অতীতের বিরোধ ভুলে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে একটি ঐক্যবদ্ধ ফ্রন্ট তৈরি করার আহ্বান জানিয়েছেন হিজবুল্লাহ প্রধান নাইম কাশেম। মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনার মধ্যেই ইরান-সমর্থিত লেবাননের শিয়া সশস্ত্র গোষ্ঠীটি শুক্রবার সৌদি আরবের প্রতি এ আহ্বান জানিয়েছে।
একইসঙ্গে রিয়াদের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো করার প্রস্তাবও দেন নাইম কাশেম। বছরের পর বছর শত্রুতার কারণে লেবাননের সঙ্গে রিয়াদের সম্পর্ক ভালো নয়।
২০১৬ সালে সৌদি আরব এবং অন্যান্য উপসাগরীয় দেশগুলো হিজবুল্লাহকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করে।
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে রিয়াদ, ওয়াশিংটন এবং লেবাননের অভ্যন্তরে হিজবুল্লাহর প্রতিদ্বন্দ্বীদের সাথে যোগ দিয়ে লেবাননের সরকারকে এই গোষ্ঠীটিকে নিরস্ত্র করার জন্য চাপ দিচ্ছে, যা গত বছরের ইসরায়েলের সাথে যুদ্ধের ফলে মারাত্মকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছিল।
শুক্রবার টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক ভাষণে কাশেম বলেন, ‘আঞ্চলিক শক্তিগুলোর উচিত হিজবুল্লাহ নয়, বরং ইসরায়েলকে মধ্যপ্রাচ্যের জন্য প্রধান হুমকি হিসেবে দেখা। ’
রিয়াদের সঙ্গে ‘সম্পর্ক সংস্কারের’ প্রস্তাব দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা আশ্বস্ত করছি যে প্রতিরোধের (হিজবুল্লাহ) অস্ত্রগুলো লেবানন, সৌদি আরব বা বিশ্বের অন্য কোনও স্থান বা সত্তার দিকে নয়, ইসরায়েলি শত্রুর দিকে তাক করা হয়েছে। ’
তিনি বলেন, ‘সংলাপ অতীতের মতবিরোধ স্থবির করে দেবে, অন্তত এই ব্যতিক্রমী পর্যায়ে, যাতে আমরা ইসরায়েলের মুখোমুখি হতে পারি এবং দমন করতে পারি।
হিজবুল্লাহর ওপর চাপ প্রয়োগ মানে ‘ইসরায়েলের জন্য একটি নিট লাভ’ বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
২০০৬ সালে হিজবুল্লাহ ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধের পর লেবাননে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার ব্যয় করে সৌদি আরব, কেন্দ্রীয় ব্যাংকে তহবিল জমা করে এবং দক্ষিণাঞ্চল পুনর্গঠনে সহায়তা করে। কিন্তু ইরানের সহায়তায় এই গোষ্ঠীটি লেবানন এবং অঞ্চলে আরও শক্তিশালী হয়ে ওঠে।
২০২১ সালে সুন্নি সৌদি আরব লেবাননের রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কার করে, নিজস্ব রাষ্ট্রদূতকে প্রত্যাহার করে এবং লেবাননের আমদানি নিষিদ্ধ করলে সম্পর্কে তীব্র অবনতি ঘটে। সেই সময় সৌদি রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়েছিল, হিজবুল্লাহ লেবাননের রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করত।
হিজবুল্লাহর তৎকালীন মহাসচিব হাসান নাসরুল্লাহ সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানকে ‘সন্ত্রাসী’ বলে অভিহিত করেছিলেন এবং ইয়েমেনে সৌদি আরবের ভূমিকার বারবার সমালোচনা করেছিলেন। কিন্তু সম্প্রতি এই অঞ্চলে বিরাট রাজনৈতিক পরিবর্তন দেখা গেছে, গত বছর ইসরায়েল হিজবুল্লাহর ওপর হামলা চালিয়ে নাসরুল্লাহকে হত্যা করে এবং ডিসেম্বরে বিদ্রোহীরা এই গোষ্ঠীর সিরিয়ান মিত্র বাশার আল-আসাদকে উৎখাত করে।
এনডি