ঢাকা: যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের কাছে সাহায্য চাইলেন আলোচিত চীনা ভিন্নমতাবলম্বী চেন গুয়ানচেঙ। বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেসের চীন বিষয়ক কমিটির কাছে টেলিফোনে সাহায্যের আবেদন জানান তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রে চেনের সমর্থক ও বন্ধু মানবাধিকার কর্মী বব ফু কংগ্রেস কমিটি ও চেনের মধ্যে অনুবাদক হিসেবে কাজ করেন।
কমিটির সদস্যদের সরাসরি ফোনে তিনি জানান, চীনে তার পরিবারের জীবন নিরাপত্তা হুমকির সম্মুখীন। চীন ত্যাগ করার ইচ্ছা ব্যক্ত করে তাকে ও তার পরিবারকে যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় দেওয়ার আহবানও জানান তিনি।
বর্তমানে চীন সফররত মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটনের সঙ্গে দেখা করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন চেন। হিলারি ক্লিনটন তাকে অধিক সাহায্য করতে সক্ষম হবেন আশা প্রকাশ করেন তিনি।
উল্লেখ্য বর্তমানে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন এবং অর্থ মন্ত্রী টিমোথি গেইথনার দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও কূটনৈতিক সম্পর্ক নিয়ে আলোচনার জন্য চীনের রাজধানী বেইজিংয়ে অবস্থান করছেন।
চীন বিষয়ক কংগ্রেসনাল কমিটিকে চেন বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস ত্যাগ করার পরই তার উপলব্ধি হয় তিনি ও তার পরিবার এখন সম্পূর্ণভাবে হুমকির মুখে।
চীনের এই আলোচিত ভিন্ন মতাবলম্বী বর্তমানে চীনের রাজধানী বেইজিংয়ের একটি হাসপাতালে কর্তৃপক্ষের নজরদারিতে চিকিৎসাধীন।
গত ১০ বছর বিশ্রাম নিতে পারেননি উল্লেখ করে যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্রাম নেওয়ার জন্য যেতে চান বলে আবেদন জানান তিনি। তবে নিজের মা ও ভাইদের নিরাপত্তা নিয়েই এ সময় বেশি উদ্বিগ্ন ছিলেন তিনি। এছাড়া তাকে বিভিন্ন সময়ে সাহায্য করার অপরাধে তার নিজ গ্রামের বাসিন্দরা এখন শাস্তির সম্মুখীন হচ্ছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
এদিকে চেনের জন্য আশার বাণী শুনিয়েছে চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। অধ্যয়নের জন্য চীনের বাইরে যাওয়ার আবেদন করলে চেনকে দেশত্যাগের অনুমতি দেওয়া হবে বলে বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়।
এর জন্য তাকে চীনা আইনের অধীনে যথাযথ কর্তৃপক্ষ বরাবর আর দশজন চীনা নাগরিকের মতোই নিয়ম মেনে আবেদন করার শর্ত দিয়েছে তারা। চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদসংস্থা সিনহুয়া পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের উদ্ধৃতি দিয়ে এ তথ্য প্রকাশ করে।
সরকারের বিভিন্ন নীতির সমালোচনা করার কারণে কর্তৃপক্ষের রোষাণলে পড়ে দীর্ঘদিন গৃহবন্দী থাকেন চেন। তবে গত সপ্তাহে গৃহবন্দীত্ব থেকে পালিয়ে মার্কিন দূতাবাসে আশ্রয় নেন তিনি। পরবর্তীতে চীনা কর্তৃপক্ষের নিরাপত্তার আশ্বাসের প্রেক্ষিতে দূতাবাস ত্যাগ করে তিনি চিকিৎসার জন্য বেইজিংয়ের একটি হাসপাতালে ভর্তি হন।
চেন বর্তমানে হাসপাতালে তার স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে অবস্থান করছেন। তবে ভবনটিকে পুলিশ কড়া নিরাপত্তায় ঘিরে রেখেছে জানিয়েছেন বেইজিংয়ে অবস্থান করা একটি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধি । চেনের সঙ্গে কাউকেই দেখা করতে দেওয়া হচ্ছে না জানিয়ে তিনি বলেন বিদেশী সাংবাদিক এমনকি মার্কিন দূতাবাসের কর্মকর্তাদেরও তার কাছে পৌঁছাতে দেওয়া হচ্ছে না।
বাংলাদেশ সময়:১৪২৭ ঘণ্টা, মে ০৪, ২০১২
সম্পাদনা:রাইসুল ইসলাম, নিউজরুম এডিটর