কলকাতা: ভারতের করোনা গবেষকদের দাবির সমর্থনে এবার এগিয়ে এলো ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (আইএমএ)।
সম্প্রতি গবেষকেরা জানিয়েছিলেন, ভারতে তৃতীয় ঢেউ অনিবার্য।
এ বিষয়ে সম্মতি জানিয়ে সোমবার (১২ জুলাই) এক প্রেস বিবৃতি জারি করে আইএমএ জানিয়েছে, গোটা বিশ্বের পরিস্থিতি এবং অতিমারির গ্রাফ দেখে বোঝা যাচ্ছে কোভিডের তৃতীয় ঢেউ অনিবার্য। কেউ তা আটকাতে পারবে না। এই পরিস্থিতিতে দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে এমন ছবি উঠে এসেছে যা ভয়াবহ।
দেখা যাচ্ছে, কোভিড বিধি না মেনেই রাস্তা-ঘাটে বেরিয়ে পড়ছেন সাধারণ মানুষ। এ ব্যাপারে কোনো ধরনের সরকারি পদক্ষেপ নেই। যা দুঃখজনক।
এর সঙ্গে মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন জানিয়েছে, ঘুরতে যাওয়া, তীর্থযাত্রা, ধর্মীয় সমাবেশ সবই জরুরি। কিন্তু এসবের জন্য আরও কয়েকটি মাস অপেক্ষা করাই যায়। টিকাকরণ ছাড়া জনসমাবেশে অনুমতি দেওয়া হলে, তা তৃতীয় ঢেউকে নিশ্চিতভাবে ত্বরান্বিত করবে। আগামী দু-তিন মাসের মধ্যেই ভারতে তৃতীয় ঢেউ আছড়ে পড়বে। এই সময়ে আমাদের আরও সচেতন হওয়া জরুরি।
উল্লেখ্য, গত কয়েকদিন ধরে দেশটির হিল স্টেশনগুলোয় কোভিড বিধি না মেনে পর্যটকদের ভিড় বেড়েছে। দিনকয়েক আগেই প্রকাশ্য এসেছে মানালির রাস্তায় পর্যটকদের ভিড়ের ছবি। পর্যটকদের অধিকাংশের মুখে মাস্ক নেই, শারীরিক দূরত্ব না মেনে সবার মধ্যে একটা বেপরোয়া মনোভাব। এ ধরন চলতে থাকলে গবেষকদের আশঙ্কা সময়ের আগেই করোনা তৃতীয় ঢেউ আসবে ভারতে।
কেন্দ্রীয় সরকারের কোভিড টাস্ক ফোর্সের প্রধান ভি কে পাল এদিন বলেছেন, যুদ্ধ এখনও শেষ হয়নি। এখনও বিপদ রয়েছে। দ্বিতীয় ঢেউ শেষ করতে হলে আমাদের সবাইকে কোভিড প্রোটোকল যথাযথভাবে মেনে চলতে হবে।
কোভিড যোদ্ধারা পুরোদমে লড়ছেন। এখন গা ছাড়া মনোভাব দেখালে ভুলের অনেক বড় মাসুল দিতে হতে পারে। কিন্তু কে শুনে কার কথা, মানালির পর গত বৃহস্পতিবার (৮ জুলাই) মুসৌরির কেমপটি জলপ্রপাতের ভাইরাল হওয়া ছবি কেন্দ্রীয় সরকারসহ গবেষকদের উদ্বেগ বাড়িয়েছে।
জলপ্রপাতে শয়ে শয়ে পর্যটক গোসল করছেন, কেউ ছবি তুলছেন, বেশিরভাগ পর্যটকদের মুখে মাস্ক নেই। এই প্রেক্ষাপটে এদিন মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন যেভাবে সতর্ক করলেন তা উল্লেখযোগ্য বলে মনে করা হচ্ছে।
এই পরিস্থিতিতে ভারতে করোনা গ্রাফ কিছুটা হলেও স্বস্তিদায়ক। দৈনিক সংত্রমণের হার নামল ৪০ হাজারের নিচে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রক প্রকাশিত পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে নতুন করে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৩৭ হাজার ১৫৪ জন। কোভিডকে হারিয়ে একদিনে সুস্থ হয়েছেন ৩৯ হাজার ৬৪৯ জন। গত একদিনে করোনায় প্রাণ গিয়েছে ৭২৪ জনের।
তবে একেবারে করোনা বিধি মেনে সোমবার রথযাত্রা পালন করল উড়িষ্যা। রথের রশিতে টানের দিনে পুরীতে নেই ভক্ত সমাগম। করোনা পরিস্থিতিতে শুধু সেবাইতরা টানলেন রথের রশি। এবার পুরীর রথযাত্রায় অংশ নিয়েছেন ৩ হাজার সেবায়েত ও ১ হাজার কর্মী। রথযাত্রায় অংশ নেওয়ার জন্য প্রত্যেকের করোনা টেস্ট করা হয়েছিল। রিপোর্ট নেগেটিভ আশায় তবেই তারা ধর্মীয় অনুষ্ঠান রথ যাত্রায় অংশ নিতে পেরেছিলেন। গোটা পুরীতে জোর দেওয়া হয়েছে নিরাপত্তাতেও। রোববার রাত ৮টা থেকে মঙ্গলবার রাত ৮টা পর্যন্ত পুরীতে কারফিউ জারি রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ০৭৩৭ ঘণ্টা, জুলাই ১৩, ২০২১
ভিএস/এএটি