তাবৎ বিশ্বে সব কার্যক্রমই এখন অনলাইনমুখী। আর এখানে দাপটের সঙ্গে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করছে অনলাইন সংবাদমাধ্যমগুলো।
এমন উপলব্ধি থেকেই ফেসবুকের জনপ্রিয় ফিচার নিউজ ফিড অপশনকে ঢেলে সাজানোর আনুষ্ঠানিক ঘোঘণা দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। পাঠকের সনিয়ন্ত্রত সংবাদমাধ্যমকেই এখানে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে ফেসবুকের সিইও মার্ক জুকাবার্গ জানান, নতুন এ পরিবর্তন একটি পূর্ণাঙ্গ অনলাইন সংবাদমাধ্যমেরই চেহারা নেবে। তবে এর লেখক আর পাঠক হবেন ফেসবুক গ্রাহকেরা। এ সময়ে ছবি আর ভিডিওর বিনিময়ের চাহিদা সবচেয়ে বেশি। তাই এটি নতুন ধারার সংবাদমাধ্যম হবে। যেখানে ই-কনটেন্টের চাহিদা সবচেয়ে বেশি।
এ সময়ে ফেসবুকে বন্ধু এবং পরিবারের স্বজনেরা নিজেদের মধ্যে তথ্য, ছবি আর ভিডিও বিনিময়ে সবচেয়ে বেশি সময় ব্যয় করেন। শুধু সময় নয়, আগ্রহ এ খাতেই বেশি। এখানে অনলাইন বিজ্ঞাপনী প্রচার ও প্রসার দুটোই বাড়ছে। এখানে সামাজিক ব্যবসার নতুন মডেলও তৈরি করছে অনলাইন সংবাদমাধ্যম।
এ ছাড়াও অনলাইনে মিউজিক আর খেলার খবর দারুণ জনপ্রিয় হচ্ছে। অনলাইন সংবাদমাধ্যমগুলো আসলে সামাজিক যোগাযোগ আর তথ্য বিনিময়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় মাধ্যম হয়ে উঠছে। সামাজিক পরিবর্তনের প্রতিটি বিষয়েও এখন অনলাইন সংবাদমাধ্যমের আলোচ্য বিষয়। পাঠকেরাও এসব জীবনমান পরিবর্তনের তথ্য অনলাইনে দেখার উৎকণ্ঠায় থাকেন।
ইন্টারনেট এখন শুধু ডেস্কটপে সীমাবদ্ধ নেই। ছড়িয়েছে ল্যাপটপ, স্মার্টফোন আর ট্যাবের খুদে গন্ডিতে। এসব কিছুকে চলমান তথ্যমাধ্যম বলা হচ্ছে। ফলে অনলাইন সংবাদমাধ্যমের জনপ্রিয়তায় চলে আসছে শীর্ষে।
এরই মধ্যে নিউজ উইক, টাইম, নিউ ইয়র্ক টাইমসের মতো বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় এবং দাপুটে প্রিন্ট সংবাদমাধ্যম অনেকটা হুট করেই অনলাইন সংবাদমাদ্যমের পথ বেছে নিয়েছেন। একে সামাজিক পাঠক পরিবর্তনের ইঙ্গিত হিসেবেও দেখছেন গণমাধ্যম বিশ্লেষকেরা।
সাধারণত সংবাদমাধ্যমে সম্পাদকেরা নির্ধারণ করেন প্রথম পৃষ্ঠার কোন শীর্ষ সংবাদগুলো স্থান পাবে। কিন্তু ফেসবুকের সামাজিক সংবাদমাধ্যমের পাঠকেরা নিজেরাই হবেন সম্পাদক। বিশ্বের অন্যতম সিইও মার্ক জুকারবার্গও এ সত্য অনুধাবন করেছেন।
নতুন এ ফেসবুক নিউজ ফিড হবে মূলত অনলাইন সংবাদমাধ্যমের গতিশীল চেহারা। এদিকে স্মার্টফোনে সহজেই যে কোনো ছবি আর ভিডিও তুলে তা সরাসরি সামাজিকমাধ্যমে পোস্ট করা যায় বলে এ মাধ্যমের প্রতি অনলাইন ভক্তদের আগ্রহ সবচেয়ে বেশি।
এ সময়ে সংবাদের অর্ধেকটা জুড়েই তাৎক্ষণিক ঘটনাচিত্রের ছবি আর ভিডিওর জনপ্রিয়তা শীর্ষে আছে। কিন্তু ২০১১ সালে এ চাহিদা ছিল ২৫ ভাগে। জুকারবার্গ এমন তথ্যচিত্রই তুলে ধরেছেন।
এদিকে পিউ রিসার্চ সেন্টারের ইন্টারনেট অ্যান্ড আমেরিকান লাইফ প্রজেক্টের গবেষণায় উঠে এসেছে ফেসবুকে ৬১ ভাগ ভোক্তা এখন একঘেয়েমি আর জীবনের সঙ্গে অপ্রাসঙ্গিক তথ্য এবং খবরের প্রতি একবারেই আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন।
অনলাইন পাঠকেরা এখন জীবন ঘনিষ্ট সংবাদ, তথ্য আর ছবির প্রতি বিশেষ আগ্রহী। এ মুহুর্তে সামাজিক গণমাধ্যমে নিয়মিত পাঠকের সংখা ১০০ কোটি ছাড়িয়ে গেছে।
এসব পাঠককে সামাজিক সংবাদমাধ্যমের অংশ করে তুলতে পারলে ব্যবসা, বিজ্ঞাপন আর সামাজিক জীবন মানোন্নয়নে অভূতপূর্ব সাফল্য আনা সম্ভব। আর এমন চর্চাই এখন অনলাইনজুড়ে মুখর। এ সত্য নিয়ে ফেসবুকের সিইও মার্ক জুকারবার্গ এখন ঘটা করেই নতুন অবয়ব তৈরি করছে সামাজিক সংবাদমাধ্যমের ফেসবুক।
বাংলাদেশ সময় ১৮১৯ ঘণ্টা, মার্চ ৯, ২০১৩