যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রাশিয়ার তেল ক্রেতাদের ওপর ‘সেকেন্ডারি শুল্ক’ আরোপের হুমকি দিয়েছেন। এই পদক্ষেপ কার্যকর হলে বিশ্ববাজারে তেল ও গ্যাসের সরবরাহ কমে দাম বাড়তে পারে, আর এর প্রভাব পড়তে পারে যুক্তরাষ্ট্রে বিক্রি হওয়া আইফোনের মতো ভোক্তা পণ্যের দামে।
ট্রাম্পের আগে ভেনিজুয়েলার তেল ক্রেতাদের ওপর একই ধরনের শুল্ক আরোপ হয়েছিল। এবার রাশিয়ার ক্ষেত্রে তা হলে প্রভাব পড়বে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে। যদিও বিশেষজ্ঞদের মতে, ওপেকের হাতে অতিরিক্ত উৎপাদন সক্ষমতা থাকায় দাম বৃদ্ধির ধাক্কা কিছুটা কম হতে পারে।
রাশিয়া ইতোমধ্যেই নিষেধাজ্ঞা এড়াতে ‘শ্যাডো ফ্লিট’ বা গোপন নৌবহরের মতো ব্যবস্থা গড়ে তুলেছে। তবু রাশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম তেল ক্রেতা ভারত এখন ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের মূল লক্ষ্য হতে পারে। ট্রাম্প স্পষ্ট করে বলেছেন, রাশিয়ার যুদ্ধযন্ত্রে ভারতের অবদান তিনি মেনে নেবেন না। যদি শতভাগ শুল্ক আরোপ হয়, তবে ভারতের পণ্য যুক্তরাষ্ট্রে দ্বিগুণ দামে বিক্রি হতে পারে। এতে আইফোনের মতো ভারতে তৈরি পণ্যের দামও বাড়বে।
ভারত ইতোমধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রকে ‘দ্বৈত নীতি’র অভিযোগ করেছে। কারণ দুই দেশের মধ্যে এখনো পারমাণবিক জ্বালানি ও সারের কাঁচামালের বাণিজ্য চলছে।
চীনের ক্ষেত্রেও একই শুল্ক আরোপ করা হলে বাস্তবায়ন কঠিন হবে, কারণ যুক্তরাষ্ট্রের পাঁচ গুণ বেশি আমদানি আসে সেখান থেকে। এতে দুই অর্থনীতির মধ্যে বাণিজ্য আলোচনায় ধাক্কা লাগতে পারে এবং যুক্তরাষ্ট্রে মূল্যস্ফীতির চাপ বাড়তে পারে।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) এখনো রাশিয়ার অন্যতম বড় জ্বালানি ক্রেতা হলেও ২০২৭ সালের মধ্যে সব ধরনের আমদানি বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে। তবে যদি রুশ জ্বালানি কেনার কারণে শতভাগ শুল্ক আরোপ হয়, ইউরোপের রপ্তানি খাত বড় ধাক্কা খেতে পারে।
রাশিয়ার প্রবৃদ্ধি গত বছর ছিল ৪.৩ শতাংশ, তবে চলতি বছর তা ০.৯ শতাংশে নেমে আসার আশঙ্কা করছে আইএমএফ। প্রেসিডেন্ট পুতিন প্রতিরক্ষা ব্যয় বাড়িয়ে জিডিপির ৬.৩ শতাংশে তুলেছেন, আর ইউক্রেন তার অর্থনীতির ২৬ শতাংশ ব্যয় করছে যুদ্ধে।
ট্রাম্পের দাবি, এই শুল্ক রাশিয়ার অর্থপ্রবাহ কমিয়ে ইউক্রেন যুদ্ধ থামাতে সাহায্য করবে এবং সেখানে মৃত্যু ও ধ্বংসের অবসান ঘটাবে।
এমজে