ঢাকা: একুশ শতকে এসেও আধুনিক সভ্যতার ধারক ইংল্যান্ডে বর্ণবাদ ভয়াবহ রকমে প্রবল। এমনকি ব্রিটেনের স্কুলগুলোতে বর্ণবাদী আচরণের মাত্রা লজ্জাজনকভাবে অত্যন্ত বেশি।
বিকৃত নামে ডাকা, শারীরিক লাঞ্ছনাসহ বিভিন্ন ধরনের অপমানজনক আচরণকে বর্ণবাদী আচরণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে। এতে এ ধরনের আচরণের শিকার কেউ বা কোনো ব্যক্তির অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনাগুলো লিপিবদ্ধ করেছে সংশ্লিষ্ট স্কুলগুলো।
জরিপে দেখা গেছে, ২০০৭ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত বার্মিংহামে এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে সবচেয়ে বেশি। এ সংখ্যা প্রায় ৫ হাজার ৭শ’ ৫২টি। এর পরেই আছে লিডস যেখানে একই সময় এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে চার হাজার ৬শ’ ৯০টি। অপরদিকে কামারথেনশায়ারে বর্ণবাদী ঘটনা ঘটেছে মাত্র ৫টি।
তবে বাস্তবে স্কুলুগুলোতে আরো অনেক বেশি বর্ণবাদের ঘটনা ঘটে বলে উল্লেখ করে বর্ণবাদবিরোধী সংস্থা শো রেসিজম দ্য রেড কার্ড’র (এসআরআরসি) সারাহ সোয়েই বলেছেন, ‘বাস্তবতা আসলে তার চেয়ে বেশি ভয়াবহ। শ্রেণীকক্ষগুলোতে সত্যি সত্যি বৈষম্যমূলক আচরণের ঘটনা ঘটে। কিন্তু এসব ঘটনা কর্তৃপক্ষের নজরে আসে না। কারণ ঘটনার শিকার শিক্ষার্থীরা বেশিরভাগই আরো অত্যাচারের শিকার হওয়ার ভয়ে মুখ খোলে না। ’
সম্প্রতি ব্রিটেনে বর্ণবাদের বলি কিশোর স্টিভেন লরেন্স খুনের ঘটনা গণমাধ্যমে ব্যাপক আলোচিত হওয়ার প্রেক্ষিতে স্কুলগুলোতে এ ধরনের আচরণ পর্যবেক্ষণ ও লিপিবদ্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে সরকার। যেকোন ধরনের বর্ণবাদী আচরণের ঘটনা স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে রিপোর্ট করার জন্য স্কুল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
জরিপে দেখা গেছে, ২০০৭ থেকে ২০১০ পর্যন্ত ব্রিটেনের স্কুলগুলোতে বর্ণবাদের ঘটনা বেড়েছে। শুধু লিপিবদ্ধ ঘটনা ইংল্যান্ড, স্কটল্যান্ড এবং ওয়েলশে ২২ হাজার ২শ’ ৮৫ থেকে বেড়ে ২৩ হাজার ৯শ’ ৭১টিতে গিয়ে দাঁড়িয়েছে। তাছাড়াও ঘটনার শিকাররা নিরাপত্তার কারণে কর্তৃপক্ষ না জানানোর ফলে এমন অনেক ঘটনা আছে যেগুলো কখনো লিপিবদ্ধ হয়নি।
স্কুলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বর্ণবাদী মনোভাব সমূলে উৎপাটন করতে হলে টিচিং ইউনিয়নের মতে, শিক্ষক ও শিক্ষার্থী উভয়ের জন্যই এ সংক্রান্ত শিক্ষা জরুরি।
অবশ্য ব্রিটেনের দাতব্য সংস্থাগুলো এ অবস্থার উত্তরণে স্কুলগুলোতে বর্ণবাদবিরোধী শিক্ষা জোরদার করছে বলে জানা গেছে।
শিক্ষা বিভাগের একজন মুখপাত্র বলেছেন, ‘বর্ণবাদকে সমূলে উৎপাটন করা দরকার; বিশেষত স্কুলগুলোতে। কারণ সংস্কারমুক্ত পরিবেশ শিক্ষার্থীদের অধিকার। ’
স্কুলগুলো নিজের উদ্যোগেই অনাকাঙ্ক্ষিত এসব ঘটনা প্রতিহত করবে এবং একই সঙ্গে এসব ঘটনার প্রমাণ লিপিবদ্ধ করবে এমনটাই প্রত্যাশা করছেন ব্রিটেনের অভিভাবক ও সচেতন মহল।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৫২ ঘণ্টা, মে ২৩, ২০১২
সম্পাদনা: শামসুন নাহার ও জাহাঙ্গীর আলম, নিউজরুম এডিটর