মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইঙ্গিত দিয়েছেন, ইসরায়েল গাজা দখল করলে তিনি তাতে বাধা দেবেন না। মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এমন ইঙ্গিত দেন।
সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্পকে জিজ্ঞাসা করা হয়, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু পুরো গাজা দখলের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কি না। জবাবে ট্রাম্প বলেন, তিনি এখন গাজায় মানুষের খাদ্য জোগান নিশ্চিত করায় মনোযোগী।
তিনি বলেন, এর বাইরে আর যা কিছু, সে বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারি না। এটা পুরোপুরি ইসরায়েলের বিষয়।
যুক্তরাষ্ট্র প্রতিবছরই ইসরায়েলকে কয়েক বিলিয়ন ডলার সামরিক সহায়তা দিয়ে থাকে। ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলের আগ্রাসন শুরুর পর এই সহায়তা আরও বেড়েছে।
এই যুদ্ধের অংশ হিসেবে ইসরায়েল জোরপূর্বক ফিলিস্তিনিদের এক এলাকা থেকে আরেক এলাকায় সরিয়ে ক্রমাগত তাদের বাসযোগ্য জায়গা সংকুচিত করেছে। বর্তমানে গাজার ৮৬ শতাংশ এলাকা সামরিক নিয়ন্ত্রণাধীন।
বাকি যে অংশে এখনো কিছু ফিলিস্তিনি বাস করছে, সেখানেও যদি ইসরায়েল অভিযান চালায়, তাহলে তাদের জীবনের ঝুঁকি আরও বাড়বে। কারণ সেসব এলাকায় প্রতিদিনই বোমাবর্ষণ ও খাদ্য সংকটে তারা বিপর্যস্ত।
নেতানিয়াহুর সম্ভাব্য পূর্ণাঙ্গ গাজা দখলের পরিকল্পনা নিয়ে আরও একটি উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। এটি গাজায় হামাস ও অন্যান্য ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীর হাতে আটক ইসরায়েলিদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে।
জাতিসংঘের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা মিরোস্লাভ জেনচা মঙ্গলবার সতর্ক করে বলেন, গাজা পুরোপুরি দখলের চেষ্টা ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনবে। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক আইন এ বিষয়ে খুবই স্পষ্ট। গাজা ভবিষ্যৎ ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিল এবং থাকবে।
ইসরায়েল ২০০৫ সালে গাজা থেকে সৈন্য ও বসতি প্রত্যাহার করলেও বিশেষজ্ঞদের মতে, ইসরায়েল এখনো গাজার আকাশসীমা, জলসীমা ও প্রবেশপথ নিয়ন্ত্রণ করায় এই ভূখণ্ড এখনো আইনত দখলে রয়েছে।
২০২৩ সালের যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ডানপন্থি ইসরায়েলি রাজনীতিকেরা গাজায় আবারও সামরিক উপস্থিতি ও বসতি স্থাপনের দাবি জানাচ্ছেন।
নেতানিয়াহু এমন ইঙ্গিতও দিয়েছেন যে, ইসরায়েল গাজা থেকে সব ফিলিস্তিনিকে সরিয়ে ফেলতে চায়। এমন পরিকল্পনাকে জাতিগত নিধনের পরিকল্পনা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ফেব্রুয়ারিতে ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজেও এই পরিকল্পনার প্রতি সমর্থন জানান।
২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত গাজায় ইসরায়েলের আগ্রাসনে ৬১ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। অধিকাংশ এলাকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। জাতিসংঘ ও মানবাধিকার সংস্থাগুলো এটিকে গণহত্যা হিসেবে আখ্যায়িত করছে।
আরএইচ