জি-বাংলা, স্টার জলসাসহ বিভিন্ন চ্যানেলে বন্ধ থাকা সিরিয়াল নিয়ে বৃহস্পতিবার (২৩ আগস্ট) নড়েচড়ে বসেন মমতা। রাজ্যের প্রশাসন ভবন নবান্নে ডাক পড়ে দু’পক্ষের।
দীর্ঘ এক ঘণ্টার মিটিং শেষে মুখ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, মিটিং খুব ভালো হয়েছে। সব পক্ষই মন খুলে কথা বলেছে। শুক্রবার সকাল থেকে শুটিং শুরু হবে। ভাষার দিক থেকে বাংলাভাষী সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে আছে। এটা বাঙালির গর্ব। সারা পৃথিবীতে পশ্চিমবাংলার অভিনেতা-অভিনেত্রীরা জনপ্রিয়। কয়েকদিন একটা সংকট সৃষ্টি হয়েছিল, আজ তা মিটে গেছে।
‘একটা কমিটি গঠন করা হয়েছে কলাকুশলী, টেকনেশিয়ান ও প্রযোজকদের নিয়ে। তারা প্রতি মাসে বসে তাদের সমস্যা নিজেরা মেটাবেন। আগামীকাল থেকে কাজ শুরু হবে এবং দর্শকরা একদিন পর থেকেই সিরিয়ালের নতুন অংশগুলো দেখতে পাবেন। ’
আর্টিস্ট ফোরামের পক্ষ থেকে অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় বলেন, সবাইকে ধন্যবাদ এ সমস্যা মেটানোর জন্য। বিশেষ করে মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ। তার হস্তক্ষেপে এ সমস্যার সমাধান হলো। প্রযোজকরা সব কিছু মেনে নিয়েছেন। শুক্রবার থেকেই শুটিং শুরু হবে।
দিনে ১০ ঘণ্টার বেশি কাজ করতে হলে ওভারটাইম বাবদ পারিশ্রমিক দিতে হবে। ১৪ ঘণ্টার বেশি কাজ কোনো মতেই নয় এবং প্রতি মাসের ১৫ তারিখের মধ্যে পারিশ্রমিক মিটিয়ে দেওয়াসহ পাঁচ দফা দাবি ছিল বাংলা ধারাবাহিকের অভিনেতা-অভিনেত্রীদের। যতদিন এটা না হবে ও যাবতীয় পুরনো বকেয়া যতদিন না মেটাবে ততদিন কাজ বন্ধ রাখবেন তারা। এ ঘোষণা আছে তাদের পক্ষ থেকে। ফলে চূড়ান্ত অনিশ্চয়তার সম্মুখীন হয় ইন্ডাস্ট্রির তিন হাজার অভিনেতা ও পাঁচ হাজার টেকনিশিয়ানের।
দু’পক্ষের দাবি-পাল্টা দাবিতে গত শনিবার (১৯ অগাস্ট) থেকে টানা বন্ধ বাংলা টিভি সিরিয়ালের শুটিং। সমাধান সূত্র না বেরোনোয় মঙ্গলবার (২১ অগাস্ট) আর্টিস্ট ফোরাম সভাপতি অভিনেতা প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়সহ জিৎ, সোহমের মতো অভিনেতারা প্রযোজকদের বিরুদ্ধে হুমকি দিয়ে বসেন টিভি সিরিয়ালের শুটিং সমস্যা না মিটলে অবিলম্বে বন্ধ করে দেওয়া হবে বাংলা সিনেমারও শুটিং।
এ প্রসঙ্গে রাজ্য প্রশাসন যে চুপ ছিলে তা নয়। সেই তরফেও নানাভাবে চেষ্টা করা হচ্ছিলো। কারণ শুটিং বন্ধ মানে প্রডাকশন বন্ধ। প্রডাকশন বন্ধ হলে, অর্থাৎ দর্শক যদি সিরিয়াল দেখতে না পায় তাহলে চ্যানেলগুলোর বিজ্ঞাপন বন্ধ হয়ে যাবে। ফলে শুধু যে কলাকুশলীদের অর্থনৈতিক ক্ষতি হবে তা নয়, রাজ্য সরকারও অর্থনৈতিক ক্ষতির মুখে পড়বে। সে কারণে এর আগে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসকে দায়িত্ব দিয়েছিলেন এ সমস্যা সমাধানের।
কিন্তু তাতেও দু’পক্ষ অর্থাৎ আর্টিস্ট ফোরাম ও টলিউড টেলিভিশন প্রযোজকদের মধ্যে বরফ গলেনি। মমতায়ই শেষ পর্যন্ত হলো সমাধান।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৫২ ঘণ্টা, আগস্ট ২৩, ২০১৮
ভিএস/এএ