ঢাকা, রবিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

জেলেনস্কি বললেন ‘আপসের কিছু নেই ’

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬১২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০২৩
জেলেনস্কি বললেন  ‘আপসের কিছু নেই ’ ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি 

রাশিয়ার সঙ্গে সম্ভাব্য শান্তি চুক্তি হলে এর আওতায় ইউক্রেন নিজের কোনো অঞ্চল ছেড়ে দেবে না। বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এমনটি জানিয়েছেন।

 

ইউক্রেনে রাশিয়ার বিশেষ সামরিক অভিযানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে বিবিসিকে সাক্ষাৎকার দেন প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি। তিনি বলেন, ভূমি দিয়ে দেওয়ার অর্থ রাশিয়া পুনরায় ফিরে আসতে পারে।  

জেলেনস্কি বলেন, পূর্বাভাস অনুযায়ী বসন্তকালীন হামলা ইতোমধ্যে শুরু হয়ে গিয়েছে। বিভিন্ন দিক থেকে রাশিয়ার আক্রমণ চলছে।  
 
তার বিশ্বাস, ইউক্রেনের সৈন্যরা যতদিন পাল্টা প্রতিরোধ চালিয়ে যেতে পারবে, ততদিন রাশিয়ার অগ্রযাত্রা বা সম্মুখ যাত্রা ঠেকিয়ে রাখা যাবে। তিনি আরও সামরিক সহায়তা দিতে পশ্চিমাদের প্রতি আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন।  

জেলেনস্কি বলেন, আধুনিক অস্ত্রশস্ত্র শান্তি প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করে। অস্ত্রই একমাত্র ভাষা, যা রাশিয়া বুঝতে পারে।  

আন্তর্জাতিক সমর্থন বাড়াতে গেল সপ্তাহে জেলেনস্কি যুক্তরাজ্য ও ইইউ নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং তার দেশকে রক্ষার জন্য আধুনিক অস্ত্রশস্ত্র চান। যখন তিনি আধুনিক যুদ্ধবিমান চান, যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক তখন বলেন, এমন কিছু সম্ভব নয়।

যে হারে পশ্চিমা অস্ত্রশস্ত্র আসছে, তাতে কিয়েভ ক্রমেই হতাশায় পড়ে যাচ্ছে। গেল মাসে পশ্চিমাদের পাশাপাশি জার্মানি, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া প্রতিশ্রুতির ট্যাংক যুদ্ধের ময়দানে আসতে আসতে আরও কয়েক সপ্তাহ সময় লেগে যেতে পারে।

সাক্ষাৎকারে জেলেনস্কি বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্ডার লুকাশেঙ্কোর দেওয়া হুমকির কথা তুলে ধরেন। লুকাশেঙ্কো বলেছিলেন, ইউক্রেনের একজন সৈন্যও যদি তার সীমান্ত অতিক্রম করে, তবে তিনি যুদ্ধ শুরু করবেন।  

জেলেনস্কি বলেন, আমি আশা করি, তারা (বেলারুশ) যুদ্ধে যোগ দেবে না। যদি তার যোগ দেয়, তবে আমরাও লড়ব, টিকে থাকব। রাশিয়া যদি আক্রমণের জন্য পুনরায় বেলারুশ ব্যবহার করে, তবে এটি হবে বড় ভুল।

রাশিয়ার সৈন্যরা ১২ মাস আগে বেলারুশ থেকে পুরো আক্রমণের আংশিক শুরু করেছিল। দক্ষিণ দিক দিয়ে সৈন্যরা ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের দিকে অগ্রসর হয়েছিল। অনেক ক্ষয়ক্ষতির পর তারা পিছু হটতে বাধ্য হয়।  

যুদ্ধে রাশিয়ার কৌশলে বিস্মিত হয়েছেন কি- না জানতে চাইলে জেলেনস্কি তাদের মূল্যহীন বলে আখ্যা দেন। তিনি বলেন, এইভাবে তারা সব ধ্বংস করে দিয়েছে। যদি তাদের সৈন্যরা এই আদেশ পেয়ে থাকে এবং তা পালন করে, এর অর্থ হলো তারাও একই মূল্যবোধের অংশীদার।

চলতি সপ্তাহে প্রকাশিত ইউক্রেনের পরিসংখ্যান বলছে, রাশিয়ার সৈন্যরা যুদ্ধে আগের তুলনায় বেশি হারে নিহত হচ্ছে। এই তথ্য যাচাই না করা হলেও যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, সঠিক বলেই মনে হচ্ছে।  

যুদ্ধ শেষের ভাবনা নিয়ে জেলেনস্কি বলেন, এখন টিকে থাকাই আমাদের ঐক্য। আমি বিশ্বাস করি, ইউক্রেন টিকে থাকার জন্যই লড়ছে। ইউক্রেন নিজের মূল্যবোধের মধ্য দিয়ে এবং অর্থনৈতিকভাবে ইউরোপের দিকে সরে যাচ্ছে।  

তিনি বলেন,  আমরা এই পথ বেছে নিয়েছি। আমরা নিরাপত্তার অঙ্গীকার চাই। যেকোনো আঞ্চলিক আপস রাষ্ট্র হিসেবে আমাদের দুর্বল করে দেবে। আপসের কিছু নেই, আমরা কেন এই নিয়ে ভয় পাব? দৈনন্দিন জীবনে নানা কিছুর সঙ্গে আমাদের আপস করতে হচ্ছে।  

জেলেনস্কি বলেন, আপস কার সঙ্গে? পুতিনের সঙ্গে?  না, কোনো বিশ্বাস নেই। তার সঙ্গে সংলাপ? না, কোনো বিশ্বাস নেই।  

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৭ ঘণ্টা, ২০২৩
আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।