ঢাকা: ইউরোজোনের সঙ্কট আর অর্থনৈতিক দূরবস্থার মধ্যেই রোববার ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ১০ জন প্রার্থী।
অর্থনৈতিক মন্দায় আক্রান্ত ইউরোপের সঙ্কট মোকাবেলায় ফ্রান্সের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকায় দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচন বিশেষ তাৎপর্য বহন করছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
ফ্রান্সের মূল ভূখণ্ডের বাইরে গত শনিবার থেকেই ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে। মূল সীমানার বাইরে ভারত, প্রশান্ত এবং আটলান্টিক মহাসাগরীয় অঞ্চলের ভূখণ্ডগুলোতে এদিন ভোট গ্রহণ হয়।
এদিকে, রোববার স্থানীয় সময় সকাল ৮টা থেকে মূল ভূখণ্ড এবং ভূমধ্যসাগরীয় দ্বীপ কর্সিকায় মোট ৮৫ হাজার ভোট কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে। ভোট গ্রহণ চলবে রাত ৮টা পর্যন্ত। তবে বড় শহরগুলোতে ভোটকেন্দ্র খোলা থাকবে অতিরিক্ত দুই ঘণ্টা।
ফ্রান্সের বর্তমান প্রেসিডেন্ট মধ্য ডানপন্থি নিকোলা সারকোজি পুনরায় নির্বাচিত হওয়ার জন্য আশাবাদী। ফ্রান্সকে সঙ্কট থেকে উদ্ধার করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি দাবি করেছেন, একমাত্র তিনিই ফ্রান্সকে নেতৃত্ব দেওয়ার যোগ্যতা রাখেন।
কিন্তু তার পরবর্তী মেয়াদে নির্বাচিত হওয়ার পেছনে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছেন জনপ্রিয় বিরোধী সমাজবাদী প্রার্থী ফ্রাঁসোয় হোলাঁদ। সারকোজির ‘ব্যর্থ’ শাসনে বিরক্ত ফ্রান্সের মানুষ আবারো বামপন্থিদেরই ক্ষমতায় দেখতে চায় বলে দাবি করেছেন তিনি।
প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী দুই জনের বাইরে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা আরো আট প্রার্থীর মধ্যে দুই একজন ছাড়া বাকিরা নির্বাচনে খুব একটা প্রভাব বিস্তার করতে পারবেন না বলে মনে করা হচ্ছে।
নিয়ম অনুযায়ী রোববারের নির্বাচনে কোনো প্রার্থী ৫০ শতাংশ ভোট না পেলে পুনরায় ভোট নেওয়া হবে আগামী ৬ মে। দ্বিতীয় দফার এ নির্বাচনে অংশ নেবেন রোববারের নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি ভোট পাওয়া দুই প্রার্থী।
নির্বাচনকে সামনে রেখে বর্তমান প্রেসিডেন্ট সারকোজি ফ্রান্সের বিশাল বাজেট ঘাটতি হ্রাস এবং বিদ্যমান কর কমানোর ঘোষণা দিয়েছেন। অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণেরও অঙ্গীকার করেছেন তিনি। এর পাশাপাশি সেনজেনভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে বিদ্যমান অবাধ চলাচল ব্যবস্থা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার হুমকি দিয়েছেন তিনি। এই ব্যবস্থার সুযোগ নিয়ে অ-ইউরোপীয়রা ব্যাপক হারে ফ্রান্সে প্রবেশ করছে বলে তার অভিযোগ।
অপরদিকে প্রতিদ্বন্দ্বী হোলাঁদ বৃহৎ করপোরেশন এবং ধনীদের আয়ের ওপর কর বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এছাড়া তিনি সর্বনিম্ন বেতনসীমা বাড়ানোর পাশাপাশি নতুন করে আরো ৬০ হাজার শিক্ষক নিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। কিছু পেশার জন্য অবসরের বয়স সীমা ৬২ থেকে কমিয়ে ৬০ বছর করবেন বলে অঙ্গীকার করেছেন তিনি।
নির্বাচিত হলে ফ্রান্সের সাবেক প্রখ্যাত বামপন্থি প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া মিতেরার পর হোলাঁদই হবেন প্রথম বামপন্থি প্রেসিডেন্ট। মিতেরা ১৯৮১ সাল থেকে ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৪২৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ২২, ২০১২
সম্পাদনা: রাইসুল ইসলাম, নিউজরুম এডিটর/ জাহাঙ্গীর আলম, নিউজরুম এডিটর