কলকাতা: নারী নির্যাতন, দলিত ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর অত্যাচার, আইন-শৃঙ্খলার অবনতি—এসব নেতিবাচক বিষয়ে ভারতে শীর্ষে রয়েছে উত্তরপ্রদেশ। বছর শেষ হলেই রাজ্যটিতে অনুষ্ঠিত হবে বিধানসভা নির্বাচন।
বিজেপি শাসিত উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ রোববার (১৪ নভেম্বর) এক ভাষণে বলেছেন, “আসল সত্যি হলো—চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের কাছে যুদ্ধে হেরে গিয়েছিলেন গ্রিক সম্রাট আলেকজান্ডার। সেই ইতিহাস পড়ানো হয় না। ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছে। ইতিহাস চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যকে মহান বলে না, আলেকজান্ডারকে মহান বলে; যিনি চন্দ্রগুপ্তের কাছে হেরে গিয়েছিলেন। ”
ঐতিহাসিক সত্য হলো—আলেকজান্ডার যখন ভারতবর্ষ থেকে বহু দূরে মারা যান, সে সময় চন্দ্রগুপ্ত ছিলেন নাবালক। আলেকজান্ডারের মৃত্যুর বেশ কয়েক বছর পরে তার সেনাপতি সেলুকাসকে যুদ্ধে হারিয়েছিলেন চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য।
ফলে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের এমন বক্তব্য শুনে ইতিহাসের শিক্ষক থেকে শিক্ষার্থী, এমনকি ইতিহাসের সাধারণ জ্ঞান থাকা লোকেরাও চমকে উঠেছেন। উত্তরপ্রদেশের বিরোধী রাজনীতিকদের মতে, এটা যোগীর গিমিক! ইচ্ছা করেই মিথ্যা ইতিহাস প্রচার করছেন তিনি। হিন্দু রাজা হিসেবে চন্দ্রগুপ্তকে প্রাধান্য দিতে গিয়ে সরাসরি আলেকজান্ডারের সঙ্গে চন্দ্রগুপ্তের যুদ্ধ বাঁধিয়ে দিয়েছেন।
পশ্চিমবঙ্গের বামনেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, বিভাজন করে যুদ্ধ বাঁধানোই তাদের কাজ। কখনো সংখ্যালঘুদের ওপর, কখনো দলিত আদিবাসীদের ওপর। উত্তরপ্রদেশের উন্নতি হয়েছে, এমন কোনো বিষয় কি তিনি সামনে আনতে পারবেন? শিক্ষা, স্বাস্থ্য, আইন-শৃঙ্খলা, কর্মসংস্থানের মতো জরুরি বিষয় নিয়ে কথা বলতে গেলে মুখ পুড়বে। আরএসএস বহুদিন ধরেই ভারতের ইতিহাসকে বিকৃত করার চেষ্টা চালাচ্ছে। ইতিহাসকে হিন্দুত্বকরণের চেষ্টা চালাচ্ছে। তারই ফল এই রকম বিকৃত ইতিহাস। যোগী আদিত্যনাথও আরএসএসের ইশারায় মিথ্যা ইতিহাস রচনা করছেন। এসব মেরুকরণের রাজনীতি শুধু ভোটের জন্য।
বাংলাদেশ সময়: ১৫১৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৫, ২০২১
ভিএস/এমজেএফ