ঢাকা: রাজধানীর আগারগাঁওয়ের বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) চলছে চার দিনব্যাপী ‘ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড-২০১৪’। বিস্ময়কর উদ্ভাবনী ও প্রদর্শনী দর্শনার্থীদের অবাক করলেও মেলার সার্বিক অব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙ্গুল তুলেছেন অনেকে।
শুক্রবার তৃতীয় দিনে মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে বিভিন্ন স্টল উৎসাহী দর্শনার্থীদের উচ্ছ্বাস চোখে পড়লেও ব্যবস্থাপনা নিয়ে অনেককে ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা যায়।
অভিযোগ কিংবা ক্ষোভের কারণ প্রত্যক্ষ হবে মেলার প্রবেশপথেই। প্রবেশ পথের ঠিক ওপরেই লেখা ‘ওয়েলকাম টু ফিউচার বাংলাদেশ’। বাংলাদেশের ‘ফিউচার’ নিয়ে কোনো কিছু চিন্তা করার আগেই সারিবদ্ধ হয়ে প্রবেশের ক্ষেত্রে তালগোল পাকিয়ে ফেলতে হবে অনেককে।
প্রবেশপথ দিয়ে ঢুকে প্রথমে সিদ্ধান্ত নিতে হবে, আপনি কোন (বাম-ডান) দিকে যাবেন। মাঝখানে একটি দঁড়ির (ডিভাইডার) মাধ্যমে তা ভাগ করে দেওয়া হলেও কোন প্রান্ত দিয়ে প্রবেশ করলে আপনি মূল মেলায় ঢুকতে পাবেন, আর কোন প্রান্ত দিয়ে প্রবেশ করলে আপনি সেমিনার হলে ঢুকতে পাবেন সে বিষয়ে নেই কোনো নির্দেশনা।
এখানকার ঘুরপাক কোনো মতে পার হয়ে গেলেও মূল মেলা প্রাঙ্গণে প্রবেশ করেই আবার ধাঁধাঁয় পড়ে যেতে হবে। কারণ কোন ধরনের স্টল পেতে আপনাকে কোন দিকে যেতে হবে সে বিষয়েও এখানে কোনো নির্দেশনা নেই। তো, একপাশ ধরেই পরিদর্শন শুরু করতে হবে!
চার দিনব্যাপী এ মেলার প্রতিদিনই রয়েছে ইনফরমেশন টেকনোলজি (আইটি) সম্বন্ধীয় নানা বিষয়ের ওপর সেমিনার।
বিস্ময়ের ব্যাপার হলো, সেমিনারে প্রবেশের জন্য নিবন্ধনের ব্যবস্থা রাখা হলেও রাখা হয়নি পর্যাপ্ত আসন। এ কারণে অনেককেই দেখা গেছে, মেলা প্রাঙ্গণের স্থাপনায় বসেই নিবন্ধন ফরম পূরণ করতে।
এছাড়া, রোদ-বৃষ্টির এই মৌসুমে নেওয়া হয়নি দর্শনার্থীদের সামান্যতম প্রশান্তির ব্যবস্থাও। এ কারণে শুক্রবার দুপুরে লাইনে দাঁড়িয়ে প্রযুক্তিপ্রেমী অনেককেই তপ্ত রোদে বিরক্তি প্রকাশ করতে দেখা গেছে।
মেলা প্রাঙ্গণে বা মেলা সম্পর্কে কারও কিছু জানার থাকলেও ডিজিটাল মেলার আয়োজকরা সে ধরনের কোনো ব্যবস্থাও করতে পারেননি।
যশোর থেকে আসা প্রযুক্তিবিদ জাহাঙ্গীর কবির মেলার ব্যবস্থানা নিয়ে অভিযোগ করে বাংলানিউজকে বলেন, অন্যদের অবস্থা নিয়ে কথা না-ই বললাম, সরকারি স্টলগুলোতে কোনো তথ্য জানতে চাইলে প্রায় প্রত্যেক স্টল থেকেই একটি করে লিফলেট ধরিয়ে দিয়ে দায় সারা হয়েছে। কাউকে আগ্রহভরে কিছু জানানো তো দূরের কথা, প্রায় সবার উদাসীনতাই ছিল দৃষ্টিকটু।
গত ৪ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ মেলার উদ্বোধন করেন। সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত এ মেলা চলবে ৭ জুন পর্যন্ত।
‘ভবিষ্যতের বাংলাদেশ’ শীর্ষক স্লোগানের এ মেলার আয়োজক ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ এবং বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস)।
মেলায় সহযোগিতা করছে অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) প্রকল্প ও বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি)।
মেলার অংশীদার হিসেবে রয়েছে বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি, ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ, অ্যামটব, বাকা, সিটিও ফোরাম, বিডব্লিউআইট ও বিআইজেএফ।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৫ ঘণ্টা, জুন ০৬, ২০১৪