ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

তথ্যপ্রযুক্তি

দুর্দশায় স্টার, এক্সপ্রেস, গার্ডিয়ান, মিরর, সান

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৪৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২২, ২০১৭
দুর্দশায় স্টার, এক্সপ্রেস, গার্ডিয়ান, মিরর, সান পত্রিকা কি স্টলের তাকে সাজানোর সময় এসে গেছে? ছবি: সংগৃহীত

এক সময়ে বিশ্বজোড়া নাম কুড়ানো ব্রিটিশ পত্রিকাগুলোর এখন করুণ দশা। পত্রিকাগুলো এখন রীতিমতো পাঠকের ‘পৃষ্ঠ প্রদর্শনই’ হজম করে চলেছে। ব্যাপারটা এমন জায়গায় ঠেকছে যে, পত্রিকার দাম কমিয়ে, মানহীন রগরগে ছবি-খবর ছাপিয়েও পাঠক টানা যাচ্ছে না।  

ব্রিটেনের অডিট ব্যুরো অব সার্কুলেশন (এবিসি) ক’দিন আগেই জানিয়েছিল, পত্রিকাগুলোর ছাপা সংস্করণ এখন ঠেস মারা আর রগরগে উপাদানের মানহীন ‍খবরের ‘টোপ’ ফেলেও ধোপে টিকছে না।

এবিসির এই বক্তব্যের সঙ্গে ‘করুণ সুর’ বাজিয়ে প্রভাবশালী দৈনিক গার্ডিয়ানে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন বলছে, ছাপা পত্রিকাগুলো আসলে খাদের কিনারে এসে গেছে।

এর দু’টি জ্বলন্ত নজিরই হচ্ছে- ডেইলি এক্সপ্রেস ও ডেইলি স্টার।  

২০১৫ সালের ডিসেম্বরে ডেইলি এক্সপ্রেস দিনে যতগুলো পত্রিকা বিক্রি করতো, একবছর পর ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে তা  ২ দশমিক ৩ শতাংশ হারে কমেছে। এই ডিসেম্বরে ডেইলি এক্সপ্রেস দিনে বিক্রি করে মোটেই ৩ লাখ ৯১ হাজার কপি।  

আর ডেইলি স্টার দাম ২০ শতাংশ কমিয়েও ধরে রাখতে পারছে না পাঠককে। এক বছরে তাদের পাঠক পড়ে গেছে ২ দশমিক ৫ শতাংশ।  

এই অবস্থায় পাঠক ধরে রাখতে আর ব্যয় কমাতে সংবাদ প্রতিষ্ঠান দু’টির মালিক রিচার্ড ডেসমন্ড শরণাপন্ন হয়েছেন মিডিয়া গ্রুপ ট্রিনিটি মিরর’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) সিমন ফক্সের। ডেসমন্ডের ইচ্ছা ফক্সের সঙ্গে একীভূত হয়ে যদি পত্রিকাটি বাঁচিয়ে রাখা যায়।  

কিন্তু ফক্স কী করবেন? তার ডেইলি মিররের নিজের অবস্থাই তো কাহিল? কেবল কাহিলই নয়, অনলাইনের রাজত্বে সম্প্রতি মিররেই সবচেয়ে বেশি পাঠক খোয়া গেছে। এক বছরে ১১ দশমিক ৭ শতাংশ পাঠক হারিয়েছে ট্যাবলয়েড পত্রিকাটি।

মিরর-এক্সপ্রেস-স্টারই কেবল নয়, দুর্দশার বাজারের ‘নেতৃস্থানীয়’ রঙচঙা খবর আর নগ্নবক্ষার ছবি ছাপানো দৈনিক ট্যাবলয়েড সানেরও অবস্থা বেহাল। তাদের পাঠক পড়ে গেছে ১০ দশমিক ৫ শতাংশ হারে।  
অনলাইনে পাল্লা দিয়ে চললেও ছাপা সংস্করণ নিয়ে বিপদে আছে আরেক দৈনিক ট্যাবলয়েড ডেইলি মেইলও। এই এক বছরে তাদের পাঠক পড়ে গেছে ৬ দশমিক ৭ শতাংশ।

এক বছরে খোদ গার্ডিয়ানের পাঠক খোয়া গেছে ৩ শতাংশ, ডেইলি টেলিগ্রাফের পাঠক কমেছে ৩ দশমিক ৪ শতাংশ।

গার্ডিয়ানের প্রতিবেদন স্পষ্ট করেই বলছে, পত্রিকাওয়ালাদের কপালে এমন ভাঁজ ফেলার প্রধান কারণ অনলাইন নিউজপোর্টালগুলোর তাৎক্ষণিক খবর পৌঁছে দেওয়ার পেশাদারিত্ব। যখনকার ঘটনা তখনই মানুষ অনলাইনে জেনে নেয়। পরে আর পত্রিকা পড়ার প্রয়োজন মনে করছে না। সেজন্যই পত্রিকাগুলোর ছাপা সংস্করণের নুইয়ে পড়ার খবরে আসছে কেবল অনলাইনের জয়ধ্বনি।  

নিউজওয়ার্কস নামে একটি সংস্থার প্রতিবেদন সেই জয়ধ্বনিকে জোরালো করছে আরও। সংস্থাটির মতে, ব্রিটেনে প্রধান সারির যে ছাপা পত্রিকাগুলোর অনলাইন সংস্করণ আছে তারা এই এক বছরে কাগজের পাঠক হারালেও যৌথভাবে পেয়েছে ১৬ শতাংশ বেশি অনলাইন পাঠক। অর্থাৎ তাদের সবার ১৬ শতাংশ অনলাইন পাঠক বেড়েছে। পুরো ডিসেম্বরে পত্রিকাগুলোর অনলাইন পেয়েছে সাড়ে ৩১ মিলিয়ন ইউনিক ভিজিটর (একক পাঠক, যারা সরাসরি অনলাইনে অ্যাকসেস করেছে)।

সুতরাং আসছে দিন তো অনলাইনেরই বটে, নয় কি?

বাংলাদেশ সময়: ১৪৪৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২২, ২০১৭
এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।