ঢাকা : শিশুদের একটি ‘গিনিপিগ প্রজন্ম’ জন্ম নিচ্ছে যারা অতিমাত্রায় ইন্টারনেট আসক্ত। আর সবচে আশঙ্কার বিষয় হচ্ছে এদের মধ্যে বেশিরভাগই পর্নোগ্রাফির প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ছে।
এমপিদের উদ্যোগে করা এক জরিপে দেখা গেছে, ১৬ বছর বয়সী ছেলে-মেয়েদের মধ্যে প্রতি পাঁচ জনের মধ্যে চার জন এবং ১০ বছর বয়সী প্রতি তিন জনের মধ্যে এক জন নিয়মিত পর্নোগ্রাফির ওয়েবসাইট দেখে।
জরিপে আরো দেখা যাচ্ছে, ব্রিটেনের শীর্ষস্থানীয় বেসরকারি চিকিৎসা কেন্দ্রগুলোতে চিকিৎসাধীন কিশোর-তরুণদের এক চতুর্থাংশের বেশির সমস্যা অনলাইন পর্নোগ্রাফিতে আসক্তি।
এক এমপি জানিয়েছেন, তার স্কুল পড়ুয়া ছেলে তাকে জানিয়েছে তাদের স্কুলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে মেমোরি স্টিকের মাধ্যমে অশ্লীল ছবি বিনিময় একটা সাধারণ ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তবে সবচেয়ে ভীতিকর ব্যাপার হলো, ইন্টারনেট পর্নোগ্রাফিতে আসক্তির কারণে কিশোর বয়সী ছেলে-মেয়েদের মধ্যে স্বাভাবিক সম্পর্ক আর থাকছে না। আর সেই সঙ্গে এরা যৌন নীপিড়নকারীদের খপ্পরে পড়ার আশঙ্কা বাড়ছে।
শিশু-কিশোরদের ইন্টারনেট পর্নোগ্রাফিতে আসক্ত হয়ে পড়ার ওপর এ জরিপটি করার পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন টোরি এমপি ক্লেয়ার পেরি। ইন্টারনেট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে পরিবারে ব্যবহারের জন্য ওয়েবসাইট থেকে পূর্ণবয়স্কদের কনটেন্ট বাদ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তিনি।
অনলাইন চাইল্ড প্রোটেকশনের ওপর এ স্বাধীন সংসদীয় তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দুর্ঘটনাবশত অনেক ছোট শিশুও অপ্রত্যাশিতভাবে পর্নোগ্রাফিতে আসক্ত হয়ে পড়ছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, লন্ডনের বেসরকারি ক্লিনিক পোর্টল্যান্ডে প্রতিদিন আসা তরুণদের মধ্যে প্রায় ২৬ ভাগ ইন্টারনেট পর্নোগ্রাফিতে আসক্তির কারণে সৃষ্ট মানসিক সমস্যার চিকিৎসা নিতে আসে।
প্রসঙ্গত, বর্তমানে ব্রিটেনের ১১ থেকে ১৬ বছর বয়সী ছেলে-মেয়েদের ৬০ ভাগ নিজের ঘরেই ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ পাচ্ছে। যেখানে ছয় বছর আগে মাত্র ৩০ শতাংশ এ সুযোগ পেতো।
এখন সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় হলো, সাত থেকে ১০ বছর বয়সী বাচ্চাদের মধ্যে ৪১ ভাগেরই নিজের ঘরে ইন্টারনেট সংযোগ রয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উঠতি বয়সী তরুণ-তরুণীদের ১২ ভাগ নিজেদের অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি ইন্টারনেটে বা মেমোরি স্টিকে করে আদান-প্রদান করে। আর কারো সম্পর্কচ্ছেদ ঘটলে সেসব ছবি পুরো শ্রেণীকক্ষে ছড়িয়ে পড়ে।
গবেষণায় এ ধরনের আসক্তির সঙ্গে আর্থসামাজিক অবস্থার সংযোগ লক্ষ্য করা গেছে। দেখা গেছে, ইন্টারনেটে পর্নোগ্রাফির প্রতি সবচেয়ে বেশি আসক্ত হয় মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তানরা।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৯, ২০১২
সম্পাদনা: জনি সাহা, নিউজরুম এডিটর/জাহাঙ্গীর আলম, নিউজরুম এডিটর