ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভারত

বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্ক আরো সুদৃঢ় হবে

ভাস্কর সরদার, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৪৫ ঘণ্টা, মে ২৪, ২০১৮
বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্ক আরো সুদৃঢ় হবে তৌফিক হাসান ও বুদ্ধিজীবী শিক্ষক পবিত্র সরকার

কলকাতা: কলকাতায় নিযুক্ত বাংলাদেশ উপ দূতাবাসের উপ হাইকমিশনার তৌফিক হাসান বলেছেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী সরকারি সফরে পশ্চিমবঙ্গে আসছেন। এ সফরে কলকাতা, বীরভূম, বর্ধমান, আসানসোল জেলায় সফর করবেন তিনি।

এ সফরে মূলত তিনটি বিষয় প্রাধান্য পেতে চলেছে। ২৫ মে বাংলাদেশ ভবন উদ্বোধন, একই দিনে বিশ্বভারতী যে সমাবর্তন অনুষ্ঠান আছে তাতে অংশ নেবেন তিনি এবং ২৬ মে আসানসোলে কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রধানমন্ত্রীকে ডি-লিট ডিগ্রি দেওয়া হবে।

 

২৫ মে কলকাতায় রাত্রিযাপন করবেন প্রধানমন্ত্রী। এসময় তিনি জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ি ও নেতাজী মিউজিয়াম পরিদর্শন করবেন।

সবদিক বিচার করলে আমরা বলতে পারি এই সফর বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্ককে আরো সুদৃঢ় করবে। শান্তি নিকেতনে নবনির্মিত বাংলাদেশ ভবন একটি উল্লেখযোগ্য মাইলফলক হিসেবে ভূমিকা পালন করবে। এই ভবনটি বাংলাদেশের অর্থায়নে ও বিশ্বভারতীর দেওয়া জমিতে নির্মাণ করা হয়েছে।
ভবনটিতে ৪৫৩ আসন বিশেষ একটি অডিটোরিয়াম, ক্যাফেটেরিয়া, মিউজিয়াম সিস্টেম এবং একটি লাইব্রেরি আছে। যেটা বিশ্বভারতীর সবচেয়ে আধুনিক এবং উন্নতমানের প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রীসহ ৮০ জনের টিম থাকবে।

পশ্চিমবঙ্গ থেকে থাকবেন পশ্চিমবঙ্গের গভর্নর, মুখ্যমন্ত্রী এবং কবি নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চ্যাটার্জি। এক কথায় বলা যায়, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী এবং দু’দেশের প্রধানমন্ত্রীর একসঙ্গে অনুষ্ঠানে থাকা বাংলাদেশ-ভারতের সুসম্পর্কের বহিঃপ্রকাশ। তবে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ছাড়া দিল্লি থেকে কারা আসবেন তা নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি তিনি।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরো বলেন, যদি শান্তি নিকেতনের বৈঠকে তিস্তা চুক্তি নিয়ে আপনারা প্রসঙ্গ তোলেন তাহলে বলব দুই দেশের ভিভিআইপিদের যখন সাক্ষাৎ হয়, তখন অনেক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। কখন কি হবে সেটা আগে থেকে বলা মুশকিল।  তবে দু’দেশের সৌজন্য সাক্ষাৎ হচ্ছে- এটুকু বলতে পারি এর বাইরে এ মুহূর্তে বিশেষ কিছু আমার জানা নেই।

এ বিষয়ে উপ দূতাবাসে হঠাৎ করে আসা বুদ্ধিজীবী শিক্ষক পবিত্র সরকার বলেন, পশ্চিমবঙ্গ, বাংলাদেশ, ত্রিপুরা, আসাম বাংলাভাষী। এর প্রধান সত্তা হচ্ছে বাংলাদেশ। সেই সত্তার কারণ শেখ মুজিব স্বাধীন গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সারা পৃথিবীর কাছে বাঙালিদের পরিচিত করছেন তিনি। তিনি বাঙালির মুখ। ফলে আমরা পশ্চিমবঙ্গে বসে বাঙালি মনে করাটা ভুল।  

যেখানে চীন ভবন আছে, নেপাল ভবন আছে, হিন্দি ভবন আছে, সেখানে একটা বাংলাদেশ ভবন আগেই প্রয়োজন ছিল। শেষ পর্যন্ত হলো। তার জন্য দুই দেশের মানুষকে অভিনন্দন জানাই। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী মিলে কাজটা সম্ভব করতে পেরেছেন তার জন্য আমি কৃতজ্ঞ।

তিস্তা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি প্রত্যাশিত এবার চুক্তি নিয়ে।  আমি তো জ্যোতিষে বিশ্বাস করিনা তাই কবে হবে, কীভাবে হবে আমার পক্ষে বলা সম্ভব না। তবে আমি মনে করি তিস্তা চুক্তিটা হোক। বাংলাদেশের জল সমস্যার একটা সমাধান হোক। আমরা বাংলাদেশকে জলে বঞ্চিত করে তাকে পিঠ চাপড়ে একটা বঙ্গভবন করব শান্তি নিকেতনে, এইটা কোন সমাধান বলে মনে করিনা।  তিস্তার জলের প্রবাহের সঙ্গে উন্মোচন হোক বঙ্গভবনের।  

দুই দেশের সম্পর্ক নিয়ে তিনি আরো বলেন, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক একটা জাতির উপর নির্ভর করে। ভারত বাংলাদেশের কাছ থেকে অনেক কিছু পেয়েছে। চট্টগ্রামের বন্দর খুলে দেওয়া হয়েছে- যার ফলে ত্রিপুরা আসামের সঙ্গে নদীর যোগাযোগ হয়েছে। তাছাড়া ঢাকা-কলকাতা ত্রিপুরা বাসের রাস্তা খুলে গেছে। দু'দেশের বাণিজ্য অনেক প্রসারিত হয়েছে। বিভিন্ন ধরনের পরিকল্পনায় একে অপরের সহযোগিতা চলছে।  সেক্ষেত্রে আমি তো মনে করি অবশ্যই তিস্তা চুক্তি হওয়া উচিত। তবে আমি নদী বিশেষজ্ঞ নই। নদী বিশেষজ্ঞরা এ নিয়ে নানা মত প্রকাশ করেন। আমি মনে করি তিস্তা খুলে গেলে আসলে ভারতেরই উপকার হবে।

বাংলাদেশ সময়: ০৬৩০ ঘণ্টা, মে ২৪, ২০১৮
ভিএস/আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।