ঢাকা : ২৫ জন ইন্দোনেশিয় গৃহকর্মী সৌদি আরবে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের অপেক্ষায় আছেন। এছাড়া অপর ২২ জন গৃহকর্মীকে ক্ষমার আওতায় দেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
গত শুক্রবার সৌদি আরবের স্থানীয় পত্রিকাগুলো এ খবর জানায়। সৌদি পত্রিকা আরও জানায়, এ ঘটনার সূত্রে আলোচনার জন্য জাকার্তা একটি প্রতিনিধিদল রিয়াদ পাঠাচ্ছে।
ইংরেজি দৈনিক আরব নিউজ জানায়, নানা অপরাধে মৃতুদণ্ডপ্রাপ্ত ২২ নারী গৃহকর্মীকে সৌদি শাসকদের ক্ষমার আওতায় মুক্তি দেওয়া হয়েছে এবং নিজদেশ ইন্দেনেশিয়ায় পাঠানো হয়েছে। এছাড়া মৃত্যুণ্ডপ্রাপ্ত আরও ২৫ নারী রয়েছেন দণ্ড কার্যকরের অপেক্ষায়।
সৌদি আরবে ইন্দোনেশিয় দূতাবাস মুখপাত্র হেন্দ্ররার প্রামুত্তো জানান, এর মধ্যে রিয়াদ প্রদেশে ৬ জন ছাড়া বা ১৯ জন দণ্ডপ্রাপ্ত হয়েছেন দেশটির পশ্চিমাঞ্চলে।
প্রামুত্তো আরও জানান, ওই নারীদের মৃত্যুদণ্ড থেকে বাঁচাতে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনার জন্য জাকার্তা থেকে শনিবার সাত সদস্যের একটি প্রেসিডেন্সিয়াল টাস্ক ফোর্স সৌদি আরবে যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা প্রেসিডেন্সিয়াল টাস্কফোর্সকে সৌদির বিভিন্ন জেল পরিদর্শন করতে দেওয়ার অনুমতি চেয়েও আবেদন করেছি। ’
উল্লেখ্য, সৌদি আরবের বিভিন্ন জেলে বর্তমানে প্রায় ১৭ শ’ ইন্দোনেশিয় বিভিন্ন মেয়াদে কারদণ্ড ভোগ করছে।
সম্প্রতি তেল সমৃদ্ধ দেশটিতে বিদেশি কর্মীদের ওপর দলন-পীড়নের সূত্রে একাধিক নির্যাতন-হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এর জের ধরে সৌদিতে ইন্দোনেশিয় শ্রমিকরা গত বছর থেকে প্রতিবাদমুখর হয়ে ওঠে।
গত জুনে সেখানে নিজদেশের একজন গৃহকর্মীকে শিরোশ্ছেদের প্রতিক্রিয়ায় নিন্দা জানিয়েছিলেন ইন্দোনেশিয় প্রেসিডেন্ট বামবাং ইউধোয়োন্য। বামবাং সৌদি শাসকদের আন্তর্জাতিক সম্পর্কের রীতি-নীতি লঙ্ঘনের দায়েও অভিযুক্ত করেন।
শিরোশ্ছেদে দণ্ড কার্যকর হওয়া ৫৪ বছর বয়সী ওই ইন্দোনেশিয় নারীর নাম রুইয়াতি বিন্তি সাপুবি। তিনি তার সৌদি মনিবকে হত্যা করেছিলেন। ওই ঘটনার জের ধরে জাকার্তা সৌদি আরবে নিযুক্ত তার রাষ্ট্রদূতকে দেশে ডেকে পাঠিয়েছিল শলা-পরামর্শের জন্য।
এছাড়া একই ঘটনার সূত্রে ইন্দোনেশিয়া সৌদি আরবে শ্রমিক পাঠানোও স্থগিত করেছিল। উল্লেখ্য, ওই সময়ে ইন্দোনেশিয়া ও ফিলিপাইন তাদের দেশ থেকে সৌদিতে কর্মী নেওয়ার ব্যাপারে কিছু শর্তারোপও করেছিল। এর কয়েকদিন পরই সৌদি আরব ইন্দোনেশিয় ও ফিলিপাইনি গার্হস্থ্য কর্মীদের ভিসা প্রদান বন্ধ ঘোষণা করে।
সৌদি আরবে হাজার হাজার ইন্দোনেশিয় শ্রমিক বাসাবাড়িতে গৃহকর্মী ও দিনমজুরের কাজে নিযুক্ত রয়েছে।
মানবাধিকার গ্রুপগুলোর মতে- সৌদি আরবসহ উপসাগরীয় দেশগুলোতে শ্রম আইন না থাকা বা দুর্বল শ্রম আইনের জন্য লাখ লাখ শ্রমিক বিশেষ করে এশিয় গৃহকর্মী নিয়মিতই শারীরিক ও অর্থনৈতিক শোষন-নির্যাতনের শিকার হন।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৬ ঘণ্টা, ০৭ এপ্রিল, ২০১২
সম্পাদনা: আহ্সান কবীর, আউটপুট এডিটর