স্মার্টফোনের উন্মাদনায় নতুন উদ্দীপক এখন গ্যালাক্সি এস৪। এ মডেল নিয়ে জল্পনা-কল্পনা থাকলেও স্যামসাং নির্ধারিত সময়েই একেই দর্শনার্থীদের সামনে উপস্থাপন করেছে।
অ্যানড্রইড সংস্করণের সবশেষ জেলি বিন অপারেটিং সিস্টেম আছে এ ফোনে। আইফোন, এইচটিসি ওয়ান, লুমিয়া ৯২০ এবং সনি এক্সপেরিয়া জেড স্মার্টফোনের কাতারে নিজের উপস্থিতির শক্ত জানান দিল গ্যালাক্সি এস৪।
আসছে এপ্রিলেই বিশ্বব্যাপী এ স্মার্টফোনের বিপণন শুরু হবে। আর দামের হিসাবে সম্ভাব্য দাম ৪০ হাজার ভারতীয় রুপি। তবে দাম আর চূড়ান্ত বিপণন নিয়ে স্যামসাং কোনো আভাসই দেয়নি।
এ স্মার্টফোন প্রসঙ্গে স্যামসাং ইলেকট্রনিক্সের প্রধান জে কে শিন বলেন, জীবনধর্মী পণ্য তৈরিতেই স্যামসাং কাজ করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে। শুধু একটি স্মার্টফোনই প্রতিদিনের জীবনের হালচিত্র বদলে দিতে পারে তার নমুনা গ্যালাক্সি এস৪ মডেলেই পাওয়া যাবে।
একে ‘লাইফ কম্পানিওন’ হিসেবে ভোক্তাদের সামনে তুলে ধরা হচ্ছে। সিঙ্গাপুর এবং ভারতের বাজার দিয়েই এশিয়ায় প্রবেশ করবে প্রথম তালিকার গ্যালাক্সি এস৪।
এ মুহূর্তে ভারতের বাজারের হিসাবে গ্যালাক্সি এস৩ মডেল ২৮ হাজার এবং নোট২ ৩৪ হাজারে বিক্রি হচ্ছে। এ কাতারে গ্যালাক্সি এস৪ মডেলের সম্ভাব্য দাম হতে পারে ৪০ হাজার রুপি।
অ্যানড্রইড ৪.২ সংস্করণ মোবাইল অপারেটিং এবং সবচেয়ে নতুনত্ব এসেছে টাচউইজ ইউজার ইন্টারফেসে। এ বিশেষ ফিচারের মাধ্যমে কোনো স্পর্শ ছাড়াই শুধু হাত আর চোখের ইশারা দিয়েই প্রয়োজনীয় সব কাজই করা সম্ভব।
এ ছাড়াও চলমান ভিডিও কিংবা ওয়েব পেজের পৃষ্ঠা পরিবর্তনে শুধু চোখ দিয়েই ছবি স্থির এবং পাতা উল্টানো যাবে সহজেই। একে স্মার্ট ফিচার হিসেবে ভোক্তাদের সামনে তুলে ধরছে স্যামসাং।
এ ছাড়াও ভিডিওচিত্র সম্প্রচারে আছে ডুয়্যাল মুড। ফলে সামনে এবং পেছনের যে কোনো ফোকাসেই ভিডিও ধারণ করার সুবিধা উপভোগ করা যাবে।
গ্যালাক্সি এস৪ মডেলের কারিগরি বৈশিষ্ট্যের মধ্যে আছে এক্সিনোস ৫৪১০ প্রসেসর। এটি ৮টি চ্যানেলে এ ফোনকে পরিচালিত করে থাকে। গতি ১.৮ গিগাহার্টজ। ২ জিবি ডিডিআরথ্রি র্যাম। মূল পর্দা ৪.৯৯ ইঞ্চি। সুপার অ্যামোলেড ডিসপ্লে। ফুল এইচডি (১৯২০ বাই ১০৮০ পিক্সেল) রেজ্যুলেশন। বাড়তি পাওয়া ১৩ মেগাপিক্সেল ক্যামেরা।
স্টোরেজের হিসাবে ৩টি ভিন্ন দামে বাজারে আসছে গ্যালাক্সি এস৩। এ তালিকায় আছে ১৬, ৩২ এবং ৬৪ জিবির সংস্করণ। অনেকটা অ্যাপলের বিপণন প্রক্রিয়াকে এখানে অনুসরণ করা হয়েছে বলে বাজার বিশ্লেষকেরা তাৎক্ষণিক অভিমত দিয়েছেন।
এদিকে ব্যাটারির ধারণক্ষমতা ২৬০০ এমএএইচ। ওজন ১৩০ গ্রাম। বৈশিষ্ট্যগুণ আর দামের পরিসংখ্যানে আইফোন ৫ মডেলের শক্ত প্রতিপক্ষ হবে গ্যালাক্সি এস৪। বাজার পর্যবেক্ষকেরা বলছেন, আইফোন ৫ মডেলের প্রতিযোগিতায় স্যামসাং এ স্মার্টফোন বাজারে এনেছে।
গত জানুয়ারিতে প্রকাশিত হিসাবে মতে, স্যামসাং এস৩ শুরুর ছয় মাসেই ৪ কোটি ইউনিট বিক্রি হয়েছে। একই সময়ে গ্যালাক্সি এস সিরিজ বিক্রি হয় ১০ কোটি ইউনিট। স্যামসাং দৃঢ় আশাবাদে বলেছে, আগের সব রেকর্ডকেই পেছনে ফেলবে এস৪।
প্রসঙ্গত, ২০১২ সাল পরিসংখ্যান বলছে স্মার্টফোনের বাজারে শীর্ষে আসা স্যামসাং ৩০ ভাগ আর অ্যাপল ১৯ ভাগ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে। কিন্তু রাজস্ব আর মুনাফার অঙ্কে অ্যাপল এখনও স্যামসাংকে দাবিয়েই রেখেছে।
পুরোনো রেকর্ড, জনপ্রিয়তা, স্মার্ট ফিচার আর দাম এসব সমীকরণে বাজার মেতে থাকলেও স্মার্টফোন ভক্তদের কাছে সুফল প্রাপ্তিই আসল। তাই শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে জয়টা কিন্তু ভোক্তা অনুকূলেই পৌঁছতে শুরু করেছে। অপেক্ষা এখন তাই পুরো গ্যালাক্সি এস৪ হাতে আসার।
বাংলাদেশ সময় ১৪২৫ ঘণ্টা, মার্চ ১৬, ২০১৩