ফিলিস্তিনের অধিকৃত পশ্চিম তীর আনুষ্ঠানিকভাবে নিজেদের ভূখণ্ডে অন্তর্ভুক্ত করার একটি বিল ইসরায়েলের পার্লামেন্টে প্রথম ধাপে পাস হয়েছে।
বিলটি পূর্ণাঙ্গভাবে পাস হলে ফিলিস্তিনি এই ভূখণ্ডটি ইসরায়েলের সঙ্গে সংযুক্ত হবে এবং সেখানে ইসরায়েলের সার্বভৌমত্ব কার্যকর হবে।
বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, ইসরায়েলি পার্লামেন্ট ‘নেসেট’ দখল করা পশ্চিম তীরে ইসরায়েলের সার্বভৌমত্ব আরোপের একটি বিতর্কিত বিলের প্রাথমিক অনুমোদন দিয়েছে। এটি কার্যত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড সংযুক্তিরই সমান এবং আন্তর্জাতিক আইনের প্রকাশ্য লঙ্ঘন।
মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) ১২০ আসনের নেসেটে ২৫-২৪ ভোটে বিলটি প্রাথমিকভাবে পাস হয়। এটি আইন হিসেবে কার্যকর হতে আরও তিন ধাপের ভোটে অনুমোদন লাগবে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু ও তার দল লিকুদ পার্টি বিলটির বিরোধিতা করলেও কয়েকজন জোটসঙ্গী এবং বিরোধী এমপি এতে সমর্থন দেন।
নেসেটের বিবৃতিতে বলা হয়, ইসরায়েল রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব জুদিয়া ও সামারিয়া অঞ্চলে (পশ্চিম তীর) প্রয়োগ’ করার উদ্দেশ্যে বিলটি আনা হয়েছে। এখন এটি আরও আলোচনার জন্য সংসদের পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষা কমিটিতে পাঠানো হবে।
বিলটি পাস হওয়ার এক মাস আগেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছিলেন, ইসরায়েলকে পশ্চিম তীর সংযুক্তির অনুমতি দেওয়া হবে না।
এদিকে নেতানিয়াহুর লিকুদ পার্টি এক বিবৃতিতে এই ভোটকে ‘বিরোধীদলের উসকানি’ বলে অভিহিত করে বলেছে, এটি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইসরাইলের সম্পর্ক নষ্ট করতে পারে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, আসল সার্বভৌমত্ব আইন দেখানোর ভান করে নয়, বরং বাস্তব পদক্ষেপের মাধ্যমেই অর্জন করা যায়।
অন্যদিকে এই ভোটে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ফিলিস্তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, হামাস, কাতার, সৌদি আরব ও জর্ডান। ফিলিস্তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, আমরা নেসেটের ফিলিস্তিনি ভূমি সংযুক্তির প্রচেষ্টা দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করছি। পশ্চিম তীর, পূর্ব জেরুজালেম ও গাজা, এসব অঞ্চলে একক ভৌগোলিক ইউনিট, এর ওপর ইসরায়েলের কোনো সার্বভৌম অধিকার নেই।
হামাস এক বিবৃতিতে বলেছে, এই বিলগুলো দখলদার ইসরায়েলের উপনিবেশবাদী চেহারা স্পষ্ট করে দিয়েছে। পশ্চিম তীর দখলের এই প্রচেষ্টা অবৈধ ও অগ্রহণযোগ্য। এই পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক আইনের প্রকাশ্য লঙ্ঘন, দ্বিরাষ্ট্র সমাধানের পথে বাধা এবং ফিলিস্তিনি জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণ ও স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মৌলিক অধিকারে হস্তক্ষেপ।
এএটি