ঢাকা, সোমবার, ২০ শ্রাবণ ১৪৩২, ০৪ আগস্ট ২০২৫, ০৯ সফর ১৪৪৭

ভারত

বাংলাদেশি ট্যাগ দিয়ে পুশইন আতঙ্কে কলকাতায় একজনের আত্মহত্যা!

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১:২৪, আগস্ট ৩, ২০২৫
বাংলাদেশি ট্যাগ দিয়ে পুশইন আতঙ্কে কলকাতায় একজনের আত্মহত্যা!

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারবার দাবি করে আসছেন রাজ্যে এনআরসি (জাতীয় নাগরিক পঞ্জি) হতে দেবেন না। কিন্তু সেই এনআরসির আতঙ্কে বাংলায় প্রথম আত্মহত্যার ঘটনা সামনে এসেছে।

রোববার (৩ আগস্ট) ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ কলকাতা রিজেন্ট পার্ক থানার অন্তর্গত আনন্দপল্লী এলাকায়। নিজ বাসভবনে ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়েছে দিলীপ কুমার সাহা (৬০)।

পরিবার সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হবে! এই ভয়ে গত সাত থেকে দশদিন ধরে উনি মানসিক রোগে ভুগছিলেন। তারপরই এই দুর্ঘটনার ঘটনা সামনে আসে।

মৃতের পরিবার জানিয়েছে, দিলীপ কুমার সাহা এক সময় নবাবগঞ্জের বাসিন্দা ছিলেন। ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ থেকে ভারতে যান। প্রথমে ভাড়া বাসায় থাকতেন রিজেন্ট পার্ক এলাকার সাহা পাড়ায়। পরে নিজ বাসা বানিয়ে আনন্দপল্লীতে চলে যান।

দিলীপ কুমারের স্ত্রী জানান, রোববার সকালে একাধিকবার ডাকাডাকি করলেও সাড়া মেলেনি। এরপর প্রতিবেশীরা দরজা ভাঙতেই দিলীপ সাহার ঝুলন্ত লাশ দেখা যায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে।

মৃত দিলীপ সাহার স্ত্রী আরতি সাহা আরও জানান, তার স্বামী এনআরসি নিয়ে আতঙ্ক ছিল। ওকে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হবে, তার আগে কোনো কারাগারে ( ডিটেনশন ক্যাম্প) আটকে রাখা হবে। সেখানে থাকলে পরিবারের সদস্যদের দেখতে পাবে না। সবসময় মনের মধ্যে এসব চিন্তা করতেন।

দিলীপ সাহার দিদি সাবিত্রী গায়েন জানান, পশ্চিমবঙ্গেও এনআরসি হবে, যখন থেকে খবরটা আমার ভাই জানতে পেরেছে তবে থেকেই তার মধ্যে আতঙ্ক তাড়া করে বেরিয়েছে। যদিও আমাদের সমস্ত কাগজপত্র এখানকার।

স্থানীয়রা জানান, দিলীপ কুমার সাহা কিছুদিন ধরে খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করে দিয়েছিলেন। সবসময় এনআরসি আতঙ্কে থাকতেন। সবাইকে তিনি বলতেন, তাদের যেকোনো সময় বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। আমরা বারবার বুঝিয়েছি এমনটা হবে না। কিন্তু উনি মনে করতেন, ভোট হলেই বিজেপি জিতবে আর এনআরসি হবেই। তারপর আর ভারতে থাকা যাবে না। উল্লেখ্য, বছর শেষ হলেই পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচন।

ইতোমধ্যেই অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। আত্মহত্যার সঙ্গে অন্য কোনো বিষয় জড়িত আছে কিনা বিষয় আদৌ এনআরসি কিনা! তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

ভিএস/এমইউএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।