ঢাকা: আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হোসনি মোবারকের রাজনৈতিক সহযোগীদের অংশ নেওয়া নিষিদ্ধ করেছে মিসরের পার্লামেন্ট। মিসরের সাবেক একনায়ক ও স্বৈরশাসক হোসনি মোবারককে গত বছর গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে উচ্ছেদ করে দেশটির জনগণ।
বৃহস্পতিবার পার্লামেন্টে সর্বসম্মতিক্রমে অনুমোদন হওয়া এই আইন অনুযায়ী মোবারক সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তারা আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না।
এই আইনের ফলে মোবারকের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট ওমর সুলায়মানের নির্বাচনে অংশগ্রহণ ঝুলে গেলো। ভাইস প্রেসিডেন্ট ওমর সুলায়মান দীর্ঘদিন হোসনি মোবারকের গোয়েন্দা প্রধান হিসেবে কর্মরত ছিলেন। গণআন্দোলন শুরু হওয়ার পর নিজের ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে তাকে নিয়োগ দেন মোবারক।
তবে পার্লামেন্টে বৃহস্পতিবার পাস হওয়া এই আইনকে এখন মিসরের বর্তমান ক্ষমতাসীন অন্তর্বতীকালীন সামরিক পরিষদে অনুমোদিত হতে হবে। মোবারকের পতনের পর দেশটির শাসন ক্ষমতা গ্রহণ করে সামরিক বাহিনী।
সেনা সমর্থিত ক্যাবিনেট মন্ত্রীসভার এক সদস্য নতুন আইনের সমালোচনা করে বলেছেন শুধু কিছু ব্যক্তিকে উদ্দেশ্য করেই এই আইন করা হয়েছে।
পার্লামেন্টে পাস হওয়া আইন অনুযায়ী মোবারকের ত্রিশ বছরের শাসনামলের শেষ দশকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করা প্রত্যেকের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার পথ বন্ধ হলো। এর পাশাপাশি মোবারক সরকারের যে কোন ভাইস প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী এবং নিষিদ্ধঘোষিত রাজনৈতিক দল ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টির নেতাদের আগামী দশ বছরের জন্য রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড থেকে নিষিদ্ধ করা হয়।
পার্লামেন্টের এই অধিবেশন টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।
এই আইনের ফলে মোবারকের সদ্য বিলুপ্ত রাজনৈতিক দল এনডিপির অন্যতম নেতা আহমেদ শফিকের প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতার পথ রুদ্ধ হলো। তিনিও নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন।
তবে এই আইনী নিষেধাজ্ঞার আওতায় মোবারকের মন্ত্রীসভার সদস্যরা পড়ছেন না। এর ফলে মোবারক সরকারের অধীনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করা আরব লীগের সাবেক মহাসচিব আমর মুসার নির্বাচনে অংশ নেওয়ার পথ রুদ্ধ হচ্ছে না। মুসা ১৯৯১ থেকে ২০০১ পর্যন্ত মোবারকের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
মিসরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রথম দফার ভোট আগামী ২৩ মে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। এই নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি ভোট পাওয়া দুই প্রার্থীর মধ্যে চূড়ান্ত দফার নির্বাচন জুনে অনুষ্ঠিত হবে। এই ভোটের মাধ্যমেই চূড়ান্ত ভাবে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবে মিসরে।
বাংলাদেশ সময়:১৫২৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৩, ২০১২
সম্পাদনা: রাইসুল ইসলাম, নিউজরুম এডিটর