ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভারত

‘বাংলাদেশ’ প্যাভিলিয়ন মন কেড়েছে কলকাতাবাসীর

ভাস্কর সরদার, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩১৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৭, ২০১৯
‘বাংলাদেশ’ প্যাভিলিয়ন মন কেড়েছে কলকাতাবাসীর ‘বাংলাদেশ’ প্যাভিলিয়ন-ছবি-বাংলানিউজ

কলকাতা: দৃষ্টিনন্দন উপস্থিতি পাল্টে দিতে পারে যেকোনো কিছুর পটভূমি। আর এতো একটা গোটা দেশ! আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলায় গোটা দেশের প্রতিনিধিত্ব করছে বাংলাদেশ প্যাভিলিয়ন। থিম পুরান ঢাকার বিখ্যাত রোজ গার্ডেন। 

পথ চলতে গিয়ে বইপ্রেমিক একবার হলেও থমকে দাঁড়াচ্ছেন রোজ গার্ডেনের সামনে। সম্পূর্ণ সাদা, চৈনিক বাতির কারসাজিতে নানা রঙের আলোর বিকিরণ সবার মন কাড়তে বাধ্য।

তাই রোজ গার্ডেনের আদলে বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নে ভেতরে প্রবেশ করার আগে থামছেন প্রত্যেকেই। শুধু থামা নয় মোবাইল ফোনে ফ্রেমবন্দি করতেও ভুলছেন না তারা।
 
দমদমবাসী পরিতোষ পাল দলবল নিয়ে অফিস শেষে এসেছেন বইমেলায়। প্যাভিলিয়নের সামনে দাঁড়িয়ে সহকর্মীদের উদ্দেশে বলে উঠলেন, ‘দেখো, আমাগো বাংলাদেশ। চমৎকার সাজিয়েছে। ’ 

কথোপকথনে জানা গেলো কখনও বাংলাদেশে যাননি তিনি কিন্তু শেকড়টা বরিশালের। শুধু পরিতোষ নন বেহালার স্নিগ্ধারও মতামত প্যাভিলিয়ন সজ্জায় এবার বাংলাদেশই সেরা।
 
কলকাতায় গত ৩১ জানুয়ারি শুরু হয়েছে ৪৩তম আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলা। এ মেলায় ৩৬শ’ বর্গফুট জায়গা জুড়ে তৈরি হয়েছে বাংলাদেশ প্যাভিলিয়ন। প্যাভিলিয়নের ভেতর ৪২টি স্টলে আটটি সরকারি ও ৩৮টি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান মিলিয়ে মোট ৪৬টি প্রকশনা এবার অংশ নিয়েছে। সব মিলিয়ে বই সংখ্যা দুই লাখেরও বেশি।
 
সারাবছর কলকাতাবাসী অপেক্ষা করে থাকে এই সময়ের জন্য। এক বাংলার বই আরেক বাংলার মানুষ পড়েন। অবশ্য বাংলাদেশের বইয়ের চাহিদা দিন দিন এতটাই বাড়ছে যে কয়েক বছর ধরে শুধু বাংলাদেশের বইয়ের পসরা নিয়ে ‘বাংলাদেশ বইমেলা’ হয় কলকাতায়। তবে এ নিয়ে অনেকের মত, প্রচার হয় না সেভাবে। তাই কবে শুরু হয় আর কখন শেষ খবরই পাননা অনেকে। তবে কলকাতা বইমেলায়, বাংলাদেশি বই যে পাওয়া যায় এ বিষয়ে নিশ্চিত থাকেন বঙ্গবাসী। এছাড়া বইপাড়ায় পাঠক সমাবেশের স্থায়ী দোকান এখনও অনেকের আজানা। শহুরে মানুষ না হলেও জেলা থেকে আগতদের এমনই অভিমত।
‘বাংলাদেশ’ প্যাভিলিয়নে বইপ্রেমীদের ভিড়-ছবি-বাংলানিউজ বাংলাদেশি বইয়ের চাহিদা চিরকালই আছে কলকাতায়। তাই প্রকাশকদের ভাষায় পুরনো চাল ভাতে বাড়ার মতো, সময় পাল্টালেও-বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ, ভাষা আন্দোলন আর হুমায়ূন আহমেদের চাহিদা এবারেও সবচেয়ে বেশি। তবে অন্যান্য বইয়ের সঙ্গে রান্নার বই, বিভিন্ন ইংরেজি বইয়ের বাংলা ভার্সন, ধর্মীয় বইয়ের কাটতিও কম নয়। এরইমধ্যে ১৫ হাজার কপি বিক্রি হয়ে গেছে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের। এছাড়া ভিড় আছে বিজয় সফটওয়্যারের স্টলেও। স্টল প্রধান বলেন, কোনো সফটওয়্যারকে ছোট করছি না তবে বাংলাটা, বাংলার মতো লিখতে বিজয়ের চাহিদা কলকাতায় দিনদিন বাড়ছে।
 
বইমেলা চলবে আগামী ১১ ফ্রেব্রুয়ারি পর্যন্ত। ১০ ফেব্রুয়ারি ‘বাংলা সাহিত্য ও বঙ্গবন্ধু’ শিরোনামে এক সেমিনারের সঙ্গে মেলাপ্রাঙ্গণে উদযাপিত হবে বাংলাদেশ দিবস। এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ। এছাড়াও উপস্থিত থাকবেন সংসদ সদস্য অসীম কুমার উকিল, সাবেক সচিব বেগম আকতারী মমতাজসহ বাংলাদেশি লেখক, সাহিত্যিক ও বুদ্ধিজীবীরা। থাকবেন পশ্চিমবাংলার বিশিষ্টজনেরাও।
 
এবারের বইমেলার থিম কান্ট্রি দক্ষিণ আমেরিকার দেশ গুয়াতেমালা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বইমেলার উদ্বোধন করেন। বাংলাদেশসহ ব্রিটেন, আমেরিকা, রাশিয়া, ভিয়েতনাম, জাপান, চীন, স্পেন, কোস্টারিকা, আর্জেন্টিনাসহ ২৬টি দেশ নিজেদের সাহিত্য সম্ভার নিয়ে হাজির হয়েছেন মেলায়। এছাড়া অংশ নিয়েছে ভারতের প্রতিটি রাজ্য।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৮১০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৭, ২০১৯
ভিএস/আরআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।