ঢাকা : গণহত্যার দায়ে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে সাবেক বসনীয় সার্ব সেনা প্রধান জেনারেল রাতকো ম্লাদিচের বিচারের শুনানি। সাবেক ইউগোস্লাভিয়া ভেঙ্গে যাওয়ার সময় সংঘটিত গৃহযুদ্ধে ব্যাপক মাত্রায় মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের অন্যতম মূল হোতা হিসেবে অভিযুক্ত করা হয় এই সামরিক নেতাকে।
বুধবার শুনানির উদ্বোধনী দিনে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত আইসিসির কৌসূলিরা ম্লাদিচের বিরুদ্ধে তাদের বক্তব্য পেশ করেন। গত বছরের এই সময়ে তাকে সার্বিয়া থেকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার এড়ানোর জন্য দীর্ঘদিন তিনি আত্মগোপণে ছিলেন। গ্রেফতারের পরপরই তাকে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের হাতে তুলে দেয় সার্বিয়া।
আদালতে ম্লাদিচের বিরুদ্ধে বসনীয় যুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটন ও যুদ্ধপরাধে জড়িত থাকার ১১ টি অভিযোগ আনা হয়েছে। এদের মধ্যে অন্যতম হলো ১৯৯৫ সালে সার্ব বাহিনীর হাতে সংঘটিত সেব্রেনিৎসা হত্যাকান্ড।
বসনীয় সার্ব সেনারা বসনীয় মুসলিম অধ্যুষিত সেব্রেনিৎসা শহরের প্রায় ৭ হাজার মুসলিম পুরুষ ও বালককে হত্যা করে ১৯৯৫ সালে। এর পরিকল্পনাকারী ও হত্যাকাণ্ড সংঘটনের মূল নির্দেশদাতা হিসেবে মনে করা হয় রাতকো ম্লাদিচকে।
এছাড়াও বসনিয়ার রাজধানী সারায়ভোতে দীর্ঘ ৪৪ মাসের অবরোধ চলাকালীন সময়ে প্রায় দশ হাজার বেসামরিক বসনীয় মুসলিম নারী পুরুষকে হত্যার অভিযোগ আনা হয় তার বিরুদ্ধে।
তবে ম্লাদিচ সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন বসনীয় সার্ব বাহিনীর নেতা হিসেবে তিনি তার জনগণকে রক্ষার চেষ্টা করেছিলেন।
৭০ বছর বয়সী এই সাবেক যুদ্ধবাজ নেতাকে সার্বিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় একটি গ্রাম থেকে গত বছরের মে মাসে গ্রেফতার করা হয়। তার দুস্কর্মের অন্যতম সহযোগী ও যুদ্ধকালীন সময়ে বসনীয় সার্বদের শীর্ষ রাজনৈতিক নেতা রাদোভান কারাদজিচকেও একই অভিযোগে বিচারের মুখোমুখি করা হয়েছে। কারাদজিচ কারাগারের যে সেলে আটক ছিলেন ম্লাদিচকেও একই সেলে আটক রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম। রাদোভান কারাদজিচকে ২০০৮ সালে গ্রেফতার করা হয়। বিচারের কাজ শেষে খুব শীগগিরই তার বিরুদ্ধে রায় ঘোষণা হবে বলে জানা গেছে।
তাদের দুস্কর্মের আরেক প্রধান হোতা সাবেক সার্বীয় নেতা স্লোবোদান মিলোসেভিচকেও গ্রেফতার করে বিচারের সম্মুখীন করা হয়। কিন্তু বিচার শেষে রায় ঘোষণার সন্ধিক্ষণে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে কারাগারেই মারা যান তিনি।
বাংলাদেশ সময়:১৪৩৩ ঘন্টা, মে ১৬, ২০১২
সম্পাদনা:রাইসুল ইসলাম, নিউজরুম এডিটর