ঢাকা ও সিলেটে ই-বাণিজ্য প্রদর্শনীর পর এবার এ আয়োজন দেশের বাইরে করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আসছে জুলাই মাসে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশ হাইকমিশন ও মাসিক কমপিউটার জগৎ যুক্তরাজ্যে এ প্রদর্শনীর প্রস্তুতি নিচ্ছে।
বৃহস্পতিবার ২ মে প্রদর্শনীর আয়োজন সম্পর্কে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সভায় এসব তথ্য জানান আইসিটি সচিব নজরুল ইসলাম খান।
এ সময় তিনি বলেন, ই-বাণিজ্যে বাংলাদেশের যাত্রা অনেক আগে হলেও অগ্রগতি খুবই কম। বিশ্বের অন্য সব দেশের তুলনায় এ খাতের অগ্রগতি খুবই ধীরগতির। এর মূল কারণ হচ্ছে ই-বাণিজ্য সম্পর্কে জনসচেতনতার অভাব। আর এ সচেতনতা সৃষ্টি করতেই ই-বাণিজ্য প্রদর্শনীর আয়োজন করা হচ্ছে।
যুক্তরাজ্যের মোট জনসংখ্যার প্রায় ০.৫ ভাগ বাংলাদেশি। প্রতিনিয়ত তারা বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন পণ্য কিনে নিয়ে যান এবং প্রিয়জনকে উপহার সামগ্রী পাঠান। তাদেরকে ই-বাণিজ্যে যুক্ত করতে পারলে এ খাত সুসম্প্রসারিত হবে।
যুক্তরাজ্যের এ প্রদর্শনীর সঙ্গে একই সময়ে চট্টগ্রামে ই-বাণিজ্য প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হবে। এ ছাড়া পর্যায়ক্রমে দেশের বিভাগীয় শহরগুলোতে ই-বাণিজ্য প্রদর্শনীর পর জেলা শহরগুলোতে ই-বাণিজ্য প্রদর্শনীর আয়োজন করা হবে। এ সময়ের মধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে অনুষ্ঠিত ডিজিটাল উদ্ভাবনী প্রদর্শনী ই-বাণিজ্যকে যুক্ত করা হবে।
এ সভায় উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সহকারি সচিব মাহবুব হাসান শাহীন, যুগ্মসচিব গাজী মিজানুর রহমান, অতিরিক্ত সচিব কামালউদ্দিন আহমেদ, বিসিএস নির্বাহী সভাপতি মইনুল ইসলাম, কমপিউটর জগৎ এর কারিগরি সম্পাদক আবদুল ওয়াহেদ তমাল, বিসিসি নির্বাহী পরিচালক এসএম আশফাক হুসেন, ডিসিসিআই কর্মকর্তা সৈয়দ আলমাস কবির এবং সিটিও ফোরামের কোষাধাক্ষ্য সুকান্ত চক্রবর্তী।
এ প্রসঙ্গে আবদুল ওয়াহেদ তমাল বলেন, আগের আয়োজনগুলোর লক্ষ্য ছিল ই-বাণিজ্য সাইটগুলোকে প্রমোট করা। তবে পরবর্তী প্রদর্শনীতে নতুন উদ্যোক্তা আসতে পারে এ বিষয়েও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
ব্যাংকিং, ট্যুরিজম, ফুড ও বেভারেজ, হস্তশিল্প, সফটওয়্যার ও হার্ডওয়্যার, ইলেকট্রনিক্স, বিউটি পার্লার ছাড়াও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলো ই-বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার আগ্রহ জানিয়েছে। তাই লন্ডনে অনুষ্ঠিত এ প্রদর্শনীতে এ ধরনের প্রতিষ্ঠানগুলোর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হবে।
সভায় জানানো হয়, যুক্তরাজ্যে ই-বাণিজ্যের সুবিশাল বাজার আছে। তবে সেখানকার প্রবাসী বাঙ্গালিরা কিভাবে সেখানেই বসে প্রিয়জনের জন্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য এবং উপহার সামগ্রী পাঠাতে পারে এ বিষয়ে অনেকেই জানেন না।
বাংলাদেশে পেমেন্ট গেটওয়ে চালু হওয়ার এ খাতে অনেক দ্রুতগতিতে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার সুযোগ এসেছে। এ লক্ষ্যেই বিদেশে ই-বাণিজ্য প্রদর্শনীকে সম্প্রসারণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। যুক্তরাজ্যের বাংলাদেশ হাইকমিশনের সঙ্গে প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে।
অচিরেই ব্রিটিশ হাই-কমিশনের সঙ্গে আলোচনা করে প্রদর্শনীর আয়োজনের স্থান ও দিনক্ষণ নির্ধারণ করা যাবে। তবে জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে এ প্রদর্শনীর সম্ভাব্যতা যাচাই করা হবে।
এ সভায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, অর্থ মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, কমপিউটার জগৎ, বেসিস, বিসিসি, বিসিএস, ঢাকা চেম্বার অব কমার্স ছাড়াও সম্পর্কিত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের প্রতিনিধিদের নিয়ে ‘আন্তর্জাতিক ই-কমার্স মেলা আয়োজক কমিটি’ গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বাংলাদেশ সময় ১৯৫৩ ঘণ্টা, মে ২, ২০১৩
সম্পাদনা: সাব্বিন হাসান, আইসিটি এডিটর