ঢাকা, রবিবার, ২১ বৈশাখ ১৪৩২, ০৪ মে ২০২৫, ০৬ জিলকদ ১৪৪৬

ভারত

ছোট্ট ব্যাংকিং ভুল জীবন বদলে দিল ভারতীয় ছাত্রীর

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫:২৫, মে ৪, ২০২৫
ছোট্ট ব্যাংকিং ভুল জীবন বদলে দিল ভারতীয় ছাত্রীর

একটি ছোট্ট ব্যাংকিং ভুল জীবন বদলে দিল বেঙ্গালুরুর এক সাধারণ দশম শ্রেণির ছাত্রীর। এই ঘটনা এখন সামাজিক মাধ্যমে হাজার হাজার মানুষের হৃদয় ছুঁয়ে গেছে।

একটা ভুল ব্যাংক ট্রান্সফার, এক তরুণীর জীবনে আলো নিয়ে এল— কারণ, কেউ একজন টাকা ফেরত দেওয়ার চাইতেও আরও বড় কিছু করে দেখিয়েছেন। আর এই পুরো ঘটনা ঘটেছে বেঙ্গালুরুভিত্তিক উদ্যোক্তা ও অ্যাথলিট চিন্ময় হেগড়ের সহানুভূতির কল্যাণে।

প্রায় দুই বছর আগে একটি আন্তর্জাতিক অ্যাকাউন্ট থেকে হেগড়ের অ্যাকাউন্টে হঠাৎ করেই ৫০ হাজার রুপি আসে। বিষয়টি নিয়ে তিনি ব্যাংকে খোঁজ নিয়ে দেখেন, সৌদি আরব প্রবাসী রিজওয়ান নামের ব্যক্তি এই টাকা (রুপি) পাঠিয়েছেন যা অ্যাকাউন্ট নম্বরের ছোট্ট ভুলে হেগড়ের অ্যাকাউন্টে জমা পড়েছে।  

হেগড়ে জানান, আমি তাকে ফোন করি। তিনি কান্না করছিলেন। বললেন, এই টাকা আমার পরিবারের জন্য। দয়া করে ফেরত দিন। আমি তাকে আশ্বস্ত করি— আমি টাকাটা ফেরত দেব।

তবে শুধু টাকা ফেরত দিয়েই থেমে থাকেননি তিনি। নিজে গিয়ে রিজওয়ানের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন। সেখানে গিয়ে দেখেন তাদের বাড়ির অবস্থা ভয়াবহ।

রিজওয়ানের বাবা হুইলচেয়ারে। তিনি একসময় নির্মাণ শ্রমিক ছিলেন, কিন্তু তৃতীয় তলা থেকে পড়ে পঙ্গু হয়ে গেছেন। তার ছোট বোনকে অর্থের অভাবে প্রাইভেট স্কুল থেকে সরকারি স্কুলে নিতে হয়েছে।

রিজওয়ান সদ্য ভাল মার্কস নিয়ে বি.কম পাস করেছেন এবং বিদেশে গিয়েছেন পরিবারের হাল ধরতে। এই গল্প শুনে হেগড়ের বাবাও নাড়া খেয়ে যান।

পরদিনই তিনি হেগড়েকে নিয়ে আবার সেই পরিবারে যান এবং বলেন— আপনার মেয়ের সম্পূর্ণ পড়াশোনার দায়িত্ব আমরা নেব এবং যেন তার জন্য উপযুক্ত স্কুলেই পড়তে পারে তার ব্যবস্থা করবো।

তারপর তিনি এক বছরের স্কুল ফি পরিশোধ করেন, এবং হেগড়েকে বলেন প্রতি মাসে খোঁজ নিতে।

এবছর, কর্নাটক দশম শ্রেণির রেজাল্ট বের হলে রিজওয়ানের বোন ৬২৫-এর মধ্যে ৬০৬ পেয়ে ৯৭% নম্বর অর্জন করেন।

সেই ছাত্রী হেগড়েকে ফোন করে বলেন, আমার নিজের ভাইয়ের আগেই আপনাকে ফোন করেছি। আপনি আমার নিজের ভাইয়ের মতো।

হেগড়ে লিখেছেন, আমি ভাষায় প্রকাশ করতে পারছি না কতটা আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছিলাম। এক ছোট্ট ভুল কিভাবে আশীর্বাদ হয়ে এল, তা আমি এখনো ভাবি।

সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস

এমএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।