ঢাকা, মঙ্গলবার, ১ আশ্বিন ১৪৩২, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৩ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

আন্তর্জাতিক

যৌথ ঘোষণা ছাড়াই শেষ হলো আমেরিকা সম্মেলন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫:৪০, এপ্রিল ১৬, ২০১২
যৌথ ঘোষণা ছাড়াই শেষ হলো আমেরিকা সম্মেলন

ঢাকা: উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশের রাষ্ট্রগুলোর সরকার প্রধানদের অংশগ্রহণে আয়োজিত আমেরিকা সম্মেলন শেষ হলো কোন যৌথ ঘোষণা ছাড়াই। বর্তমান আয়োজনে অনুপস্থিত কিউবার পরবর্তী সম্মেলনে উপস্থিতির ব্যাপারে সদস্য রাষ্ট্রগুলোর নেতৃবৃন্দ কোন চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে ব্যর্থ হলে সম্মেলনে বিব্রতকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়।



সম্মেলনে কিউবার অংশগ্রহণের ব্যাপারে লাতিন রাষ্ট্রগুলোর প্রস্তাবের তীব্র বিরোধিতা করে যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা। পরবর্তী আমেরিকা সম্মেলন ২০১৫ সালে পানামায় অনুষ্ঠিত হবে।

অর্গানাইজেশেন অব আমেরিকান স্টেট বা ওএএস আয়োজিত সম্মেলনগুলোতে গত ৫০ বছর উপস্থিত হওয়া থেকে বিরত আছে কিউবা। কমিউনিস্ট বিপ্লবের পর থেকেই ফিদেল ক্যাস্ট্রোর নেতৃত্বাধীন কিউবা এই সম্মেলনে অংশগ্রহণ থেকে বিরত থাকে। সংস্থার ওপর যুক্তরাষ্ট্রের খবরদারির প্রতিবাদে এই সম্মেলন বয়কট করে আসছে তারা।

তবে সাম্প্রতিক সময়ে লাতিন আমেরিকায় বামপন্থি সরকারগুলো রাষ্ট্রক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হলে পরিস্থিতির কিছুটা পরিবর্তন আসে। যুক্তরাষ্ট্রের খবরদারি উপেক্ষা করে দেশগুলো কিউবাকে পুনরায় সম্মেলনে ফিরিয়ে আনতে উদ্যোগ নেয়। কিন্তু এবার বিরোধিতা করে যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা।

কিউবা গণতন্ত্রের পথে নেই এবং তাদের মানবাধিকার রেকর্ড খারাপ, এই অজুহাত তুলে কিউবার অংশগ্রহণে বাধা সৃষ্টি করে তারা। এমনকি কিউবা অংশ নিলে কলম্বিয়ার কার্তাহেনায় অনুষ্ঠিত এবারের সম্মেলন বয়কট করারও হুঁশিয়ারি দেয় তারা।

তবে কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট কিউবা উড়ে গিয়ে সম্মেলনে অংশ নেওয়া থেকে বিরত থাকতে প্রেসিডেন্ট রাউল কাস্ত্রোকে অনুরোধ জানালে কিউবা সম্মেলনে অংশ নেবেনা বলে আশ্বাস দেয়। এরপর সম্মেলন শুরু হলেও হোঁচট খায় বারাক ওবামার সঙ্গে আসা দেহরক্ষী দলের যৌন কেলেঙ্কারিকে কেন্দ্র করে।

তবে শেষ দিনে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয় ফকল্যান্ড এবং কিউবাকে ঘিরে। যৌথ ঘোষণা নিয়ে অচলাবস্থা দেখা দিলেও সম্মেলনের আয়োজক কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট হুয়ান মানুয়েল সান্তোস সম্মেলনকে সফল হিসেবে দাবি করেন। তিনি বলেন ,সম্মেলনের চূড়ান্ত দিনে ফকল্যান্ড এবং কিউবা প্রসঙ্গই প্রধান আলোচিত বিষয় হবে তা তিনি ভাবেননি।

মূলত এই দুটি প্রসঙ্গেই সবচেয়ে বেশি বিভক্ত হয়ে পড়ে সংস্থার সদস্য রাষ্ট্রগুলো। সম্মেলনে আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট দাবি করেন ফকল্যান্ড দ্বীপকে লাস মালভিনাস নামে অভিহিত করা হোক। অপর দিকে বেশিরভাগ লাতিন দেশ দাবি করে আগামী সম্মেলনে কিউবার উপস্থিতির ব্যাপারটি স্পষ্ট ভাবে ঘোষণা করা হোক।
 
কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র এই এর বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নিলে আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট কির্চনার সম্মেলনস্থল থেকে ক্রদ্ধ হয়ে ঝড়ের গতিতে বেরিয়ে যান। এসময় তাকে অনুসরণ করেন বলিভিয়ার প্রেসিডেন্ট ইভো মোরালেস।

এদিকে সম্মেলনে কিউবার পাশাপাশি ইকুয়েডরের প্রেসিডেন্ট রাফায়েল কোরেয়াও বর্জন করেন। কিউবাকে সম্মেলনে আনতে উপযুক্ত পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি অভিযোগ তুলে তিনি সম্মেলন বয়কট করেন।

অন্যান্য বেশ কয়েকটি লাতিন ও ক্যারিবিয়ান রাষ্ট্রও সম্মেলনে কিউবার অংশ গ্রহণ না করতে পারায় অসন্তোষ প্রকাশ করেন। সম্মেলনে ভেনিজুয়েলা প্রতিনিধিদল পাঠালেও স্বাস্থ্যগত কারণে কলম্বিয়ায় যাননি প্রেসিডেন্ট হুগো শ্যাভেজ। এছাড়া নিকারাগুয়ার প্রেসিডেন্টও ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে অংশ নেননি

বাংলাদেশ সময়: ১৪১৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৬, ২০১২

সম্পাদনা:রাইসুল ইসলাম, নিউজরুম এডিটর 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।