ঢাকা : আল কায়েদা নেতা ওসামা বিন লাদেনের বিধবা পত্নী এবং সবচে ছোট স্ত্রী ব্রিটেনে আশ্রয় চেয়েছেন। সেই সঙ্গে পাঁচ সন্তানকে নিজের কাছে রাখতে চেয়েছেন তিনি।
গত বুধবার দিবাগত রাতে তিনি এসব ইচ্ছার কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন, ‘আমার ইচ্ছা ব্রিটেনের রাজ পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করা। ’
বিন লাদেনের সর্ব কনিষ্ঠ পত্নী আমাল আবদুল ফাত্তাহ আল সাদাহ (২৯)ইয়েমেনি নাগরিক। মাত্র ১৭ বছর বয়সে তার ওসামা বিন লাদেনের সঙ্গে বিয়ে হয়। মোহগ্রস্ত এ তরূণীর স্বপ্নই ছিল তার স্বামী হবে একজন ‘জিহাদি’ বা ধর্মযোদ্ধা। বিয়ের পর থেকে বিন লাদেনের ছায়া হয়ে থেকেছেন এ নারী।
গত বছরের ২ মে পাকিস্তানের গ্যারিসন শহর অ্যাবোটাবাদের একটি কম্পাউন্ডে মার্কিন বিশেষ বাহিনী সিলের অভিযানে ওসামা বিন লাদেন (৫৪) নিহত হন। এসময় মার্কিন সেনাদের হাত থেকে স্বামীকে বাঁচাতে গিয়ে আহত হন আমাল।
এর পর ওই কম্পাউন্ডে থাকা আমালসহ আরো দুই স্ত্রী ও বিন লাদেনের কয়েক সন্তানকে নিজেদের হেফাজতে নেয় পাকিস্তান। ওসামার তিন স্ত্রী ও আট সন্তানসহ পরিবারের সদস্যদের গত বুধবার পাকিস্তান থেকে সৌদি আরব পাঠানোর কথা ছিল। প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র ও পাসপোর্ট হাতে না পাওয়ায় তাদের যাত্রায় দেরি হয়েছে বলে পাকিস্তানি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
বুধবার রাতে ধারণা করা হয়েছিল, আমাল হয়ত পাকিস্তানে আশ্রয় পেতে চাইবেন। কারণ নিজ দেশ ইয়েমেনে গেলে বিচারে তার মৃত্যুদণ্ড হতে পারে। কিন্তু তিনি সবাইকে অবাক করে দিয়ে আশ্রয় চাইলেন ব্রিটেনে।
এদিন নিজের বিরুদ্ধে আনা সন্ত্রাসবাদিতার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন আমাল। তার দাবি, ইয়েমেনে তিনি অনেক দিন ধরে তার পরিবারের সঙ্গে ছিলেন কিন্তু তার স্বামী এটা পছন্দ করতেন না।
ব্রিটেনের দৈনিক দ্য সান পত্রিকায় আমালের ভাই জাকারিয়া আল সাদাহ এক সাক্ষাতকারে বলেছেন, ‘আমরা ব্রিটেনে বসবাস করাকেই নিশ্চয় পছন্দ করব। ব্রিটেন বা সেদেশের মানুষের বিরুদ্ধে আমরা কিছু করিনি। যদি সুযোগ দেওয়া হয় তাহলে আমাল সেখানেই যাবে। ’
তিনি আরো বলেন, ‘সে মানুষকে ভালোবাসে এবং একটি উদার সমাজে বাস করতে চায়। সে কোনো চরমপন্থী নয়। ’
তিনি দাবি করেন, বিন লাদেন নিহত হওয়ার পর আল কায়েদার নেতৃত্ব নেওয়ার জন্য বলা হলে আমাল রাজি হতেন না। তিনি এখন একটি শান্তিপূর্ণ জীবন চান। আল কায়েদার সঙ্গে সব যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করতে আমালকে রাজি করতে পেরেছেন বলে জানান জাকারিয়া।
পাকিস্তানের গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের সঙ্গে আমালের একটি রেকর্ড করা সাক্ষাতকার দ্য সান পত্রিকা সংগ্রহ করতে পেরেছে। এ সাক্ষাতকারে আমাল ব্রিটেনের রাজ পরিবার এবং ব্রিটিশদের খুব প্রশংসা করেছেন বলে জানিয়েছে পত্রিকাটি।
সাক্ষাতকারে তিনি জানিয়েছেন, ৯/১১ এর ঘটনার পর পালিয়ে বেড়ানোর সময় থেকে বিন লাদেনের মৃত্যু পর্যন্ত দাম্পত্য জীবনে তার পাঁচটি সন্তান হয়েছে।
উল্লেখ্য, পাকিস্তানের হেফাজতে থাকা আমাল এবং বিন লাদেনের অপর দুই স্ত্রী খাইরিয়া (৬১), সিহাম (৪৮) এবং তাদের দুই সন্তানকে সৌদি আরবে পাঠানো হচ্ছে। এর পর তাদের ইয়েমেনে পাঠানো হতে পারে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৯, ২০১২
সম্পাদনা: জাহাঙ্গীর আলম, নিউজরুম এডিটর