ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভারত

শাসকদলে তোলপাড়, অরূপের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক মন্তব্য রাজীবের

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩০৩ ঘণ্টা, জুলাই ১২, ২০২০
শাসকদলে তোলপাড়, অরূপের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক মন্তব্য রাজীবের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত

কলকাতা: রাজ্যের শাসকদলের অন্দরমহলে আম্পানের ত্রাণ বণ্টনে দুর্নীতি নিয়ে উত্তাপ চরমে পৌঁছেছে। রাজ্যের দুই প্রভাবশালী মন্ত্রী অরূপ রায় ও রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের মধ্যে কোন্দল বেঁধে গেছে। ‘কেন চুনোপুঁটিরা শাস্তি পেল, কেনই বা রাঘববোয়ালদের রেহাই দেওয়া হলো’ তাই নিয়েই অভিযোগ ও পাল্টা অভিযোগে তোলপাড় রাজনীতি। ফলে চরম অস্বস্তিতে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস।
 

অবশ্য এর আগে ত্রাণ দুর্নীতিতে যুক্তরা কোনোভাবেই পার পাবেন না বলে হুঙ্কার ছেড়েছেন স্বয়ং তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপর আম্পান দুর্নীতিতে অভিযুক্ত নেতাদের বেশ কিছু জেলায় শাস্তি দিয়েছে তৃণমূল।

তবে এরপরও বিভিন্ন জেলায় অভিযোগের সংখ্যা বেড়েই চলেছে।

এরই মধ্যে শুক্রবার (১০ জুলাই) হাওড়ায় তিন অভিযুক্ত তৃণমূল নেতাকে বহিষ্কারের কথা ঘোষণা করেন ওই জেলার সভাপতি তথা রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ রায়। কিন্তু আলোচনা না করে এ সিদ্ধান্ত নেওয়ায় ক্ষুব্ধ ওই জেলারই আরেক বিধায়ক তথা রাজ্যের আরেক মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়।

রাজ্যের দুই মন্ত্রী হাওড়ার দলীয় দুই পদে রয়েছেন। অরূপ রায় দলের সভাপতি, আর দলের সহ-সমন্বয়ক রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়।

রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় শনিবার (১১ জুলাই) সাংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ‘দুর্নীতিগ্রস্ত রাঘববোয়ালদের বাঁচাচ্ছেন হাওড়ার (তৃণমূল) জেলা সভাপতি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এত পরিশ্রম করছেন, স্বচ্ছতার সঙ্গে কাজ করছেন। সেখানে দুয়েক জন মানুষের জন্য কেন দল কালিমালিপ্ত হবে? কেন মুখ্যমন্ত্রী তথা আমাদের দলনেত্রীর বিরুদ্ধে মানুষ কথা বলতে সাহস পাবেন? দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমি নেত্রীর সঙ্গে রয়েছি। নেত্রীর ভাবমূর্তি কয়েকজন দুর্নীতিবাজ নেতৃত্বের জন্য খারাপ হবে সেটা রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় চাইবে না। যতদিন রাজনীতিতে থাকবো দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করবো। ’

তিনি আরও বলেন, ‘আমার সঙ্গে কোনো আলোচনা নেই, আমাকে অন্ধকারে রেখে কয়েকজন চুনোপুঁটিকে ধরে কাছের লোক হিসেবে কয়েকজন রুই, কাতলা, ইলিশকে বাঁচানোর প্রচেষ্টা করছে। এটা নিশ্চিতভাবে কাম্য নয়। চুনোপুঁটি থেকে রাঘববোয়ালদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। দলকে বিষয়টি জানিয়েছি। ’

রাজীবের অভিযোগ নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্বও রীতিমতো বেকায়দায়। রাজীবের অভিযোগ নিয়ে অরূপ রায় বলেছেন, আমি যে কাজ করি, দলের নির্দেশ ছাড়া করি না। তৃণমূল কংগ্রেসের আহ্বায়ক সুব্রত বক্সী আমাদের দলের সভাপতি। তিনি যেভাবে আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন সেভাবে আমি কাজ করেছি। যাদের বিরুদ্ধে সঠিক অভিযোগ তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। দল যদি মনে করে কারো বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার, তদন্ত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতেই পারে। ’

অরূপ রায় বলেন, ‘তিনি (রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়) দলের একনিষ্ঠ কর্মী হলে মিডিয়ার কাছে না বলে দলের কাছে বলতে পারতেন। মিডিয়ায় জানিয়ে দলের মধ্যে এমন বিভ্রান্তি ছড়ালেন কেন?’

হাওড়ার এ দুই মন্ত্রীর দুর্নীতি নিয়ে প্রকাশ্যে দ্বন্দ্ব উঠে যেতেই রাজ্যের রাজনীতিতে নানা প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হচ্ছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে।

এ বিষয়ে রাজ্যে বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা বলেছেন, ‘তৃণমূল কংগ্রেসকে হারাতে বিজেপিকে কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করতে হবে না। তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা-মন্ত্রীদের দুর্নীতির কারণে তারা ২০৩১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে চরমভাবে হারবে। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৩০৩ ঘণ্টা, জুলাই ১২, ২০২০
ভিএস/এফএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।