ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভারত

পশ্চিমবঙ্গে ‘দানা’র তাণ্ডবে কৃষিতে ব্যাপক ক্ষতি, নিহত ১

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪১ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৫, ২০২৪
পশ্চিমবঙ্গে ‘দানা’র তাণ্ডবে কৃষিতে ব্যাপক ক্ষতি, নিহত ১

কলকাতা: ভোর রাতের দিকেই উড়িষ্যার ভিতরকণিকা ও ধামার কাছে আঘাত করে ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’, যার ব্যাপক প্রভাব পড়েছে পশ্চিমবঙ্গে। ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাবে চরম ক্ষতি হয়েছে ধান চাষে।

বিঘার পর বিঘা কৃষিজমির ধান পড়ে গিয়েছে মাটিতে। সমুদ্রের নোনা পানিতে ডুবেছে চাষের জমি। নোনা পানি ঢুকে সলিল সমাধি ঘটেছে পাকা ধানের। শুধু ধান নয়, দানার প্রভাবে আলু চাষে ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতি হয়েছে কৃষিজ অন্যান্য ফসলেরও। ভেসে গেছে ঘেরের মাছ। সব মিলিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় জেলার কৃষকেরা।

ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে উড়িষ্যা থেকে একজনেরও মৃত্যুর খবর আসেনি। তবে পশ্চিমবঙ্গে একজনের মৃত্যু ঘটেছে।

শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, একজনের মৃত্যুর খবর পেয়েছি। খুবই দুর্ভাগ্যজনক। তিনি বাড়িতে ক্যাবল লাইনের তার নিয়ে কাজ করছিলেন। প্রশাসনকে মৃত ব্যক্তির পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।

বৃহস্পতিবার রাতে সবচেয়ে বেশি ঝড়ের দাপট ছিল পশ্চিমবঙ্গের সুন্দরবন এলাকায়। সাগর, নামখানা, পাথরপ্রতিমায় বেশকিছু গাছ ভেঙে পড়েছে। জলোচ্ছ্বাস দেখা গিয়েছে বকখালি ও মৌসুমি দ্বীপে। ঝড়ের দাপটে জলস্তর বেড়েছিল নদী এবং সমুদ্রের। কাঁচা বাঁধ ভেঙে সমুদ্রের পানি ঢুকে পড়ে জমিতে। যার জেরেই ফসল নষ্ট হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

শুক্রবারও উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং মেদেনিপুর জেলায় বৃষ্টির লাল সর্তকতা জারি রয়েছে। এদিনও বন্ধ রয়েছে ফেরি পরিষেবা। কলকাতার আবহাওয়া অফিসের তথ্য মতে, অতি গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে ‘দানা’। যে কারণে টানা বৃষ্টি হয়ে চলেছে কলকাতায়। বৃষ্টিতে বহু সড়ক এখনো জলমগ্ন। যার কারণে যান চলাচল কিছুটা ব্যাহত হয়েছে। তবে চালু হয়েছে বিমান ও রেল পরিষেবা।

বৃহস্পতিবার সারা রাত নিজের দপ্তরেই ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঘূর্ণিঝড়ের সামগ্রিক পরিস্থিতি সব সময় নজর রেখেছিলেন তিনি। এই নিয়ে শুক্রবার দুপুরে সাংবাদিক সম্মেলন করেন মুখ্যমন্ত্রী।

তিনি জানান, ঘূর্ণিঝড়ের কারণে প্রায় ২ লাখ ৬৩ হাজার মানুষকে ৮৩৭টি ত্রাণ শিবিরে পাঠানো হয়েছিল। সেইসব ত্রাণ শিবিরের নজরদারি নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেছেন, দ্রুত দুর্যোগ কেটে যাবে। তবে সাধারণ মানুষের কাছে সবরকম পরিষেবা পৌঁছে দিতে যেন দেরি না হয়, সেদিকে মুখ্যসচিবকে নজর দিতে বলেছেন।

দুর্যোগে বহু চাষের জমি নষ্ট হয়েছে। কৃষকদের কতটা ক্ষতি হয়েছে, তা সমীক্ষার নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। এর পাশাপাশি জমা পানি থেকে কলকাতায় মশাবাহিত বিভিন্ন রোগের প্রাদুর্ভাবের কথাও স্মরণ করিয়ে দিয়ে মশারি বিলির পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

মমতা বলেছেন, যেসব এলাকায় ম্যালেরিয়ার প্রকোপ রয়েছে, সেখানে মশারি বিলি করতে। রাতভর সার্বিক পরিস্থিতি ওপর নজর রাখার জন্য কর্মকর্তাদের ধন্যবাদও জানান পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩১ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৫, ২০২৪
ভিএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।