কানাডার ভ্যানকুভারের ভারতীয় কনস্যুলেট ‘গুপ্তচর নেটওয়ার্ক’ পরিচালনা করছে উল্লেখ করে এটি দখলের ঘোষণা দিয়েছেন খালিস্তানপন্থি আন্দোলনকারীরা।
বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) ‘শিখস ফর জাস্টিস’ (এসএফজে) নামে একটি সংগঠন ওই দূতাবাস দখল করবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে।
এসএফজে কানাডায় নতুন ভারতীয় হাইকমিশনার দিনিশ পট্টনায়কের ছবিতে ‘টার্গেট’ করার চিহ্ন এঁকে একটি পোস্টারও প্রকাশ করেছে। এক বিবৃতিতে সংগঠনটি অভিযোগ করে বলেছে, ভারতীয় কনস্যুলেটগুলো খালিস্তানিদের লক্ষ্য করে গোয়েন্দা নেটওয়ার্ক ও নজরদারি চালাচ্ছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “দুই বছর আগে ২০২৩ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর কানাডার তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো সংসদে বলেছিলেন, (খালিস্তানপন্থি নেতা) হারদীপ সিং নিজ্জরের হত্যাকাণ্ডে ভারতীয় এজেন্টদের ভূমিকা তদন্তাধীন। দুই বছর পেরিয়ে গেলেও ভারতীয় কনস্যুলেটগুলো এখনো খালিস্তান গণভোট প্রচারকদের লক্ষ্য করে গোয়েন্দা নেটওয়ার্ক ও নজরদারি চালাচ্ছে। ”
সংগঠনটি অভিযোগ করেছে, তাদের প্রতি হুমকি এতটাই গুরুতর হয়ে উঠেছিল যে, নিজ্জরের মৃত্যুর পর খালিস্তান প্রতিষ্ঠার বিষয়ে গণভোটের প্রচারক হিসেবে নেতৃত্ব নেওয়া ইন্দরজিত সিং গোসালকে ‘নজরদারিমূলক সুরক্ষা’ দিতে রয়্যাল কানাডিয়ান মাউন্টেড পুলিশ (আরসিএমপি) বাধ্য হয়েছিল।
আন্দোলনকারীরা বলেছে, এই দখলের মাধ্যমে তারা ‘কানাডার মাটিতে গুপ্তচরবৃত্তি ও ভয় দেখানোর সংস্কৃতিতে জড়িতদের জবাবদিহি’র দাবি তুলবে।
এ বিষয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বা ভ্যানকুভারে ভারতীয় কনস্যুলেটের কোনো তাৎক্ষণিক মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
১৯৮০ সালে ভারতের পাঞ্জাব প্রদেশ ঘিরে শিখদের একটি অংশ স্বাধীন ‘খালিস্তান’ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবি তোলে। ওই আন্দোলনকে ‘খালিস্তান মুভমেন্ট’ বলা হয়। আন্দোলনটির জের ধরে অনেক সহিংসতা হয়েছিল এবং মৃত্যু হয়েছিলো হাজারো মানুষের। ভারতীয় সেনাবাহিনীর বিশেষ অভিযানের পর এ আন্দোলন স্তিমিত হয়ে যায়।
এই আন্দোলনে জড়িতদের ভারত ‘বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসী’ আখ্যা দেয় এবং দেশের নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে চিহ্নিত করে।
বর্তমানে ভারতে সেভাবে সংগঠিত হতে না পারলেও শিখরা কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন দেশে ‘খালিস্তান’ প্রতিষ্ঠার পক্ষে প্রচারণায় সক্রিয়।
এমনই এক নেতা ছিলেন নিজ্জর, যাকে ‘সন্ত্রাসী’ ঘোষণা করেছিল ভারত। ২০২৩ সালের ১৮ জুন ভ্যানকুভারের একটি শহরতলীতে তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় ভারতের গুপ্তচররা জড়িত বলে খোলাখুলি বলেছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ট্রুডো। এ নিয়ে কানাডার সঙ্গে ভারত সরকারের সম্পর্কে টানাপোড়েন দেখা যায়।
এনডি/