ঢাকা: যুক্তরাষ্ট্রে হুপিংকাশির ভয়াবহ প্রার্দুভাব দেখা দিয়েছে। এরইমধ্যে তা ছড়িয়ে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কয়েকটি রাজ্যে।
সংক্রামক এই রোগ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ায় গত ৩ এপ্রিল হুপিংকাশিকে মহামারী হিসেব ঘোষণা করে রাজ্যের স্বাস্থ্য বিভাগ। গত কয়েক দশকের মধ্যে ওয়াশিংটন রাজ্যে হুপিংকাশির এই প্রাদুর্ভাব সবচেয়ে ভয়াবহ বলে জানিয়েছেন রাজ্যের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ।
রাজ্য কর্তৃপক্ষ এরইমধ্যে পরিস্থিতি মোকাবেলায় কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে সাহায্য চেয়েছে। এর পাশাপাশি তারা রাজ্যের অধিবাসীদের প্রতি দ্রুত হুপিংকাশির প্রতিষেধক বা ভ্যাকসিন নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। এর পাশাপাশি তারা সর্তক করে দিয়ে বলেছে, এই রোগের প্রকোপ সামনে আরো বাড়তে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রে সর্বশেষ ২০১০ সালে ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যে হুপিংকাশিকে মহামারী ঘোষণা করা হয়। ক্যালিফোর্নিয়ায় প্রায় ৯ হাজার লোক এতে আক্রান্ত হন। পাশাপাশি কমপক্ষে ১০ জন এ রোগের কারণে মারা যান।
এদিকে ওয়াশিংটনের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের উইসকনসিন অঙ্গরাজ্যেও এ রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা গেছে। চলতি বছর এখন পর্যন্ত রাজ্যে হুপিংকাশিতে আক্রান্ত হওয়ার প্রায় ২ হাজার ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে রাজ্য কর্তৃপক্ষ। তবে এখনও এই রাজ্যে হুপিংকাশিকে মহামারী হিসেবে ঘোষণা করা হয়নি।
ওয়াশিংটন রাজ্যে এ পর্যন্ত প্রায় ১ হাজার ২৮০ জন হুপিংকাশিতে আক্রান্ত হয়েছে বলে জানা যায়। তবে বছরের শেষ নাগাদ এই সংখ্যা ৩ হাজার ছাড়িয়ে যাবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন কর্মকর্তারা।
রোগের প্রকোপ বেড়ে যাওয়া গত ৩ এপ্রিল রাজ্যের স্বাস্থ্য সচিব মেরি সেলেকি হুপিংকাশিকে মহামারী হিসেবে ঘোষণা করেন। তখন থেকেই কর্তৃপক্ষ জনগণকে ভ্যাকসিন দিতে শুরু করে। বিশেষ করে যারা সরকারের স্বাস্থ্য বীমার সুবিধার বাইরে আছেন তাদেরকে এর আওতায় নিয়ে আসার চেষ্টা করছে কর্তৃপক্ষ।
এরইমধ্যে রাজ্যের হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হওয়া প্রত্যেক প্রসূতিকে ভ্যাকসিন দিতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি রাজ্যের সব সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে বলা হয়েছে তাদের কর্মচারীদের ভ্যাকসিন নিতে উদ্বুদ্ধ করতে। ইতিমধ্যেই হাইস্কুলের শিক্ষার্থীদের জন্য হুপিংকাশি নিরোধক ‘বুস্টার শট’ দেওয়া শুরু করেছে সরকার।
গত সপ্তাহে রাজ্যের গভর্নর ক্রিস গ্রিগো ঘোষণা করেন, রাজ্য কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যেই জনগণকে হুপিংকাশির ব্যাপারে সচেতন করার জন্য ৯০ হাজার ডলারের প্রচারণা কর্মসূচি শুরু করেছে। এর পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সরকারের থেকে প্রাপ্ত অর্থে ইতিমধ্যেই ২৭ হাজার ডোস ভ্যাক্সিন প্রদান করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
ইতিমধ্যেই রাজ্য কর্তৃপক্ষ কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে হুপিংকাশি নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধের জন্য বিশেষ দল পাঠানোর অনুরোধ করেছে। প্রতি তিন বা পাঁচ বছর পরপর যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে এ রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৫ ঘণ্টা, মে ১১, ২০১২
সম্পাদনা: রাইসুল ইসলাম, নিউজরুম এডিটর