বার্সেলোনা, স্পেন থেকে: ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান মার্ক জুকারবার্গ সোমবার বার্সেলোনার ওয়ার্ল্ড মোবাইল কংগ্রেসে লাইভ কী নোট সেশনে বক্তব্য রাখবেন। তার এই বক্তৃতা শুনতে শতশত প্রযুক্তিপ্রেমী ফিরা বার্সেলোনার চার নম্বর হলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে অপেক্ষা করছেন।
তবে দুঃখের বিষয় অপেক্ষামান প্রযুক্তিপ্রেমীদের অনেকেই তার বক্তৃতা সরাসরি শুনতে পারবেন না। কারণ এই হলে আসন সংখ্যা ১৫০০। অথচ এর কয়েকগুণ বেশি চার নম্বর হলের বাইরে অপেক্ষা করছেন। আয়োজকদের একজন কামারা জোভার বাংলানিউজকে বলেন, আসনের বেশি একজনও হলে ঢুকতে দেওয়া সম্ভব হবে না। আসন শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে হল রুমটি বন্ধ করে দেওয়া হবে।
তবে যারা সরাসরি বক্তৃতা শুনতে পারবেন না, তাদের বাইরে বড় পর্দার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তারা দুধের সাধ অন্তত ঘোল দিয়ে মেটানোর সুযোগ পাবেন না। এই সেশনে জুকারবার্গ ছাড়াও খ্যাতনামা প্রযুক্তি সাংবাদিক ও লেখক ডেভিড কারপ্যাট্রিকও বক্তৃতা রাখবেন।
এদিকে, সোমবার বার্সেলোনার সময় সকাল ৯টায় চার দিনব্যাপী মোবাইল ওয়ার্ল্ড কংগ্রেসের উদ্বোধন হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রথমে বক্তব্য রাখেন টেলিনর গ্রুপের প্রেসিডেন্ট ফ্রেডরিক বাকসাস। বাকসাস ছাড়াও সিংটেলের গ্রুপ সিইও চুয়া সক কং, আরব আমিরাতের মোবাইল অপারেটর ইতিসালাত’র সিইও আবদুল করিম জুলফার ও আমেরিকা টেলিকমের সিইও ড্যানিয়েল হাজ বক্তব্য রাখেন।
এই পর্বে মডারেটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন গ্লোবাল সিস্টেম ফর মোবাইল অ্যাসোসিয়েশন (জিএসএমএ) মহাপরিচালক অ্যানি বোভারত।
প্রযুক্তি বিশ্বের বৃহৎ আয়োজন এবং মোবাইল বিশ্বের সর্ববৃহৎ আয়োজন মোবাইল ওয়ার্ল্ড কংগ্রেস ২০১৪ নিয়ে মুখরিত ফুটবল তারকা লায়নেল মেসির শহর বার্সেলোনা।
বিশ্বখ্যাত সব প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের প্রধানরা মোবাইল কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন। চার দিনব্যাপী এই আয়োজনের বিভিন্ন সেশনে তারা তাদের বক্তব্য উপস্থাপন করবেন।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আগত এসব রথী-মহারথীদের মধ্যে মধ্যে রয়েছেন ফেসবুকের ফাউন্ডার ও সিইও মার্ক জুকারবার্গ, আইবিএম’র সিইও ভার্জিনিয়া রমেটি, ফোর্ড মোটর কোম্পানির প্রেসিডেন্ট (ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকা) স্টিফেন টি ওডেল প্রমুখ।
মোবাইল ওয়ার্ল্ড কংগ্রেসকে কেন্দ্র করে প্রায় ৮০ হাজার বিদেশি অতিথির পদচারণায় মুখরিত বার্সেলোনা। শুধু অতিথি নয়, পুরো অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে ব্যস্ততা বেড়েছে এখানকার অধিবাসীদের মধ্যে।
বার্সেলোনার বাসিন্দাদের কাছে ফুটবল হচ্ছে ভালোবাসা আর মোবাইল ওয়ার্ল্ড কংগ্রেস তাদের জন্য গর্বের একটি বিষয়। ২০০৬ সাল থেকে বার্সেলোনা প্রযুক্তি বিশ্বের সর্ববৃহৎ এই আয়োজনটি চমৎকারভাবে সম্পন্ন করে আসছে। এজন্য এরই মধ্যে খ্যাতি কুড়িয়েছে সাগর পাড়ের এই ব্যস্ত নগরী।
বিশ্ব মোবাইল বাজারের রাজধানী হিসেবে খ্যাত বার্সেলোনায় চারদিনব্যাপী এই আয়োজনে বাংলাদেশসহ বিশ্বের ২২০টি দেশের কয়েক হাজার প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ, বিভিন্ন দেশের অপারেটর, মোবাইল হ্যান্ডসেট নির্মাতা প্রতিষ্ঠান, কনটেন্ট প্রোভাইডারসহ মোবাইল শিল্প সংশ্লিষ্টরা অংশ নিয়েছেন।
বিশ্বব্যাপী মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীদের নতুন প্রযুক্তি হাতের নাগালে নিয়ে আসতে বিভিন্ন সুযোগ নিয়ে এ মেলার আয়োজন করা হয়েছে। বিভিন্ন দেশের অপারেটর এবং প্রযুক্তি-পণ্য প্রস্তুতকারীদের পুরস্কার দেওয়া হবে। সেরা মোবাইল সেবা প্রদানকারী, সেরা মোবাইল হ্যান্ডসেট ও ডিভাইস, সেরা অ্যাপস, সেরা মোবাইল প্রযুক্তিসহ ৮টি ক্যাটাগরিতে এই পুরস্কার প্রদান করা হবে। বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হবে মঙ্গলবার।
জিএসএমএ'র পক্ষ থেকে স্পেনের বার্সেলোনাকে ঘোষণা দেওয়া হয় বিশ্ব মোবাইল বাজারের রাজধানী হিসেবে।
নতুন নতুন স্মার্টফোন, ট্যাবলেট পিসি, হাইব্রিড ডিভাইস আর নতুন ধরনের মোবাইল অপারেটিং সিস্টেম, প্রযুক্তির উপস্থিতিতে জমজমাট হয়ে উঠবে এই আয়োজন। ৭০,৫০০ বর্গফুট এলাকা জুড়ে আয়োজিত মেলায় প্রযুক্তি বিশ্বের কাছে নানান চমক নিয়ে হাজির হচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা। বিশাল এলাকা জুড়ে দেড় হাজারের মতো স্টল নিয়ে মেলার আয়োজন করা হয়েছে।
সারাবিশ্বের বড় বড় সব মোবাইল অপারেটর, নির্মাতারা অংশ নিচ্ছেন এ উৎসবে। অন্যবারের মতো এবারের আয়োজনে থাকছে নতুন নতুন স্মার্টফোন, ট্যাবলেট পিসিসহ অন্যান্য মোবাইল ডিভাইস এবং অ্যাকসেসরিজ। নতুন অনেক প্রযুক্তিও প্রদর্শিত হয়েছে এই আয়োজনে। চমকজাগানো এই প্রদর্শনীতে অংশ নিয়েছে বিশ্বের বড় বড় প্রায় সব মোবাইল নির্মাতাই।
**বার্সেলোনায় ইন্টারনেট ও ডাটা সার্ভিসে গুরুত্বারোপ
বাংলাদেশ সময়: ০০৩৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০১৪