কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গে করোনা সংক্রম কমেছে। তাই রাজ্যে বাকি থাকা ৭ বিধানসভা কেন্দ্র দ্রুত উপনির্বাচন হোক।
বৃহস্পতিবার (২৬ আগস্ট) দিল্লিতে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের দফতরে গিয়ে এমনই দাবি করেছে তৃণমূল কংগ্রেসের পাঁচ সংসদ সদস্যের প্রতিনিধি দল।
তৃণমূলের কংগ্রেসের দাবি, নির্বাচন কমিশনের কাজ হলো ভোট করানো, বাধা দেওয়া নয়। দরকারে পশ্চিমবঙ্গে দু'দফায় ভোট হতে পারে।
তৃণমূলের সংসদ সদস্য সৌগত রায় বলেছেন, ‘বাংলায় কোভিড সংক্রমণ নিম্নগামী। আমরা নির্বাচন কমিশনকে ৭ কেন্দ্রের কোভিড পরিসংখ্যান দিয়েছি। সেখানে করোনা অনেক কম। ফলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ভোটগ্রহণ করা হোক। '
তবে এখনই উপনির্বাচন চায় না পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি। কেন চায় না সে বিষয়ে আট কারণ দেখিয়ে তারা দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে চিঠিও দিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের বক্তব্য, ‘রাজ্যের ৭ বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন বাকি। তবে কোভিড পরিস্থিতিতে উপনির্বাচন করা সঠিক সিদ্ধান্ত নয়। বিজেপির দাবি, রাজ্যে মোটেও করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক নয় তাই এখনই ভোট হওয়া অবাস্তব। ’
তিনি বলেছেন, ‘মমতার সরকার রাজ্যে সরকার যে পরিস্থিতি তৈরি করেছে তা বুঝিয়ে দিচ্ছে উপনির্বাচন হতে পারে না। নইলে কলকাতা করপোরেশনেরও ভোট হতো। রাজ্যে স্কুল-কলেজ, লোকাল ট্রেন বন্ধ। এখানে ব্যবসা-বাণিজ্যও স্বাভাবিকভাবে হচ্ছে না। তাই লোকের উপার্জন নেই। তাহলে কীভাবে নির্বাচন হবে? এখানে এখনই নির্বাচন হওয়ার পরিবেশই নেই। ’
বিজেপির রাজ্য সভাপতির কথায়, ‘উপনির্বাচন করার জন্য পশ্চিমবঙ্গে কোভিড সংখ্যা কমিয়ে দেখাচ্ছে। না হলে কেন লোকাল ট্রেন চলছে না? কেনো করপোরেশন ভোট হচ্ছে না? তাই পরিস্থিতি আগে স্বাভাবিক হোক। তারপর হোক উপনির্বাচন। তবে সাংবিধানিক শর্ত মেনে ৬ মাসের মধ্যে নির্বাচিত হয়ে আসতে হবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। সে প্রশ্নে দিলীপ ঘোষ বলেছেন, কাউকে মুখ্যমন্ত্রী থাকতে হবে, সেজন্য নির্বাচন করে বাকিদের জীবন ঝুঁকিতে ফেলাকে সমর্থন করি না। আমরা এখনই উপনির্বাচন চাই না। উপযুক্ত পরিবেশ নেই। ’
উল্লেখ্য, পশ্চিমবঙ্গে একুশের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস নিরঙ্কুশ ক্ষমতা নিয়ে তৃতীয়বারের জন্য রাজ্যের শাসন ক্ষমতা পেলেও দলের সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নন্দীগ্রামে পরাজিত হয়েছিলেন। তার এ মুখ্যমন্ত্রী পদ টিকিয়ে রাখতে আগামী ৬ মাসের মধ্যে কোনো একটি কেন্দ্র থেকে নির্বাচনে জিতে আসতে হবে। অর্থাৎ সেই মেয়াদ শেষ হচ্ছে ২ নভেম্বর। ফলে মমতার দল চাইছে যত দ্রুত সম্ভব উপনির্বাচন হয়ে যাক।
তবে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারতীয় সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচনের মেয়াদ শেষ হলেও তাতেও মমতার ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নেই। মেয়াদ শেষ হওয়ার কয়েক মুহূর্ত আগে রাজভবনে পদত্যাগ দিয়ে ফের একবার আগামী ছয় মাসের জন্য মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারের দায়িত্ব পেতে পারেন। ফলের নির্বাচনের আগে কোনোমতেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মুখ্যমন্ত্রীর আসন নিয়ে চিন্তিত হওয়ার কারণ নেই। তাই উপনির্বাচন কোন সময় হবে তার দায়ভার জাতীয় নির্বাচন কমিশনের।
বাংলাদেশ সময়: ১১১৫ ঘণ্টা, আগস্ট ২৭, ২০২১
ভিএস/ওএইচ/