ঢাকা: হাতিরঝিল দেখতে যাননি এমন কোনো ঢাকাবাসীকে খুঁজে পাওয়া যাবে না। শুধু ঢাকাবাসী নয়, দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকেও মানুষ আসেন হাতিরঝিল দেখতে।
কেউবা হাতিরঝিলকে নিয়ে বাস্তব থেকে অনেক দূরে স্বপ্নের জাল বুনে আর প্রত্যয়ে অহঙ্কারে আরও দীপ্তিতে উজ্জ্বল হয়। কারো কাছে এই ভাবনাও উঁকি দেয়, নিজস্ব উদ্যোগে হাতিরঝিল যখন বানাতে পেরেছি, নিজস্ব প্রযুক্তিতে তখন আরো বড় কিছু বানাতে পারব।
তেমনই এক তরুণদল হাতিরঝিলকে নিয়ে স্বপ্নের জাল বুনতে শুরু করে এবং সে স্বপ্ন সবার মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য তারা বানিয়ে ফেলল “হাতিরঝিল: ড্রিম বিগিনস” নামে একটি কম্পিউটার ভিডিও গেম সিরিজ।
আইসিটি মিনিস্ত্রি’র সহযোগিতায় সম্প্রতি এক জমকালো অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে উদ্বোধন হয়ে গেল এ ভিডিও গেমসের।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন জুনায়েদ আহমেদ পলক এমপি (প্রতিমন্ত্রী তথ্য ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়) এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শামীম আহসান প্রেসিডেন্ট অফ ব্যাসিস ; মোজাম্মেল বাবু, প্রধান সম্পাদক ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক, একাত্তর টিভি।
বিশেষ বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাহবুব জামান প্রাক্তন ব্যাসিস; ড. ওয়াং, প্রকল্প পরিচালক, “We Make Games” এবং গাউসুল আলম শাওন, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, গ্রে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ম্যাসিভস্টার স্টুডিও লিমিটেড এর সিইও এস এম মাহাবুব আলম ।
আমাদের দেশের এক বিশাল সংখ্যক শিশুই বেড়ে উঠে ‘অ্যাংরি বার্ড’ বা ‘ব্যাটেল ফিল্ড’ এর মত গেমস খেলে। এটা যেন সবাই ধরেই নিয়েছে আমাদের শিশুরা বেড়ে উঠবে ‘ডুম’ কম্পিউটার গেমস খেলায় মধ্যবয়সী বা বুড়োরাও কম যান না। এই বাস্তবতাকে সামনে রেখে একদল তরুণ একরাশ স্বপ্ন নিয়ে নিরন্তন কাজ করে যাচ্ছে নতুন করে বাংলাদেশের কম্পিউটার ভিডিও গেমসের ইতিহাস লেখার জন্য।
পুরো গেমসের ডিজাইন করা হয়েছে স্বপ্ন আর বাস্তবতার মিশ্রণে। সভ্যতার বিকাশে আজ যেমন মানুষের দূরদমনীয় গতি মাটিতে, আকাশে ও পানিতে তেমনি “হাতিরঝিল: ড্রিম বিগিনস” গেমসটিও নির্মাণ করা হয়েছে এ তিন উপকরণকে মাথায় রেখে; তথ্য প্রযুক্তির এই যুগে নতুন মাত্রা হিসাবে যোগ হয়েছে স্বপ্ন যা মূল চালকের আসনে বসে আছে।
বিনোদন, রোমাঞ্চকর, ভায়োল্যান্স এ তিনই থাকে কম্পিউটার গেমসের উপজীব্য। পুরো পরিবারকে নিয়ে উপভোগের মত গেমস খুব বেশি খুঁজে পাওয়া যাবে না। হাতিরঝিল এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম উদ্যোগ। পুরো গেমসটি নির্মিত হয়েছে পরিবারের বিনোদনের কথা মাথায় রেখে।
নির্মাতারা জানান হাতিরঝিল কম্পিউটার ভিডিও গেম ছাড়ার পর স্মার্টফোনে খেলার জন্য এর অ্যান্ড্রয়েড সংস্করণও তৈরি করা হবে। আর এর পৃষ্ঠপোষকতা করেছে বাংলাদেশের বহু খ্যাতিসম্পন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানসমূহ।
এখন গবেষণা চলছে গেমস কি করে আমাদের সংস্কৃতি ও ইতিহাস শিক্ষার মাধ্যম হতে পারে।
এ ব্যাপারে গেমস নির্মাতা দলের প্রধান গবেষক এবং ম্যাসিভস্টার স্টুডিও লিমিটেড’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম মাহাবুব আলম জানান তার এক অভিনব কর্মসূচির কথা যার নাম “We Make Games”-যেখানে সারা বাংলাদেশর ৫০০ স্কুল ও কলেজের এক লাখ শিক্ষার্থী গেমস নির্মাণের কলাকৌশল হাতেখড়ি পাবে। তারাই রচনা করবে আগামীর জন্য নতুন ইতিহাস, আর একইসঙ্গে গড়বে নিজেদের ক্যারিয়ার।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৫০ ঘণ্টা, মার্চ ৩১, ২০১৪