ঢাকা: জয়, পরাজয় আর বহু ঘটনার স্মৃতি নিয়ে শেষ সমুদ্র যাত্রা শুরু করেছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ব্যবহৃত যুদ্ধ জাহাজ ইউএসএস আইওয়া। দীর্ঘ ছয় দশকের ব্যস্ততার শেষ যাত্রার পর এটিকে সংরক্ষণ এবং দর্শকদের জন্য উন্মুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দ্য লস অ্যাঞ্জেলস হারবার কমিশন।
সান ফ্রান্সিসকোর পোর্ট অব রিকমন্ড থেকে জাহাজটি গত শনিবার তার শেষ সমুদ্র যাত্রায় লস অ্যাঞ্জেলস বন্দরের উদ্দেশে রওনা হয়। এসময় বন্দরে উৎসুক জনতা ভিড় করে দাঁড়িয়ে থাকে। আগামী ৭ জুলাই এটি বন্দরে ভিড়বে বলে জানা গেছে।
ইউএসএস আইওয়া হচ্ছে স্মৃতি বিজড়িত সেই জাহাজ, যেটিতে করে প্রয়াত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্কলিন ডিলানো রুজভেল্ট দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় আটলান্টিক পাড়ি দিয়েছিলেন। এ যাত্রাতেই তিনি উইনস্টন চার্চিল এবং জোসেফ স্তালিনের সঙ্গে ঐতিহাসিক আলোচনায় মিলিত হয়েছিলেন।
১৯৪৫ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষে জাপানের আত্মসমর্পণ, ১৯৫০ সালে কোরিয়া যুদ্ধের সাক্ষী এই ইউএসএস আইওয়া। এর দুঃখজনক স্মৃতিও কম নেই। ১৯৮৯ সালে জাহাজের একটি কামানের বিস্ফোরণে ৪৭ জনের মৃত্যু তেমনই একটি বেদনাদায়ক ঘটনা।
প্যাসিফিক ব্যাটলশিপ সেন্টারের প্রেসিডেন্ট রবার্ট কেন্ট বলেন, ‘পৃথিবীর কোন দেশের নৌবাহিনীর কাছেই এত পুরনো যুদ্ধজাহাজ নেই। সেই সময়ের জাহাজগুলোর কোনটি ডুবে গেছে, কোনটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অথবা জাদুঘরে চলে গেছে। ’
ইউএসএস আই্ওয়ার রং চটে গেছে, জং ধরেছে কোথাও কোথাও, বেশ কিছু কামান বিধ্বস্ত হয়ে গেছে, রাডারগুলোর অবস্থাও ভগ্নপ্রায়। জাহাজটি যথাযথভাবে সংরক্ষণ ও সংস্কারের জন্য ব্যয় হবে প্রায় ৭০ লাখ মার্কিন ডলার। জানা গেছে, আইওয়া অঙ্গরাজ্য সরকার এবং ব্যক্তিগত উৎস থেকে এই অর্থ সংগ্রহ করা হবে।
এই বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করার উদ্দেশ্য একটাই, ১৯৪৩ সালে জাহাজটি তার যাত্রার শুরুতে যেমনটি ছিল ঠিক তেমন করেই এটিকে সংরক্ষণ করা।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৪ ঘণ্টা, মে ২৭, ২০১২
সম্পাদনা: শামসুন নাহার ও জাহাঙ্গীর আলম, নিউজরুম এডিটর