জরুরি পরিস্থিতিতে কেবলমাত্র একটি মোবাইল নেটওয়ার্ক সচল থাকলেই যেকোনো মোবাইলে সিম ছাড়াই কল করে সহায়তা পাওয়ার এই উদ্যোগ দুর্যোগে সাড়াদানের ক্ষেত্রে ইতিবাচক পদক্ষেপ মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
ঢাকায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা (ভূমিকম্প) অনুশীলনে বুধবার মাঠ পর্যায়ে প্রশিক্ষণ ও মহড়া ডিজাস্টার রেসপন্স এক্সারসাইজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ (ড্রি) এ পরীক্ষা চালায়।
বিটিআরসির সিনিয়র সহকারী পরিচালক মো. জাকির হোসেন জানান, সিমবিহীন টেলিযোগাযোগ সেবা দুর্যোগকালীন ৯৯৯-এ কল করে জরুরি সেবা পেতে দেশে প্রথমবারের মত সিমবিহীন টেলিযোগাযোগ সেবার পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে।
যেকোনো হ্যান্ডসেটে এই কল করার সুবিধা পাওয়া যাবে জানিয়ে তিনি বলেন, তবে কেবলমাত্র দুর্যোগের সময়েই এ ফিচার সক্রিয় থাকবে।
সিমবিহীন ভয়েস কল পরিচালনায় থাকা বিটিআরসির ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড অপারেশন বিভাগের একজন কর্মকর্তা বাংলানিউজকে বলেন, সিম ছাড়াই হ্যান্ডসেটের ইমার্জেন্সি কলের প্রোপার্টি দিয়ে নেটওয়ার্ক না থাকলেও কল করা যাবে।
ওই কর্মকর্তা বলেন, আমরা হ্যান্ডসেট থেকে সিম খুলে ৯৯৯-এ কল দিয়ে এই পরীক্ষা চালিয়েছি। সিমের উপর নির্ভরতা না থাকায় শুধুমাত্র একটি মোবাইল নেটওয়ার্ক চালু থাকলেই ৯৯৯-এ কল করা যাবে। এক্ষেত্রে মোবাইলে কোনো অ্যাপস বা ইন্টারনেট লাগবে না।
‘আমরা ফিচার ফোন এবং স্মার্টফোন সবগুলোতেই ট্রায়াল করেছি। সব হ্যান্ডসেটেই কল করা সম্ভব হবে তবে ইমার্জেন্সি ফিচার থাকতে হবে। ’
তিনি বলেন, ৯৯৯ ছাড়াও যেকোনো নম্বরেই সিম ছাড়া করা যাবে। সেক্ষেত্রে মোবাইল নেটওয়ার্কে কনফিগার করতে হবে। আমরা ৯৯৯-এ কনফিগার করে কল করেছি। বেশিরভাগ সেটেই ইমার্জেন্সি নম্বর ৯৯৯ কনফিগার করা আছে, কিছু সেটে ৯১১ আছে।
পরীক্ষায় সবগুলো অপারেটর অংশ নেয় জানিয়ে তিনি বলেন, প্রতি অপারেটরে পাঁচটি করে মোবাইলে ট্রায়াল করা হয়। এরমধ্যে স্মার্টফোন এবং ফিচার ফোনও রয়েছে। টেলিটক একটি ফিচার ফোনে ট্রায়াল করেছে।
জরুরি জাতীয় সেবার ৯৯৯ পরিচালনা করছে বাংলাদেশ পুলিশ। বর্তমানে টোল ফ্রি ৯৯৯-এ কল করে পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস, অ্যাম্বুলেন্স সেবা পাওয়া যায়।
বিটিআরসি’র ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড অপারেশন বিভাগ সিমবিহীন কল সেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে কারিগরি দিক থেকে তারা প্রস্তুত রয়েছেন জানিয়ে ওই কর্মকর্তা বলেন, সরকার চাইলেই যেকোনো সময় এটি চালু করা সম্ভব। শুধু নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয়। এই সেবা চালু করতে আনুষঙ্গিক কিছু করতে হবে না।
তবে সবসময় চালু রাখাও ঠিক হবে না জানিয়ে তিনি বলেন, ৯৯৯-এ অনেক ক্ষেত্রেই দেখা গেছে ফেইক কল যায়। ফলে জরুরি মুহূর্তে সাড়া পাওয়া কঠিন হয়ে যাবে। কেবলমাত্র বড় ধরনের দুর্যোগে এই সেবা ব্যবহার করা যেতে পারে।
গত বেশ কিছুদিন ধরেই সিমবিহীন কল করার চেষ্টা করা হচ্ছিলো জানিয়ে ওই কর্মকর্তা বলেন, অবশেষে সেটি সফল হয়েছে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ এবং ইউএস আর্মি প্যাসিফিক এর যৌথ উদ্যোগে এ প্রশিক্ষণ ও মহড়া অনুষ্ঠিত হচ্ছে। গত ২৭ অক্টোবর শুরু হওয়া এ মহড়া শেষ হবে ৩১ অক্টোবর।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান এতে উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩০, ২০১৯
এমআইএইচ/জেডএস