ভারতে বাম সমর্থিত ছাত্ররা বাংলাদেশের আন্দোলনকে সমর্থন জানালেও সবচেয়ে নজর কেড়েছিল কলকাতার বাম সংগঠনগুলোর শিক্ষার্থীদের আন্দোলন। তারাও একাত্মবোধ করেছিলেন বাংলাদেশবাসীর সঙ্গে।

বর্তমানে একপ্রকার শান্ত বাংলাদেশ। এতে খুশি পশ্চিমবঙ্গে বামেরাও। তাদের অভিমত, মেঘ কেটে যেতে সময় লাগবে। তবে মূল স্রোতে ফিরবে বাংলাদেশ। সিআইএমের যুব নেতা শতরূপ ঘোষ বলেছেন, বাংলাদেশের ভালো হোক, সমৃদ্ধি হোক, বাংলাদেশের গণতন্ত্র শক্তিশালী হোক। আমরা মনে করি না ভারত বা এ নিয়ে অন্য মন্তব্য করা উচিত যে কে প্রধান হবেন, কে আগামী দিনে প্রধানমন্ত্রী হবেন। এটা একান্তই বাংলাদেশের ব্যাপার। ভারতের প্রধানমন্ত্রী কে হবেন এ নিয়ে আমরা যেমন ভারতের বাইরের কারো মতামত জানতে চাই না। আমরাই বা অন্য দেশে কে সরকার চালাবে, কিভাবে চালাবে, তা আমাদের দেখা উচিত না। প্রতিবেশীর সাথে সুসম্পর্ক থাকলেই হলো। এটাই আমরা চাই।  

তিনি আরও বলেন, এটা যেমন বিষয়, তেমন রবীন্দ্রনাথের মূর্তি ভেঙে ফেলা, মুজিবের মূর্তি ভেঙে ফেলা এগুলো যেন আর না ঘটে। আমরা জানি সিংহভাগ বাংলাদেশিরাও এসব পছন্দ করে না। ফলে এগুলো ঘটলে তা মানবতার চোখে দেখতে খারাপ লাগে।

টলিপাড়ার বাংলা টিভি সিরিয়াল জগতের জনপ্রিয় অভিনেত, বামনেতা দেবদূত ঘোষ মনে করেন, ধর্মনিরপেক্ষতার পতাকা সামনে রেখে, সাংস্কৃতিক পরিবেশকে বাঁচিয়ে রেখে এবং ভালোবাসার মাধ্যমে, মানুষের মধ্যে সম্প্রীতির বার্তা রেখে এগিয়ে যাক বাংলাদেশ। যারা বাংলাদেশের সরকার চালানোর দায়িত্ব নিয়েছেন, আগামী দিনে তাদের পরীক্ষার মাধ্যমে প্রমাণ করতে হবে। ড. ইউনূস সম্পর্কে বামমনস্ক অভিনেতা বলেছেন, উনি একজন কৃতি মানুষ। উনার প্রতি বাংলাদেশবাসী যে ভরসা করেছেন, সেই ভরসার প্রতি সম্মান জানিয়ে নিশ্চয়ই ওনারা উনাদের মতন সরকার চালাবেন। তাদের জন্য আমাদের বুক ভরা শুভেচ্ছা আছে।

ড. ইউনূসকে সাধুবাদ জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের বিশিষ্ট অধ্যাপক পবিত্র সরকার। তিনি ড. ইউনূসের দীর্ঘদিনের পরিচিত। তিনি বলেছেন, আমি তাকে যতটা জানি, তিনি ঠান্ডা মাথার মানুষ, ভদ্র এবং স্বজ্জন। তিনি আন্তরিকভাবে চেষ্টা করবেন বলে আশা করা যাচ্ছে। উনি অসাম্প্রদায়িকতার কথা বলেছেন। সংখ্যালঘুদের রক্ষা করার কথা বলেছেন। এ পর্যন্ত তিনি যা বলেছেন, এগুলো সঙ্গত এবং সেটাই ভরসা জোগাচ্ছে।

মারক্যুই স্ট্রিটের ব্যবসায়ীরাও বলছেন, বাংলাদেশদেশবাসী ভালো থাকুক এবং তাদের ভালো হোক। বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে এবং তাদের যে সম্পর্ক রয়েছে, অর্থাৎ আমাদের যেই পুরনো সম্পর্ক আছে সেটাকেই আমরা কন্টিনিউ করব। বাংলাদেশ সোনার বাংলা হয়ে উঠুক।

কলকাতায় অবস্থানরত বাংলাদেশিরা বলছেন, গণতন্ত্র ফিরে আসুক। দেশবাসী এবার যেনো ভোটের অধিকার পায়। তাদের অভিমত, আমরা যেন শান্তিপূর্ণভাবে থাকতে পারি। আমরা চাই বাংলাদেশ বিশ্বের কাছে আলাদা পরিচিতি পাক। আমরা কোনো রাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট করতে চাই না।  

বাংলাদেশ সময়: ১৪৩২ ঘণ্টা, আগস্ট ১১, ২০২৪
ভিএস/নিউজ ডেস্ক

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।