ঢাকা, বুধবার, ২২ শ্রাবণ ১৪৩২, ০৬ আগস্ট ২০২৫, ১১ সফর ১৪৪৭

আন্তর্জাতিক

ভারত রাশিয়ার তেল কিনলে ট্রাম্পের কেন আপত্তি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬:৩৫, আগস্ট ৬, ২০২৫
ভারত রাশিয়ার তেল কিনলে ট্রাম্পের কেন আপত্তি

ভারত রাশিয়ার কাছ থেকে জ্বালানি তেল আমদানি করায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেছেন, রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কিনে ইউক্রেন সংঘাতে রাশিয়াকে অর্থায়ন করছে ভারত, যা তার কাছে গ্রহণযোগ্য নয়।

এ নিয়ে তিনি ভারতের ওপর ‘জরিমানা’ ও অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের হুমকিও দিয়েছেন।

কয়েকদিন আগে মার্কিন পররাষ্ট্র সচিব মার্কো রুবিও বলেছিলেন, ভারত যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র হলেও ‘শতভাগ বন্ধু’ হতে পারেনি। এই বক্তব্যের ব্যাখ্যা স্পষ্ট হয়েছে হোয়াইট হাউসের ডেপুটি চিফ অব স্টাফ এবং ট্রাম্পের অন্যতম প্রভাবশালী সহযোগী স্টিফেন মিলারের মন্তব্যে। তিনি জানান, ট্রাম্পের অবস্থান খুবই স্পষ্ট, রাশিয়ার তেল আমদানি তিনি মেনে নেবেন না।

গত ১ আগস্ট শুক্রবার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্প বলেন, তার জানা মতে ভারত এখনো রাশিয়ার তেল কেনা বন্ধ করার বিষয়ে কোনো প্রতিশ্রুতি দেয়নি। এর আগে ৩০ জুলাই তিনি ঘোষণা দেন, রাশিয়ার কাছ থেকে তেল ও সামরিক সরঞ্জাম কিনলে ১ আগস্ট থেকে ভারতকে ২৫ শতাংশ শুল্ক দিতে হবে, সঙ্গে অনির্দিষ্ট অঙ্কের জরিমানাও আরোপ করা হবে।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল জানান, দেশটির জ্বালানি আমদানির উৎস নির্ধারিত হয় আন্তর্জাতিক বাজারের দাম ও সেই সময়কার বৈশ্বিক পরিস্থিতির ওপর ভিত্তি করে। তিনি বলেন, রাশিয়া থেকে সাম্প্রতিক আমদানি ছিল আইনসঙ্গত, যা বৈশ্বিক অপরিশোধিত তেলের দাম স্থিতিশীল রাখতে সহায়তা করেছে।

চীনের পর রাশিয়ার জ্বালানি তেলের দ্বিতীয় বৃহত্তম ক্রেতা এখন ভারত। পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও দেশটি রাশিয়া থেকে মোট জ্বালানি আমদানির ৩০ শতাংশের বেশি সংগ্রহ করে। ২০২২ সালে ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর আগে এ হার ছিল মাত্র ১ শতাংশ।

রাশিয়ার তেল যারা কিনবে, তাদের ওপর যুক্তরাষ্ট্রে আমদানিতে ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছেন ট্রাম্প। ইউক্রেনের সঙ্গে রাশিয়া বড় ধরনের শান্তি চুক্তিতে না পৌঁছলে এই শুল্ক কার্যকর হবে বলে জানান তিনি। এছাড়া, ব্রিকসের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হওয়াও ট্রাম্পের চোখে ভারতের আরেকটি ‘অপরাধ’, কারণ এই জোটে রাশিয়া ও চীনও রয়েছে।

বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্পের এই কঠোর অবস্থান মূলত রাশিয়াকে চাপ দেওয়ার কৌশল। তবে এটিকে ভারতের সঙ্গে ৪৫ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর প্রচেষ্টা বলেও মনে করছেন কেউ কেউ।

তবে ভারতীয় সরকারি সূত্র গত ২ আগস্ট একটি মার্কিন সংবাদ সংস্থাকে জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের হুমকির পরও রাশিয়ার তেল আমদানি অব্যাহত রাখবে ভারত। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, রাশিয়ার সঙ্গে তাদের সোভিয়েত যুগের সম্পর্ক তৃতীয় কোনো দেশের দৃষ্টিকোণ থেকে নির্ধারণ করা উচিত নয়।

এমএইচডি/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।