কলকাতা: তৃতীয়বারের জন্য বাংলা দখল সম্পন্ন। এবার মিশন ২০২৪।
২০১৯-এর চেষ্টায় ব্যর্থ হয়েছেন। এবার তাই লোকসভা ভোটের বছর তিনেক আগে থেকেই বিজেপিবিরোধী ফ্রন্ট গঠনে তৎপর মমতা। তার এ দিল্লি সফর কার্যত মোদীবিরোধী ফ্রন্ট গঠনের তোড়জোড় বলাই যায়।
রাজনৈতিক মহলের মতে, ২০১৯-এর থেকে মমতার দিল্লি দখলে এবারই বড় সুযোগ। সেই অর্থে এ মুহূর্তে মমতা ছাড়া বিজেপি বিরোধিতা করার মতো ভারতে আক্রমণাত্মক নেতৃত্বের এখন বড়ই অভাব। তৃণমূল কংগ্রেস সেই শূন্যস্থান পূরণ করতে চাইছে।
বিহার রাজ্যের লালুপ্রসাদ যাদব, বা উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের মুলায়ম সিং যাদব, মায়াবতী, অখিলেশের মতো হিন্দিবলয়ের নেতাদের মোদীবিরোধী সেই দাপট এখন অনেকটাই কম। অপরদিকে মহারাষ্ট্রের এনসিপি নেতা শরদ পাওয়ার একক ক্ষমতায় নিজের রাজ্যে কখনও ক্ষমতায় আসতে পারেননি। উড়িষ্যার বিজু জনতা দলের প্রধান নবীন পট্টনায়েক দীর্ঘ বছর ধরে ওই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। তবে কোনও সময় তারা কট্টরভাবে বিজেপি বিরোধিতা করে না। অপরদিকে দক্ষিণ ভারতের দলগুলো সাধারণত নিজেদের নিয়েই বেশি ব্যস্ত থাকে। জাতীয় কংগ্রেসরও সেই ঝাঁজ নেই। কেরালায় ক্ষমতায় থাকলেও বামেদের জাতীয় স্তরে সেই প্রাসঙ্গিকতা নেই। অতএব মোদীবিরোধী নেতৃত্ব এখনও জোরালো নয় বলেই অভিজ্ঞ মহলের ধারণা। সেই পরিপ্রেক্ষিতে রাজনৈতিক মহলের মতে, বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর জাতীয় রাজনীতিতে গ্রহণযোগ্যতা বাড়াতেই মমতার দিল্লি সফর। কারণ এ মুহূর্তে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়া মোদীবিরোধী লড়াকু মুখও ভারতে তেমন কেউ নেই। আর এটা নিজেও ভালো করে জানেন স্বয়ং মমতা।
দিল্লি আসছেন জেনেই কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী মমতাকে চা চক্রের আমন্ত্রণ জানিয়ে রেখেছেন। তৃণমূল সূত্রের খবর, সম্ভবত আগামী বুধবার বা বৃহস্পতিবার দিল্লির চাণক্যপুরীতে বিজেপিবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করতে পারেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানেই সংকীর্ণ স্বার্থ ভুলে মোদী সরকারের বিরোধীতায় ঐক্যবদ্ধ হওয়ার সূত্র বাতলাতে পারেন মমতা। বিরোধীদের এ বৈঠকে সোনিয়া, রাহুল গান্ধী, শারদ পাওয়ার বা উদ্ধব ঠাকরের মতো নেতৃত্বরা থাকলেও বিরোধী শিবিরে মমতাই যে ‘লিডার’ তা স্পষ্ট। এখন দেখার বিষয় বিজেপি বিরোধিতায় জোট গঠনে আন্তরিকতা নিয়ে আর কোন কোন দল শামিল হয়।
আগেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় বলেছিলেন প্রধানমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সময় দিলে এ সফরে তাদের সঙ্গে সাক্ষৎ করতে পারেন তিনি। দেখা করার জন্য সময় চেয়েছেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের।
তৃণমূল সূত্রের খবর, আগামী বুধবার (২৮ জুলাই) প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে সাক্ষাৎ হতে পারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যের। সাক্ষাতে বাংলার দাবি-দাওয়া এবং আরও করোনা টিকা পাঠানো নিয়ে সরব হতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী। তৃতীয়বার পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতায় ফেরার পর এটাই মমতার প্রথম দিল্লি সফর। ভবিষ্যত কী? তা তো সময় বলবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৩ ঘণ্টা, ২৬, ২০২১
ভিএস/আরবি