ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ বৈশাখ ১৪৩২, ০৮ মে ২০২৫, ১০ জিলকদ ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

ভারতের হামলায় মাসুদ আজহার পরিবারের ১০ সদস্য নিহত: বিবিসি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬:০৯, মে ৭, ২০২৫
ভারতের হামলায় মাসুদ আজহার পরিবারের ১০ সদস্য নিহত: বিবিসি ভারতীয় হামলায় পাকিস্তানের বাহাওয়ালপুরের সুবহানআল্লাহ ক্যাম্পের মসজিদে ধ্বংসাবশেষ

মঙ্গলবার (৬ মে) মধ্যরাতের পর পাকিস্তানে ২৪টি স্থাপনায় ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ও গুলিবর্ষণের ঘটনায় অন্তত ২৬ জন নিহত হয়েছেন। এসব হামলায় আহতের সংখ্যা ৪৬ জনেরও বেশি।

নিহতদের মধ্যে রয়েছেন পাকিস্তানে বসবাসরত মাওলানা মাসুদ আজহারের পরিবারের ১০ সদস্য এবং চার ঘনিষ্ঠ সহযোগী।  

বুধবার (৭ মে) এ তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, জইশ-ই-মোহাম্মদ (জেইএম) নামে সশস্ত্র সংগঠনের নেতৃত্ব দেন মাওলানা মাসুদ আজহার। বুধবার এক বিবৃতিতে সংগঠনটি জানিয়েছে, পাকিস্তানের বাহাওয়ালপুরে জামিয়া মসজিদ সুবহান আল্লাহ-তে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ভারত। ওই হামলায় একই পরিবারের ১০ সদস্য নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন মাসুদ আজহারের বড় বোন ও তার স্বামী, তার ভাতিজা ও তার স্ত্রী, একজন ভাগনি এবং পরিবারের আরও পাঁচ শিশু।  মসজিদটি জইশ-ই-মোহাম্মদের কেন্দ্রীয় কমান্ড সেন্টার হিসেবে ব্যবহৃত হতো।

সংগঠনটি আরও জানিয়েছে, ওই হামলায় আজহারের তিনজন ঘনিষ্ঠ সহযোগী এবং তাদের একজনের মা-ও নিহত হয়েছেন।

উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে ভারতশাসিত কাশ্মীরে একটি আত্মঘাতী হামলায় ভারতের আধাসামরিক বাহিনীর ৪০ জন সৈন্য নিহত হয়। ভারতের জাতীয় নির্বাচনের কয়েক সপ্তাহ আগে ওই হামলা হয়। হামলার দায় স্বীকার করে নেয় পাকিস্তানভিত্তিক সশস্ত্র গোষ্ঠী জয়শ-ই-মুহাম্মদ।

ওই সময় তীব্র ক্ষোভের মধ্যে পড়ে পাকিস্তানশাসিত কাশ্মীরে বিমান হামলা চালায় ভারতীয় বিমান বাহিনী। হামলার পর নয়াদিল্লি দাবি করে, তারা ‘সন্ত্রাসীদের’ আস্তানায় আঘাত হেনেছে এবং কয়েক ডজন ব্যক্তিকে হত্যা করেছে। যদিও পাকিস্তানের পক্ষ থেকে বলা হয়, ভারতের যুদ্ধবিমান একটা বনাঞ্চলে আঘাত হেনেছে এবং এতে কারো মৃত্যু হয়নি।

এদিকে দিল্লির বিমান হামলার জবাবে সীমান্তে ভারী গোলাবর্ষণ করে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী। অন্তত ১০ জন নিহত এবং ৩২ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

স্থানীয়রা বিবিসিকে জানিয়েছেন, গুলিবর্ষণ সবচেয়ে বেশি হয়েছে পুঞ্চ এবং মেন্ধার এলাকায়। বাড়ি এবং দোকানপাটসহ অনেক ভবন গুরুতর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

পুঞ্চের স্থানীয় সাংবাদিক জামরুদ মুঘল ফোনে বিবিসিকে বলেন, ‘বুধবার রাতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আমরা বড় ধরনের বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছি। মানুষ পুরো রাত ঘুমাতে পারেনি। সবাই ঘরবাড়ি ছেড়ে নিরাপদ জায়গায় পালিয়ে গেছে। আমাদের স্থানীয় হাসপাতাল এখন আহত মানুষে ভরে গেছে। ’

এদিকে পাকিস্তানের দাবি, ‘অপারেশন সিঁদুর’ অভিযানে সাধারণ নাগরিক ও মসজিদকে লক্ষ্যবস্তু করেছে ভারত। এক সংবাদ সম্মেলনে লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী বলেন, ‘পাকিস্তানের মসজিদগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করেছে ভারত। এটি মোদী সরকারের আমলে বেড়ে ওঠা সংকীর্ণ মানসিকতার প্রতিফলন— যেখানে সংখ্যালঘুদের, বিশেষ করে মুসলমানদের টার্গেট করা হচ্ছে। ’

যদিও ভারতের দাবি, তারা পারিপার্শ্বিক ক্ষয়ক্ষতি যতটা কম রেখে শুধুমাত্র ‘সন্ত্রাসবাদী’ ঘাঁটি ও বিভিন্ন প্রশিক্ষণ শিবিরেই এই হামলা চালিয়েছে। এ হামলাকে তারা ‘প্রিসিশন স্ট্রাইক’ বলে বর্ণনা করছে।

দিল্লিতে পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে বুধবার (৭ মে) সকালে এ কথা জানানো হয়।

এদিকে ভারতের পাঁচ যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করার দাবি করেছে পাকিস্তান। যার মধ্যে রয়েছে ভূপাতিত ভারতীয় যুদ্ধবিমানের মধ্যে তিনটি রাফায়েল জেট, একটি মিগ-২৯ এবং একটি এসইউ বিমান, পাশাপাশি একটি হেরন যুদ্ধ ড্রোন।

তবে পাঁচটি নয়, তিনটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত হয়েছে স্বীকার করেছে নয়াদিল্লি।

এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।