কলকাতা: জলাশয়ে ভাসমান এক অবাঞ্ছিত জলজ উদ্ভিদ কচুরিপানা। আনাচে কানাচে ছড়িয়ে থাকা রাশি রাশি এই জলজ উদ্ভিদ গ্রামবাংলায় অনেকেই শুকিয়ে জ্বালানির কাজে ব্যবহার করেন।
বনগাঁ শহরের মধ্য দিয়ে বইছে ইছামতী নদী। স্রোত হারিয়ে এখন তা বদ্ধ জলাশয়ে পরিণত হয়েছে। পানি আর চোখেই পড়বে না! কচুরিপানায় ঠাসা। তাতে ক্রমশ বাড়ছে দূষণ। বনগাঁর বাসিন্দারা বহুবার নদী সংস্কারের দাবি তুলেছেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে কয়েকবার কচুরিপানা তোলা হয়েছে। কিন্তু আবার জন্মায়।
তবে কচুরিপানা এখন শিল্পে পরিণত হতেই নিয়মিত তোলা হচ্ছে এই জলজ উদ্ভিদ। নদী থেকে কচুরিপানা তুলে রোদে শুকনোর পর এক বিশেষ পদ্ধতিতে তার প্রক্রিয়াকরণ হচ্ছে। তারপর মেশিনের সাহায্যে তৈরি করা হচ্ছে তন্তু জাতীয় উপকরণ। সেগুলি হাত বুননে তৈরি হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের সরঞ্জাম।
আপাতত বনগাঁ পৌরসভার ২১টি ওয়ার্ডের ৬০০ নারী এই প্রশিক্ষণে অংশ নিয়েছেন। আগ্রহ দেখাচ্ছেন অনেকেই। স্বল্প সময়ের প্রশিক্ষণে, সেই সব নারীদের তৈরি ব্যাগ, টুপি, ফুলের টব, ফলের পাত্র, পাপোশ, গৃহসজ্জার সরঞ্জাম যাবে মহারাষ্ট এবং দুবাইয়ে। উত্তর ২৪পরগণার বনগাঁয় নারীরা এই কাজের প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন।
প্রশিক্ষণ নিতে আসা এক নারী বলেন, বিনামূল্যে নতুন ধরনের কাজ শিখছি। আগে আমরা সংসারের কাজ শেষ করার পর বসে থাকতাম। এখন প্রশিক্ষণ নিয়ে কাজটা করতে পারছি। আমরা সবাই এই কাজ শিখে আয় করার বিষয়ে আশাবাদী। এর সাথে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার পাচ্ছি। এখন আর হাত খরচের জন্য পরিবারের ওপর নির্ভর করতে হয় না। নিজেদের খরচ নিজেরাই বহন করতে পারছি।
বনগাঁ পৌরসভার চেয়ারম্যান গোপাল শেঠ বলেন, এসব সরঞ্জাম বানানোর পাশাপাশি কচুরিপানা দিয়ে তৈরি হচ্ছে জৈব সার। সেই কাজেও বহু নারী স্বনির্ভর হচ্ছেন। নদীও পরিষ্কার হচ্ছে। রাজ্য সরকারও সহযোগিতা করছে। আগামীতে রাজ্যের বিভিন্ন জেলার প্রান্তিক নারীদের এই উদ্যোগে যুক্ত করতে চায় মমতার সরকার।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৬ ঘণ্টা, জুন ১৭, ২০২২
ভিএস/এমজেএফ