ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৮ চৈত্র ১৪৩১, ০১ এপ্রিল ২০২৫, ০২ শাওয়াল ১৪৪৬

ভারত

কলকাতায় শেষ মুহূর্তে আতর কিনতে বাজারে ভিড়

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট   | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১১৪ ঘণ্টা, মার্চ ৩০, ২০২৫
কলকাতায় শেষ মুহূর্তে আতর কিনতে বাজারে ভিড়

কলকাতা: ভারতে আনুষ্ঠানিক ঈদের ঘোষণা না হলেও একপ্রকার নিশ্চিত সোমবার (৩১ মার্চ) পালিত হবে পবিত্র ঈদুল ফিতর। আর ঈদের নামাজ পড়তে যাওয়ার আগে সবার মনের ইচ্ছা থাকে, পছন্দের সুগন্ধি আতর তুলোয় ভিজিয়ে কানের লতিতে গুঁজে, আর একটু পাঞ্জাবির কলারে ঘষে, সুরভিত হোক সারাক্ষণ।

রাত পোহালেই খুশির ঈদ। আর তাই শেষ বেলায় কলকাতায় সেই পছন্দের সুগন্ধি খুঁজতে বাজারে ভিড় জমিয়েছেন মুসল্লিরা। জামাকাপড় থেকে সেমাই, লাচ্চা, টুপির কেনাকাটার পাশাপাশি জমে উঠেছে আতরের বাজারও।

ঈদের আগে সেমাই, লাচ্চা, জরি টুপি, তুর্কি সুতোর টুপি, সুরমা, মেহেদির সঙ্গে ব্যাপক বিক্রি হচ্ছে আতর। নানা রকম নামিদামি সুগন্ধি আতরের ঘ্রানে মোহিত কলকাতার বাজার। শেষবেলায় এমন চিত্র ফুটে উঠছে কলকাতা  নাখোদা মসজিদসহ মুসলিম অধ্যুষিত এলাকায়।

এবার আতরের বাজার মাতাচ্ছে ফিটজি, হিবা, মাই ড্রিম, কুল মুন, হোয়াইট উদ, ইমপ্রেস, হায়াতিরা। তাদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে একটু পিছিয়ে থাকলেও জান্নাতুল ফিরদৌস, হোয়াইট মস, মাজমারা তাদের অস্তিত্ব ধরে রেখেছে প্রবীণদের পছন্দের তালিকায়। ঈদের জন্য নতুন কেনা পাঞ্জাবিতে আতরের সুবাস না থাকলে কি চলে! পাশাপাশি  অ্যালকোহল মুক্ত পারফিউম।

‘আল্লাহর নবী সা. ফুল ভালোবাসতেন, ভালোবাসতেন খুশবু। তবে একটু হালকা গন্ধ হলে ভালো হয়' এমনই মত কলকাতার ক্রেতাদের। নাখোদা মসজিদ সংলগ্ন ট্রাম লাইনের ওপর রয়েছে ‘গরিব নেওয়াজ পারফিউমারি’ নামে এক আতর কোম্পানির দোকান। বহু বছর ধরে সুনামের সঙ্গে আতর তৈরি করছে প্রতিষ্ঠানটি।

এ দোকান থেকে গত বছর পর্যন্ত রমজান মাসজুড়ে পাইকারি মূল্যে বাংলাদেশেও পাঠানো হতো তাদের প্রতিষ্ঠানের আতর। এবার ব্যাতিক্রম। ভারতীয় ভিসা নেই, তাই আসেনি বাংলাদেশি। ফলে এবার সেভাবে বাংলাদেশে যায়নি তাদের তৈরি আতর। এসব জানাচ্ছিলেন প্রতিষ্ঠানের মালিক শফিক আলম। তবে আতরের বাজার ভালো আছে বলেই জানান তিনি।

তার দোকানের ভেতরে আতর কেনার আগে যাচাই করে দেখছিলেন সাবিরউদ্দিন খান। ডান হাতের তালুতে একটু আতর লাগিয়ে দিলেন বিক্রেতা শফিক। দোকানদারে কাছে সাবিরের আবেদন এমন আতর দিন যেন তার সুগন্ধ দুদিন গায়ে লেগে থাকে। আর গন্ধে উগ্রতা না থাকে।  

আতর বিক্রির ফাঁকে শফিক জানান, আতর বিক্রি হয় 'তোলা' হিসেবে। যার দাম ৮০০ রুপি থেকে ১৬ হাজার পর্যন্ত হতে পারে। তবে ক্রেতা চাইলে এক তোলার সিকি ভাগ কিনতে পারেন। এছাড়া ক্রেতাদের কথা ভেবে ছোট ছোট শিশিতে আতর রয়েছে তার দোকানে।

অপরদিকে কলকাতার খিদিরপুর বাজারে দীর্ঘ সত্তর বছরের বেশি সময় ধরে রকমারি দ্রব্যের সঙ্গে আতর বিক্রি করে আসছেন নাদিম মোল্লা।  

তিনি বলেন, বাজারে অনেক নামি-দামি সুগন্ধি এসেছে। কিন্তু আতর তার চাহিদা ঠিক ধরে রেখেছে। তিনি বলেন, শুধু রোজা বা ঈদের সময় নয়, সারা বছরই কমবেশি আতরের চাহিদা থাকে, তার দোকানে।

অন্যদিকে হাওড়া জেলার উলুবেড়িয়া জামে মসজিদ সংলগ্ন আতরের দোকান থেকে কিনতে এসেছেন শেখ হাবিব। হাবিবের চাহিদা অবশ্য আতর নয়, অ্যলকোহল মুক্ত বডি স্প্রে। সেই দোকানে ১২ বছরের বেশি সময় ধরে আতর বিক্রি করে আসছেন আবদুল কাদিম মোল্লা।

তিনি বলেন, গ্রামাঞ্চলে একটু চড়া গন্ধ পছন্দ করলেও শহরাঞ্চলে হালকা ঘ্রান বেশি পছন্দ করে থাকেন। তার অভিমত, এমন কোনো বছর যায়নি, যে আতর অবিক্রিত থেকে গেছে। তবে জান্নাতুল, ফিরদৌসের চাহিদা বেশি।

পাশাপাশি একবারে শেষ বেলায় যথেষ্ট চাহিদা রয়েছে, রেডিমেড পাঞ্জাবি, বোরখা, লুঙ্গি, নামাজি টুপি, লেহেঙ্গা, ঘাঘরা-চোলি, কসমেটিক ইত্যাদির। বাংলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বহু মানুষ পরিবার ও শিশুদের নিয়ে শেষবেলায় ঈদের বাজার করছেন কলকাতার মার্কেটগুলোতে।

বাংলাদেশ সময়: ২১১৫ ঘণ্টা, মার্চ ৩০, ২০২৫
ভিএস/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।