ঢাকা, বুধবার, ২ আশ্বিন ১৪৩২, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৪ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

আন্তর্জাতিক

রকেট উৎক্ষেপণ ঠেকাতে মার্কিন কর্মকর্তারা উ. কোরিয়া সফর করেন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬:০৯, মে ২৫, ২০১২
রকেট উৎক্ষেপণ ঠেকাতে মার্কিন কর্মকর্তারা উ. কোরিয়া সফর করেন

ঢাকা: গত মাসে যুক্তরাষ্ট্রের দুই জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা গোপনে উত্তর কোরিয়া সফর করেছেন বলে দাবি করেছে দক্ষিণ কোরিয়ার গণমাধ্যম। উত্তর কোরিয়ার রকেট উৎক্ষেপণের ঘোষণা দিলে তা ঠেকাতেই মূলত মার্কিন কর্মকর্তারা উত্তরে গিয়েছিলেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।



উত্তর কোরিয়ার প্রতিষ্ঠাতা কিম ইল সুংয়ের জন্মশত বার্ষিকী উপলক্ষে মহাকাশে উপগ্রহ পাঠানোর কর্মসূচি নেয় সেদেশের সরকার। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা দাবি করে, এর আড়ালে তারা দূর পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালানোর চেষ্টা করছে। ১৩ এপ্রিলের সেই রকেট উৎক্ষেপণ অবশ্য ব্যর্থ হয়েছে।

দক্ষিণ কোরিয়ার দৈনিক চোসান ইলবো গত বৃহস্পতিবার সিউলের একটি কূটনৈতিক সূত্রের বরাত দিয়ে বলেছে, যুক্তরাষ্ট্র বিমান বাহিনীর বোয়িং-৭৩৭ বিমানটি ৭ এপ্রিলে মার্কিন কর্মকর্তাদের নিয়ে গুয়াম থেকে পিতসাগরের উপর দিয়ে পিয়ংইয়ং আসে। ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালানোর ছয় দিন আগে এ গোপন সফর অনুষ্ঠিত হয়।  

পত্রিকাটিতে বলা হয়, ওই বিমানে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের উপদেষ্টা সিডনি সিলার এবং ন্যাশনাল কাউন্টার প্রলিফেরেশনের পরিচালক জোসেফ ডিট্রানি।

এই প্রতিবেদনটি দক্ষিণ কোরিয়ার একাধিক গণমাধ্যমে ফলাও করে প্রচার করা হলেও এ ব্যাপারে কোরীয় সরকারের কর্মকর্তারা এবং মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের কেউ মন্তব্য করতে রাজি হননি।

ইয়োনহাপ বার্তাসংস্থাও নিশ্চিত করেছে ওই বিমানে ডিট্রানি ছিলেন। আর এ ডিট্রানিই উত্তর কোরিয়ায় বন্দি দুই আমেরিকান নারী সাংবাদিককে মুক্ত করতে ২০০৯ সালের আগস্টে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের পিয়ংইয়ং সফরের ব্যবস্থা করেছিলনে।

গত ১৩ এপ্রিল উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার তীব্র নিন্দা জানায় জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ। ব্যালিস্টিস ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তি পরীক্ষা নিষিদ্ধ হওয়া সত্ত্বেও উত্তর তা না মানায় দেশটির বিরুদ্ধে অবরোধ আরো কঠোর করা হয়।

তবে উত্তর কোরিয়া দাবি করে, শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে বৈজ্ঞানিক গবেষণার লক্ষ্যে কৃত্রিম উপগ্রহ কক্ষপথে স্থাপনের জন্যই তারা এ পরীক্ষা চালায়। সেই সঙ্গে এ দাবিও  করে, এতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে গত ফেব্রুয়ারিতে করা চুক্তিরও লঙ্ঘন হয়নি। চুক্তির আওতায় ২ লাখ ২৪ হাজার টন খাদ্য সহায়তার বিনিময়ে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ এবং সব ধরনের পরমাণু বা ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা স্থগিত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল উত্তর কোরিয়া।

এরপরও ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালানোর ঘোষণা দিলে যুক্তরাষ্ট্র খাদ্য সহায়তা দেওয়া স্থগিত করে। জবাবে উত্তর কোরিয়া বলে, তারা আর চুক্তি মানতে বাধ্য নয়।

এদিকে গত মঙ্গলবার উত্তর কোরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে মার্কিন কর্মকর্তাদের পিয়ংইয়ংয়ে গোপন সফরের সত্যতা পরোক্ষভাবে স্বীকার করেছে।

বিবৃতিতে তারা বলে, উত্তর কোরিয়া তাদের পরমাণু অস্ত্র প্রতিরোধ ব্যবস্থা জোরদার করবে এবং ‘আত্মরক্ষার’ নীতি গ্রহণ করবে যদি না যুক্তরাষ্ট্র পিয়ংইয়ং এর সমালোচনা করা এবং তাদের রকেট উৎক্ষেপণ ও পরমাণু কর্মসূচি বন্ধের জন্য চাপ দেওয়া বন্ধ করে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৫ ঘণ্টা, মে ২৫, ২০১২
সম্পাদনা: জাহাঙ্গীর আলম, নিউজরুম এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।