অনুষ্ঠানে সারাজীবন সঙ্গীতে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশের কিংবদন্তি সঙ্গীতশিল্পী সাবিনা ইয়াসমিন ও পশ্চিমবাংলার অন্যতম জনপ্রিয় শিল্পী আরতি মুখার্জিকে 'জীবনকৃতি সম্মান'-এ ভূষিত করা হয়।
উদ্যোক্তাদের কথায়, এই উৎসব শুধু দুই বাংলার বাঙালির নয়, বিশ্বব্যাপী বাঙালিকে এক ছাতার নিচে আনার এক নবউদ্যোগ।
প্রধান অতিথি ড. আনিসুজ্জামান বলেন, আমি সঙ্গীতজ্ঞ নই তবুও এরকম অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ পেয়ে ভালো লাগছে। বাংলা গান সব সময় বাণী নির্ভর, সুরনির্ভর নয়। কয়েকটা কথায় যদি বাংলা গানের ইতিহাস বলতে হয়, তাহলে বলবো চর্যাপদ বা চর্যাগীতির মতো রাগ-রাগিনী আমরা রক্ষিত করতে পারিনি। মোটামুটি জয়দেবের গীতগোবিন্দ থেকে বাংলা গানের পথচলা শুরু। তবে ইতিহাস বলছে কীর্তন থেকেই বাংলা গানের শুরু। এরপর রামপ্রসাদের টপ্পা, পরে অতুলপ্রসাদ, রবীন্দ্র-নজরুলের মতো ব্যক্তিত্বরা বাংলা গানের মধ্যে আধুনিকতার মেলবন্ধন ঘটিয়েছিলেন।
‘একত্রিত করেছেন পাশ্চাত্য সুর, গজল বা অন্য রাগ-রাগিনী। মোটামুটি অনেক পরে সলিল চৌধুরীর সময় থেকে সুরকার গীতিকার বিষয়টা আলাদা হয়েছে। আবার এখনকার প্রজন্মদের মধ্যে বাংলাব্যান্ড অনেকটা প্রভাবিত হচ্ছে। তবে যেভাবেই হোক আগামী দিনে আরও ভিন্নভাবে বাংলা গান এগিয়ে যাবে। ’
উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে লোপামুদ্রার কণ্ঠে ছয় ঋতুর রবীন্দ্রসঙ্গীত দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়।
অপরদিকে অনুষ্ঠানে 'জীবনকৃতি সম্মান’ পেয়ে উচ্ছ্বসিত সাবিনা ইয়াসমিন। তিনি বলেন, যেকোনো প্রাপ্তি আনন্দের। আমি এই আনন্দটা দুই বাংলার মানুষের সঙ্গে ভাগ করে নিতে চাই।
বাংলা উৎসবের উদ্যোক্তাদের অভিনন্দন জানিয়ে তিনি বলেন, বাংলা গানের উৎসব। আমরা বাংলা গান করি, এখানেও বাংলা গান হয়।
আরতি মুখার্জি বলেন, এটা সত্যিই এক অসাধারণ ব্যাপার। আমাকে ভালোবেসে এই পুরস্কার দিয়েছে, এর থেকে বড় আনন্দের কিছু নেই। অনেক জায়গায় আমি পুরস্কার পেয়েছি কিন্তু এটা আমার কাছে একটা বিশেষ উপহার। দুই দিকপাল সম্মাননা গ্রহণের পর দর্শকদের অনুরোধে মঞ্চে নিজেদের পছন্দের গানের প্রথম কয়েকটি লাইন গেয়ে শোনান।
অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান ছাড়া প্রথমদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বেঙ্গল গ্রুপের চেয়ারম্যান আবুল খায়ের, বন্ধন ব্যাংকের মহাপরিচালক চন্দ্রশেখর ঘোষ, পরিচালক অরিন্দম শীল, বেঙ্গল চেম্বার অব কমার্সের শুভদীপ ঘোষ ও রাজ্যের যুব কল্যাণ মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসসহ অন্যরা।
উৎসবের প্রথম দিনে মনোজ্ঞ অনুষ্ঠান মঞ্চস্থ করেন রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী প্রবুদ্ধ রাহা, রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা, ফাহমিদা নবী, শুভমিতা, জীবনমুখী শিল্পী নচিকেতা প্রমুখ।
অনুষ্ঠান চলবে আগামী ৬ জানুয়ারি পর্যন্ত। কলকাতা থেকে প্রথমবারের মতো শুরু হয়ে আগামী বছরগুলোতে বাংলা উৎসব বাংলাদেশসহ ভারতের বিভিন্ন রাজ্যেও হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩১৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৪, ২০১৯
ভিএস/এএ