একজন শীর্ষস্থানীয় ইরানি কর্মকর্তা জানিয়েছেন ১৫ জুন তেহরানে সুপ্রিম ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের একটি বৈঠকে ইসরায়েলি বিমান হামলায় প্রেসিডেন্ট মাসউদ পেজেশকিয়ান সামান্য আহত হয়েছিলেন।
তিনি জানান, এই হত্যাচেষ্টার লক্ষ্য ছিল সরকারের তিনটি প্রধান শাখার প্রধানদের হত্যা করে গোটা সরকারকে পতনের দিকে ঠেলে দেওয়া।
হামলাটি হয় দুপুরের কিছু আগে, যেখানে রাষ্ট্রপতির পাশাপাশি আইনসভা ও বিচার বিভাগের প্রধান এবং অন্যান্য শীর্ষ কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।
ইরানের আধা-সরকারি বার্তা সংস্থা ফার্স নিউজের তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েল ও ইরানের সাম্প্রতিক ১২ দিনের যুদ্ধে প্রেসিডেন্ট পেজেশকিয়ানের বিরুদ্ধে এই হত্যাচেষ্টা চালানো হয়। তেহরানের পশ্চিমাঞ্চলে একটি সরকারি ভবনের নিচতলায় চলছিল ওই বৈঠক, তখনই ছয়টি ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে ভবনের প্রবেশ ও প্রস্থান পথগুলো লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়, যেন কেউ পালাতে না পারে এবং বায়ু চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
বিস্ফোরণের ফলে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়, তবে পূর্বনির্ধারিত একটি গোপন জরুরি পথে প্রেসিডেন্টসহ অন্য কর্মকর্তারা নিরাপদে বেরিয়ে আসেন। এ সময় প্রেসিডেন্টের পায়ে হালকা আঘাত লাগে।
সম্প্রতি মার্কিন উপস্থাপক টাকার কার্লসনের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে পেজেশকিয়ান নিশ্চিত করেন যে, এই হামলার পেছনে যুক্তরাষ্ট্র নয় বরং ইসরায়েল জড়িত। তিনি বলেন, হ্যাঁ…তারা চেষ্টা করেছিল, কিন্তু ব্যর্থ হয়েছে। তারা জানত আমরা কোথায় আছি, সেই নির্দিষ্ট জায়গাটাই তারা বোমা মেরে উড়িয়ে দিতে চেয়েছিল।
ইরানি কর্তৃপক্ষ মনে করছে, ইসরায়েল অত্যন্ত নিখুঁত গোয়েন্দা তথ্যের ওপর ভিত্তি করে হামলা চালিয়েছে, যা ইসরায়েলি গুপ্তচরের সংশ্লিষ্টতার ইঙ্গিত দেয়।
এই হত্যাচেষ্টা ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ছিল ইসরায়েলের বৃহৎ সামরিক অভিযানের অংশ, যা শুরু হয়েছিল ১৩ জুন। ওই অভিযানে ইরানের শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা ও পারমাণবিক বিজ্ঞানীদের হত্যা করা হয়। হামলাগুলো চালানো হয় ঠিক সেই সময়, যখন তেহরান ও ওয়াশিংটনের মধ্যে নতুন করে পারমাণবিক আলোচনা শুরু হওয়ার কথা ছিল। ফলে সেই আলোচনা স্থগিত হয়ে যায়।
ইরানের ফাউন্ডেশন অব মার্টিরস অ্যান্ড ভেটেরানস অ্যাফেয়ার্সের তথ্যমতে, এই যুদ্ধে ইরানে অন্তত ১,০৬০ জন নিহত হয়েছে। অপরদিকে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ইরানের পাল্টা ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলে নিহত হয়েছে ২৮ জন। পরবর্তীতে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় একটি যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়।
এমএম